স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাহুবল উপজেলার সুন্দ্রাটিকি গ্রামে দুই পঞ্চায়েতের পূর্ব বিরোধের জের ধরে চার শিশুকে অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় আটক দুই আসামিকে ১০ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ওসি মুক্তাদির হোসেন গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টায় আসামীদ্বয়কে রিমান্ডে নেয়ার অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউসার আলম আসামিদের ১০ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আসামিরা হলেন, আব্দুল আলী বাগাল ও তার ছেলে জুয়েল মিয়া। এর আগে গত বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় দুই আসামিকে আটক করে বাহুবল থানা পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার আদালতে রিমান্ড আবেদন শুনানীকালে উপস্থিত সকল আইনজীবীই এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্য রিমান্ডের পক্ষে কথা বলেন। তবে আসামীদের পক্ষেও দুইজন আইনজীবী এই রিমান্ড আবেদনের বিরোধীতা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির ওসি মোক্তাদির হোসেন জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীদের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার প্রকৃত কারন উদঘাটন হতে পারে। সিলেটের ডিআইজি মিজানুর রহমান পিপিএম জানান, তদন্তের সার্বিক অবস্থা ভাল। আমাদের আর এক জন ব্যাক্তি টার্গেট রয়েছে। তাকে পুলিশ অনুসরন করছে। যে কোন সময় তাকে গ্রেফতার করা হতে পারে। তা হলেই রহস্য পুরোপুরি উদঘাটন হবে। উল্লেখ্য, গত শুক্রবার বাহুবল উপজেলার সুন্দ্রাটিকি গ্রামের মোঃ ওয়াহিদ মিয়ার পুত্র জাকারিয়া আহমেদ শুভ (৮), তার চাচাত ভাই আব্দুল আজিজের পুত্র তাজেল মিয়া (১০) ও আবদাল মিয়ার পুত্র মনির মিয়া (৭) এবং তাদের প্রতিবেশী আব্দুল কাদিরের পুত্র ইসমাঈল হোসেন (১০) নিখোঁজ হয়। ওই দিন বিকেল বেলা তারা উত্তর ভাদেশ্বর গ্রামে ফুটবল খেলা দেখতে গিয়েছিল। এ ব্যাপারে পরদিন ওয়াহিদ মিয়া বাদী হয়ে বাহুবল থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন। গত মঙ্গলবার রাতে বাহুবল মডেল থানায় অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা দায়ের করেন নিখোঁজ এক শিশুর পিতা। এই ঘটনার পর পুলিশের একাধিক টিম ও র‌্যাব মাঠে নামে ওই শিশুদের অনুসন্ধানে। গত সোমবার বিকেলে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে নিখোঁজ শিশুদের সন্ধানদাতাকে ২০ হাজার টাকা পুরস্কার দেয়ার ঘোষণা করা হয়। গত মঙ্গলবার রাতে নিখোঁজ শিশু মনির মিয়ার পিতা আবদাল মিয়া বাদী হয়ে বাহুবল মডেল থানায় অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। গত বুধবার সকালে সুন্দ্রাটিকি গ্রামের দিন মজুর কাজল মিয়া প্রতিদিনের ন্যায় বাড়ি থেকে বেড় হয়ে করাঙ্গী নদীর পাশে মাটি কাটতে গিয়ে বালিচাপা অবস্থায় ৪ শিশুর লাশ দেখতে পান। পরে লাশগুলো উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত শেষে ওই দিন রাতে দাফন করা হয়।