সময় ডেস্ক ॥ প্রশাসনের উপ-সচিব থেকে সচিব পদ মর্যাদা পর্যন্ত সকল পর্যায়ে পদোন্নতি দেয়ার পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার। আর এই সুযোগকে কাজে লাগাতে সরকারের আমলাতন্ত্রের নীতি নির্ধারকদের আশীর্বাদ পাওয়ার চেষ্টায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন অনেক কর্মকর্তা। সূত্র মতে, পদোন্নতিকাঙ্খীরা এরই মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দপ্তর ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ভিড় করার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সিনিয়র কর্মকর্তাদের সাথেও যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী বলেন, বিভিন্ন পর্যায়ে পদোন্নতি এখন প্রক্রিয়াধীন এবং কোন যোগ্য কর্মকর্তা যাতে এই পক্রিয়া থেকে বাদ না পড়ে সেটা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। গত এক বছর ধরে ঝুলে থাকা কয়েকশত সিনিয়র সহকারি সচিবের পদোন্নতির প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর প্রশাসনের সকল পর্যায়ে পদোন্নতির এই দাবি উঠে। কামাল আব্দুর নাসের বলেন, সিনিয়র সচিবদের পদোন্নতির জন্য সর্বোচ্চ বাছাই বোর্ডের এর আগের সুপারিশের তালিকার ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না। নাসের আরো বলেন, প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ে রদবদলের কথা চিন্ত করেই সকল পর্যায়ে পদোন্নতির বিষয়টিও বিবেচনায় আনা হয়। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, প্রশাসনে অনুমোদিত ৮৩০ টি উপ-সচিবের পদের বিপরীতে এরইমধ্যে ১২৮৭জন উপসচিব রয়েছেন। আর ৩৫০টি পদের বিপরীতে যুগ্ম সচিব রয়েছে প্রায় ৮৯৬ জন এবং ১২০ টি পদের বিপরীতে অতিরিক্ত সচিব রয়েছেন ২৬৭ জন। বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার এর আগের মেয়াদেও বিভিন্ন সময়ে প্রশাসনের প্রায় সকল পর্যায়ে পদোন্নতি দেয়। কিন্তু পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাদের জন্য যথেষ্ট শূন্যপদ না থাকায় তাদের অনেককে বিশেষ দায়িত্ব দেয়া হয়। এ অবস্থায় প্রশাসনে এবারের পদোন্নতি প্রক্রিয়ার তালিকায় একসাথে কতজন কর্মকর্তাকে রাখা হয়েছে সে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নি এই কর্মকর্তা। তবে তিনি বলেন, সুপেরিয়র সিলেকশন বোর্ড এসএসবির বিবেচনার জন্য সব ধরনের যাচাই বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেই তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। গত জানুয়ারিতে পদোন্নতি পাওয়া এক যুগ্ম সচিব বলেন, এরইমধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে যেখানে উপ সচিবদের পদোন্নতির জন্য যে তালিকা জমা দেয়া হয়েছে তাতে কোন পরিবর্তন করতে চাইলে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে লিখিতভাবে অবহিত করতে বলা হয়েছে। প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তাই বলছেন, সরকারের অনুগত হিসেবে পরিচিত মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ অনেক পদোন্নতি প্রার্থী প্রশাসনের এই পদোন্নতির তালিকায় ঠাঁয় পাওয়ার জন্য ব্যাপক দৌঁড় ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছেন। যদিও মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে এসএসবি এরই মধ্যে প্রায় ৩’শ সিনিয়র সহকারি সচিবের জন্য সুপারিশ করেছেন। যাদের বেশিরভাগই ২০ তম বিসিএসএ নিয়োগ পেয়েছেন। এদিকে, এক শ্রেণীর কর্মকর্তা যারা মাঠ পর্যায়ে প্রশাসনিক কাজে, হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে অথবা অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তারাও এই পদোন্নতির তালিকায় স্থান পেতে চাপ প্রয়োগ করে আসছেন। যারা কি না ২১তম বিসিএস’এর মাধ্যমে নিয়োগ পেয়েছেন। তবে অনেক সিনিয়র কর্মকর্তারা বলছেন, সরকার এই মুহূর্তে ২১ তম বিসিএস’ ক্যাডারদের পদোন্নাতির তালিকায় রাখতে আগ্রহী নয় । মন্ত্রিপরষদ সচিব মোহাম্মদ মুশাররাফ হোসাইন ভূইয়ার নেতৃত্বে গঠিত সুপেরিয়র সিলেকশন বোর্ড ২০১৩ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নভেম্বরে প্রায় ৮০ জন যুগ্ম সচিব এবং অন্তত ৩’শ জন সিনিয়র সহকারি সচিবের পদোন্নতির জন্য একটি তালিকা তৈরি করে। নির্বাচন শেষে ১২ই জানুয়ারি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধিন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের একদিন পর তালিকাভূক্ত ৮০জন যুগ্ম সচিব অতিরিক্ত সচিব হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। কিন্তু উপ সচিব পর্যায়ে পদোন্নতি স্থগিত হয়ে যায়। তবে যুগ্ম সচিবদের পদোন্নতির সময় অনেক যোগ্য কর্মকর্তা পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হন বলে অভিযোগ রয়েছে।৪শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থগিত ৩য়-৪র্থ কর্মচারি পূণরায় নিয়োগসময় ডেস্ক ॥ সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থগিত নিয়োগ কার্যক্রম পূণরায় চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) প্রায় দুই হাজার ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারি নিয়োগ দেয়া হবে। প্রায় দুই বছর আগে অনিয়মের অভিযোগে স্থগিত থাকার পর এ নিয়োগ প্রক্রিয়া পূণরায় চালু হতে যাচ্ছে। মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে প্রার্থীদের নিয়োগ চুড়ান্ত করা হবে। জানা গেছে, শিক্ষামন্ত্রণালয়ের অধিনস্থে ২০১০ সালে সারাদেশের সরকারি হাইস্কুল, কলেজ ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে প্রায় দুই হাজার কর্মচারী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয় হয়। এ নিয়োগ নিয়ে একটি কুচক্রি মহল বাণিজ্য শুরু করেন। পরে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয় শিক্ষামন্ত্রণালয়ের অধিনে একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী তদন্ত কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে, দিনদিন কর্মচারী স্বল্পতা সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে দাপ্তরিক কাজে বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। শ্রেণি কার্যক্রম কমিয়ে শিক্ষকরা এখন প্রয়োজনীয় দাপ্তরিক কাজ করছেন। নিয়োগ কমিটির আহবায়ক মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন)। সদস্য হিসেবে রয়েছে শিক্ষা ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং সরকারি কর্মকমিশনের তিন কর্মকর্তা। আর নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব হলেন মাউশি’র উপপরিচালক (প্রশাসন) দায়িত্ব পায়। কিন্তু মাউশি কর্তৃপক্ষ ওই কমিটিকে পাস কাটিয়ে ওই কার্যক্রম যাচাই বাছাইয়ের নামে পৃথক কমিটি উপকমিটি গঠন করেছিল, যা সম্পূর্ণ অবৈধ হিসেবে প্রমাণিত হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে কথিত ওই উপকমিটি বাতিল করে গত ১৮ নভেম্বর আদেশ জারি করেছে মাউশি। এতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন কমিটির সদস্যরা। শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব ও মাউশি’র উপপরিচালক (প্রশাসন) শফিকুল ইসলাম সিদ্দিকী বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে আমরা একাধিক সভা করেছি। নিয়োগ কার্যক্রম যে জায়গায় স্থগিত হয়েছিল, এখন সে স্থান থেকেই নতুন করে শুরু করা হয়েছে। নিয়োগ প্রত্যাশীদের আর লিখিত পরীক্ষায় বসতে হবে না। তিনি বলেন, চলতি মাসের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
Leave a Reply