চুনারুঘাট প্রতিনিধি ॥ চলতি মওসুমের খরার শুরুতেই চুনারুঘাটের লস্করপুর ভ্যালীর চা বাগানগুলো মারাত্বক আকারে লাল মাকড়শা বা রেড স্পাইডার রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। পাশাপাশি হেলোফেলটিস বা মশার আক্রমনও দেখা দিয়েছে পুরো চা এলাকাজুরে। ইতোমধ্যে বাগান কর্তৃপক্ষ মাকড়শা আক্রান্ত এলাকা চিহ্নিত করে ঔষধ ¯েপ্র করছেন এবং লাল নিশানা দিয়ে আক্রান্ত এলাকা থেকে পাতা উত্তোলন বন্ধ রেখেছেন। চলতি বছর আগাম বৃষ্টির কারণে চা বাগানগুলো উৎপাদনে যেতে পেরেছে মওসুমের শুরুতেই। তাই তারা আশাবাদি ছিল চায়ের উৎপাদন এবার বাম্পার ফলন হবে। কিন্তু মওসুমের প্রথম খরায়ই উপজেলার ১৭টি চা বাগানের অধিকাংশ চা বাগানে মারাত্বক আকারে দেখা দিয়ে রেড স্পাইডার বা লাল মাকড়শা ও হেলোফেসটিন বা এক জাতীয় মশার আক্রমন। এতে চায়ের উৎপাদন নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন চা সংশ্লিষ্ঠরা। সরজমিনে উপজেলার চান্দপুর, চন্ডিছড়া, চাকলাপুঞ্জি ও আমু চা বাগান ঘুরে দেখা গেছে চা বাগানের কিছু দুর পর পরই রেড স্পাইডারের আক্রমন। সবুজে সবুজে ভরা চা বাগানের মাঝে মাঝে লাল ও কালো বর্ণ আকার ধারণ করে আছে। এ অবস্থা ভ্যালীর ১৭টি চা বাগানের মধ্যে অধিকাংশ চা বাগানেই। আর এসব স্থানে চা বাগান কর্তৃপক্ষ লাল নিশানা দিয়ে ঐ পাতা উত্তোলন নিষিদ্ধ করছে। পাশাপাশি বাগান কর্তৃপক্ষ এসব স্থানে প্রতিরোধক স্প্রে করছেন। সাধারণত বর্ষায় খরা দেখা দিলে এবং তাপমাত্রা বেশি হলে লাল মাকড়শা বা রেড স্পাইডার ব্যপক হারে দেখা দেয়। বিশেষ করে তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রীর বেশি হলেই এরোগে আক্রান্ত হয় চা গাছ। এর পাশাপাশি হেলোফেলটিস বা এক প্রকাশ মশার আক্রমনও দেখা দেয় একই সাথে। এতে চা বাগানের উৎপাদন ব্যহত হয়। গত বছল লস্করপুর ভ্যালীর উৎপাদন অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়েছে। চা শিল্পের ইতিহাসে ভ্যালীর ১৭ চা বাগানে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ কেজি তৈরী চা উৎপাদন হয়েছে। গত বছরের ধারাকে অব্যাহত রেখে চলতি বছরও আগাম বৃষ্টি চা উৎপাদনের মওসুমকেও এগিয়ে নিয়ে এসেছে। কিন্তু হঠাৎ রোগের এ আক্রমন চা সংশ্লিষ্ঠদের ভাবিয়ে তুলেছে। তারা শ্রীমঙ্গলস্থ চা গবেষনা কেন্দ্রের পরামর্শ মোতাবেক রোগ প্রতিরোধে কাজ শুরু করে দিয়েছেন। ইতোমধ্যে আক্রান্ত এলাকায় ¯েপ্র দেওয়াসহ নানা প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহন করছেন বাগান কর্তৃপক্ষ। ‘এনটিসির মালিকানাধীন চন্ডিছড়া চা বাগানে ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, চলতি মওসুমে প্রচুর বৃষ্টিপাত হলেও তাপমাত্রা বেশি। এপ্রিলের শেষে এসে তাপমাত্রা বেড়ে গেছে। সাধারাণত রাতে বৃষ্টি হলেও দিনের তাপমাত্রা অত্যেন্ত বেশি। তাই রেড স্পাইডার এবং হেলোফেলটিস রোগে আক্রান্ত হচ্ছে চা বাগান। তিনি বলেন, চন্ডিছড়া চা বাগানে খুব সামান্য পরিমানে এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আশা করছি তা দ্রুত কমে যাবে। এদিকে চান্দপুর চা বাগান কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে আক্রান্ত এলাকায় প্রতিরোধক ¯েপ্র শুরু করে দিয়েছেন বলে জানালো বাগান কর্তৃপক্ষ। তারা আশা করেন, তাদের তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহনের ফলে দ্রুত এ রোগ দুর করা সম্ভব হবে।