জুয়েল চৌধুরী/সজিব ইসলাম ॥ চুনারুঘাটের খোয়াই তীর থেকে উদ্ধার হওয়া লাশের পকেট থেকে পাওয়া বন্ধন হোটেলের চাবির সূত্র ধরে পুলিশ ঘটনার রহস্য উদঘাটনে সক্ষম হয়েছে। খুনের ঘটনার সাথে জড়িত মূল আসামী ফয়সল আমিন (২০) কে আটক করা হয়েছে। সে চুনারুঘাট উপজেলার দক্ষিণ নরপতি গ্রামের খুরশেদ আলমের পুত্র। গতকাল শুক্রবার ভোর রাতে চুনারুঘাট থানার এসআই আব্দুল্লাহ আল জাহিদের নেতৃত্বে পুলিশ অভিযান চালিয়ে আটক করে। এদিকে আটকের পর বিকেলে কোর্টে সোপর্দ করলে বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামাল হোসাইনের আদালতে খুন সর্ম্পকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। জবানবন্দিতে সে উল্লেখ করে একই উপজেলার হাঁসের গাঁও গ্রামের কুখ্যাত ডাকাত আলমগীর (২৫) এর সাথে সে এবং তার বন্ধু আল আমিন, সোহেল রানা, রাসেল মিয়া, চুরি, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড চালাতো। সম্প্রতি তাদের মধ্যে ভাগভাটোয়ারা নিয়ে মনোমালিণ্য দেখা দেয়। আল আমিনের একটি আইফোন মোবাইল আত্মসাত করে আলমগীর। এ নিয়ে এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। ঘটনার দুইদিন আগে শহরের সিনেমা হল এলাকার আলোচিত হোটেল বন্ধনের একটি রোমে বসে আলমগীরের সাথে আল-আমিন ও ফয়সলের বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য বসা হয়। এক পর্যায়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি না করে আলমগীর তাদের কে গালমন্দ করায় আল আমিন ও ফয়ছল চলে যায়। ওইদিন থেকে তাকে হত্যা করার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে থাকে দুজন। পরিকল্পনা মোতাবেক উল্লেখিতরা একটি মাইক্রোবাসযোগে সিনেমা হল এলাকায় আসে এবং আলমগীরকে বন্ধন হোটেল থেকে নিয়ে ওই রাতেই তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপুরি আঘাত করে হত্যা করা হয়। পরের দিন চুনারুঘাট থানা পুলিশ চুনারুঘাটের খোয়াই নদীর তীর থেকে পুলিশ এক অজ্ঞাত ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে। এসময় পুলিশ মৃতদেহের পকেট থেকে একটি চাবি পায়। তদন্তপূর্বক পুলিশ জানতে পারে এটি শহরের আলোচিত বন্ধন হোটেলের চাবি। এর প্রেক্ষিতে পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে হোটেল ম্যানেজার ধানু দাস (৫০) কে আটক করে। এসময় মালিক কৌশলে সটকে পড়ে। দুইদিন হোটেল বন্ধ থাকে। পরে পুলিশ ধানু দাসকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মুচলেকার বিনিময়ে তাকে ছেড়ে দেয় এবং এসআই আশরাফুজ্জামান বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা একটি মামলা করেন। ওই মামলার প্রেক্ষিতে সন্দেহভাজন আসামীদের গ্রেফতার করতে বিভিন্নস্থানে অভিযান চালায় পুলিশ। এক পর্যায়ে গতকাল শুক্রবার ভোররাতে ফয়সল আমিন (২০) কে গ্রেফতার করে পুলিশ কোর্টে প্রেরণ করলে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। উল্লেখ্য আলোচিত হোটেল বন্ধনে ইতোপূর্বে কলগার্ল ও খদ্দের একাধিকার পুলিশের হাতে আটক হয়েছে। এ ঘটনা নিয়ে দুই উপজেলায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।