মতিউর রহমান মুন্না/জসিম তালুকদার ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার সর্বত্র চলছে মোবাইল ফোনের আতংক। ২৮২৮/ ০০০১১/ ০০০৮৮, এ রকম ৪ অথবা ৫ ডিজিটের নাম্বারের ফোন রিসিভ করলেই মৃত্যু বা শরীর জ্বলে কালো হয়ে গুরুতর আহত হওয়ার আতংক এখন উপজেলার সর্বত্র। গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত এনিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। গ্রামাঞ্চলের অনেকেই ফোন রিসিভ করতে ভয় পাচ্ছেন। গত কয়েকদিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে প্রতিনিয়ন এ ধরনের অভিযোগ আসছে। কেউ কেউ বলছে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছে। যদিও এর কোন সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। এমনকি হাসপাতাল কতৃপক্ষও এটাকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তারা বলছেন এ ধরনের কোন রোগী আমাদের হাসপাতালে আসেনি। এ সব ঘটনা বাস্তব না গুজব তা নিয়েও চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। তবে এসব গুজব নিয়ে আতংকিত না হওয়ার জন্য আহবান জানিয়েছেন সচেতন মহল। অনুসন্ধানে জানা যায়, কিছু অপ-প্রচারকারীরা প্রচার করছে তিনটা অথবা চারটা জিরো যুক্ত কোন মোবাইল নাম্বারে ফোন আসলে রিসিভ করলেই কানে বিকট আওয়াজের মাধ্যমে মোবাইল ব্যবহারকারীর মৃত্যু হয়ে যায়। এ গুজবকে অনেকেই বিশ্বাস করছেন। এমন গুজবে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। তাছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইজবুকে অনেকে স্ট্যাটাস দিয়ে এর সত্যতা জানতে চাচ্ছেন। সব মিলিয়ে এ গুজব নিয়ে যেন সারা দেশেজুড়েই তোলপাড় চলছে। গত দু’দিন আগে সদর ইউপির আলীপুর গ্রামের জনৈক মহিলা হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার স্বজনরা। তারা জানান, জিরো জিরো নাম্বারে একটি কল রিসিভ করার পর তার সারা শরীর কালো হয়ে যায়। এ ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ ইদ্রিছ আলীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, এ ধরনের কোন আলামত শরীরে পরিলক্ষিত হয়নি। তিনি বলেন, মনের আতংকে এমনটা হতে পারে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গৃহবধূ জানান, মোবাইলে ফোন আসলে মানুষের নাকে কানে রক্ত বের হয়ে মারা যায়। তাই ভয়ে মোবাইল ফোনই বন্ধ করে রেখেছি। অপর এক গৃহবধু জানান, তার অষ্টম শ্রেণী পড়–য়া মেয়ে প্রবাসের কোন কল আসলে রিসিভ বা কথা বলতে চায় না। সে নাকি শুনেছে জিরো জিরো নম্বারে ফোন রিসিভ করলে মানুষ মারা যায়। এ বিষয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রথীন্দ্র চন্দ্র দেব বলেন, এটা একটি গুজব ছাড়া কিছু নয়। হাসপাতালে এ ধরনের কোন রোগী আসেনি। তবে এটা একটি মানসিক রোগ। লোকের মুখে মুখে গুজব শুনে মনের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। এসব বিষয়ে আতংকিত না হওয়ার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান। সুশিল সমাজের নেতৃবৃন্দরা মনে করেন, একটি বিশেষ চক্র এ সব গুজন ছড়িয়ে কোন ফায়দা নেয়ার অপচেষ্টা চলছে। এ ব্যাপারে তারা সকলকে সর্তক থাকার আহ্বান জানান।