October 4, 2024, 12:18 pm

নবীগঞ্জের ইমাম বাওয়ানী চা বাগানে বকেয়া বেতন নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা : উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও’র হস্তক্ষেপে আগামী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ধর্মঘট স্থগিত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার ইমাম ও বাওয়ানী চা-বাগানে বকেয়া বেতন-ভাতা’সহ বিভিন্ন দাবীতে ফের উত্তেজনা দেখা দিয়েছে শ্রমিকদের মধ্যে। গতকাল সোমবার সন্ধায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা বাগান মালিক পক্ষের সাথে আলোচনা করে লিখিত চুক্তির মাধ্যমে আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া বেতন এর অর্ধেক এবং জানুয়ারী মাসের মধ্যে সম্পূর্ন পরিশোধের আশ^াসে শান্ত হয় শ্রমিকরা। ১৫ ডিসেম্বর এর মধ্যে অর্ধেক বেতন না ফেলে ফের আন্দোলন কর্মসূচির ডাক দিবেন বলে জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা। সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পানিউমদা ইউনিয়নে অবস্থিত ইমাম-বাওয়ানী চা বাগানের প্রায় সাড়ে ৪ শত শ্রমিকদের এক বছরের এরিয়া বিলসহ বকেয়া বেতনের কয়েক লক্ষাধিক টাকা বকেয়া রয়েছে। বকেয়া বেতন আদায় ও অন্যান্য দাবী বাস্তবায়নের জন্য কোম্পানীর উপ মহা-পরিচালক বরাবরে আবেদন করেও কোন সুরহা না হওয়ায় ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করে শ্রমিকরা। শ্রমিকদের ধর্মঘটের খবর পেয়ে গত বুধবার সন্ধায় নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এড. আলমগীর চৌধুরী চা বাগানে গিয়ে শ্রমিকদের সাথে আলাপ আলোচনা করে তাদের দাবীর প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন এবং আগামী ৭ দিনের মধ্যে মালিক পক্ষ তাদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ করার আশ্বাস দিয়ে শ্রমিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করার আহ্বান জানালে তারা ধর্মঘট কর্মসূচি স্থগিত কাজে যোগ দেয়। আশ^াসের ৫দিন ফেরিয়ে গেলে মালিকের পক্ষের কোন যোগাযোগ না থাকায় হতাশা দেখা দেয় শ্রমিকদের মধ্যে। এমন অবস্থায় ম্যানাজার ফখরুল ইসলামের উদাসীহিনতায় ফের উত্তেজনা দেখা দেয় শ্রমিকদের মধ্যে। শ্রমিক নেতারা জানান, এক বছর ধরে আমাদের কষ্টের বকেয়া বেতন-ভাতা নিয়ে টালবাহানা শুরু করেছে বাগান ম্যানাজার ফখরুল ইসলাম। এছাড়াও ঘর বাড়ি মেরামত করে দেয়া হচ্ছে না। অনেক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। প্রফিডেন্ট ফান্ডের টাকা শ্রমিকরা দিলেও মালিক পক্ষ সে টাকা জমা না দেয়ায় তারা ভবিষ্যতে ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার সম্ভব্যনা রয়েছে। শ্রমিকরা আরো জানান, তাদের বেতন ভাতা দেওয়া হচ্ছেনা কিন্তু ম্যানাজারের কোন মাথা ব্যাথা নেই তিনি ঠিকই বেতন বাতা পাচ্ছেন। এনিয়ে সোমবার সন্ধায় ম্যানাজার ও শ্রমিকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে চা বাগানে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। অনেকটা দাফটের সাথে কথা বার্তা বলেন ম্যানাজার ফখরুল ইসলাম। শ্রমিকরা জানান, দীর্ঘ দিন ম্যানাজারী করায় তার খুটির জোর অনেকটা শক্ত হয়ে গেছে তাই এমন দাফট দেখাচ্ছেন। শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনার খবর পেয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এড. আলমগীর চৌধুরী ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজিনা সারোয়ার গতকাল সোমবার সন্ধায় বাগানে যান। এসময় উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজমা বেগম, নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের অফিস সম্পাদক মতিউর রহমান মুন্না, স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ এলাকার অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। বাগানে গিয়ে তারা শ্রমিকদের সাথে আলোচনা করে এক সমজোতা বৈঠকে মিলিত হন। এসময় ইমাম বাওয়ানী চা বাগানের মালিক পক্ষে বাগানের পরিচালক মাসুদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত ইমাম টি এস্টেট লিমিটেডে প্যাডে একটি লিখিত চুক্তি পত্রে উল্লেখ করেন আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন এর অর্ধেক টাকা পরিশোধ করবেন এবং বাকী টাকা জানুয়ারী মাসে পরিশোধ করা হবে। এরই প্রেক্ষিতে উপজেলা চেয়ারম্যান এবং নির্বাহী কর্মকর্তা আলোচনা সাপেক্ষে এর দায়ীত্ব নেন এবং শ্রমিকদের শান্ত হয়ে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে কাজে যোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। এমনকি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এড. আলমগীর চৌধুরী ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজিনা সারোয়ার শ্রমিকদের আশ^াস দিয়েছেন ওই সময়ের মধ্যে তাদের বেতন না দিলে বাগানের পরিচালক স্বাক্ষরিত উক্ত লিখিত পত্র দিয়ে প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। তাদের আশ^াসে আশস্বস্থ হন শ্রমিকরা। তারা ঠিক মতো কাজ করবেন বলে জানান।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরো খবর
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.