,

নবীগঞ্জে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বাঁশ শিল্প

মতিউর রহমান মুন্না ॥ প্লাস্টিক সামগ্রীর সহজলভ্যতা, কাঁচামালের অভাব, অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির ফলে নবীগঞ্জ থেকে হারাতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী বাঁশ শিল্প। এ পেশার সঙ্গে জড়িত কারিগরদের করতে হচ্ছে মানবেতর জীবন যাপন। আবার অনেকেই এ পেশা ছেড়ে জড়িয়েছেন অন্য পেশায়। গ্রামীণ জনপদে এক সময় বাঁশঝাড় ছিল না এমনটা কল্পনাও করা যেতো না। যেখানে গ্রাম সেখানে বাঁশঝাড় এমনটিই ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু কালের পরিক্রমায় বিজ্ঞানের নানা আবিষ্কারে হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যময় এই শিল্পটি। মানুষের চাহিদা মেটাতে বাঁশের জায়গা দখল করেছে কৃত্রিম উপকরণে তৈরি নানান সামগ্রী। এতে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার হাতে বানানো বাঁশ শিল্প। একদিকে বাঁশের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি অপরদিকে প্লাস্টিকের তৈরী জিনিস পত্রের বাজার দখল করায় এবং প্রয়োজনীয় পূজি ও অর্থের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী নবীগঞ্জ উপজেলার বাঁশ শিল্প। এতে বেকার হয়ে পড়েছেন এ পেশায় নিয়োজিত শত শত শ্রমিক। নবীগঞ্জ উপজেলার কয়েকশত পরিবার বংশগত ভাবে এ পেশার সঙ্গে জড়িত ছিল। তারা বাঁশ দিয়ে বিভিন্ন মাপের ছোট-বড় ডালি, হাত পাখা, কুলা, ঝাড়ু, কুচি, ঝুড়ি, চাটাই, মাছ ধরার খোলই ইত্যাদি বাহারি রকমের জিনিস তৈরী করে তা বিভিন্ন হাট বাজার বিক্রি করতো। কিন্তু বর্তমান বাজারে লেগেছে আধুনিকতার ছোয়া। প্লাস্টিক সামগ্রীর বাজার সয়লাব করায় এবং প্রয়োজণীয় পুজি ও অর্থের অভাবে বাঁশ ক্রয় করতে না পেরে এ পেশার অনেকেই পেশা ছেড়ে দিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন, আবার অনেকই এ পেশা ছেড়ে জড়িয়ে পড়ছেন অন্য পেশায়। এ পেশার সাথে জড়িত আব্দুল খালিকসহ অনেকেই জানান, কয়েকে বছর আগেও বাঁশের তৈরী ছোট-বড় জিনিস বিক্রি করে পরিবার পরিজন নিয়ে স্বাচ্ছন্দে চলতে পারতাম। কিন্তু এখন বাজারে এসে এইসব বিক্রি করে সংসার চালানো অসম্ভব হয়ে পরে। স্থানীয় বাজার ছাড়া অন্য বাজারে বা শহরে গেলে কোন কোন দিন গাড়ি ভাড়ার টাকাই হয়না। বর্তমানে একটি বাঁশ ক্রয় করে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে বিক্রিও করতে হয় চড়া দাম দিয়ে। আর সস্তা দামের প্লাস্টিক সামগ্রী বাজারে আসায় মানুষ বেশী দাম দিয়ে বাঁশের সামগ্রী কিনতে চায় না। বর্তমান বাজার পুরোটাই প্লাস্টিকের সামগ্রীর দখলে রয়েছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরো খবর
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.