মতিউর রহমান মুন্না ॥ নবীগঞ্জে কলেজ ছাত্রীকে উত্যক্ত করার অভিযোগে মোফাজ্জল (২২) নামে এক যুবককে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল রবিবার দুপুর ২ টার দিকে এ দন্ডাদেশ দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্যেট ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) আতাউল গনি ওসমানী। দন্ডাদেশপ্রাপ্ত মোফাজ্জল উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের ও কলেজের পার্শ্ববতী এলাকার মিল্লিক গ্রামের মৃত জহুর আলী পুত্র। সুত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ সরকারি ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির জনৈকা এক ছাত্রী কলেজে যাওয়া আসার পথে প্রায়ই উত্যক্ত করত মোফাজ্জল ও হুমায়ুনসহ স্থানীয় কয়েক যুবক। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কাস শেষে বাড়ির উদ্যেশে রওয়ানা হয়ে কলেজের গেইটের সামনে আসা মাত্রই বহিরাগত মোফাজ্জল ও কলেজ ছাত্র হুমায়ুন এবং তার এক সহপাঠি ওই ছাত্রীর পথরোধ করে তার কাছে মোবাইল ফোন নম্বর চায়। নম্বর দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে ওই ৩ যুবক ছাত্রীকে অশ্লিল ভাষায় গালিগালাজ করে প্রকাশ্যে ব্যাগে ধরে টানা হেচরা করে শ্লীলতা হানি ঘটায় এবং এ সময় ছাত্রী আতংকে বাড়ি যাওয়ার জন্য গাড়িতে উঠতে চাইলে ওই যুবকরাও গাড়িতে উঠেছিল বলে অভিযোগ করে ওই ছাত্রী। এ ঘটনার পর ছাত্রী তার স্বজনদের নিয়ে এসে নবীগঞ্জ সরকারি ডিগ্রি কলেজ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানায়। এ সময় কলেজের শিক্ষকরা নবীগঞ্জ থানা পুলিশকে খবর দিলে থানার এস আই পার্থ রঞ্জন দাশ কলেজে উপস্থিত হন। পরে ওই ছাত্রী ৩ যুবকের নাম উল্লেখ করে একটি লিখিত অভিযোগ দেয়। এ নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। ওই ৩ যুবকের মধ্যে দু’জন কলেজ ছাত্র এবং দন্ডাদেশপ্রাপ্ত মোফাজ্জল বহিরাগত। ওই ঘটনার পর থেকেই মোফাজ্জল, হুমায়ুন ও তার সহযোগী আত্মগোপনে চলে যায়। এদিকে গতকাল রবিবার সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নবীগঞ্জ থানার এসআই পার্থ রঞ্জন চক্রবর্তী নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের জন্তরী গ্রাম থেকে মোফাজ্জলকে আটক করে। পরে তাকে নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্যেট আতাউল গনি ওসমানীর কার্য্যালয়ে হাজির করলে তিনি তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তার কথা বার্তায় সন্দেহ হওয়ায় তাকে নিয়ে প্রথমে কলেজে ও পরে ওই ছাত্রীর বাড়ি উপজেলার বড় ভাকৈর ইউনিয়নের বাগাউরা গ্রামে যান এই কর্মকর্তা। এ সময় ছাত্রী সনাক্ত করে করে আটককৃত মোফাজ্জল এর সামনেও ঘটনার বর্ণনা দেয়। পরে তিনি কার্য্যালয়ে এসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে মোফাজ্জলকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদ- প্রদান করেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্যেট আতাউল গনি ওসমানী বলেন, মোফাজ্জল প্রথমে ঘটনার সাথে জড়িত নেই বলে জানালে তাকে নিয়ে কলেজে ও ওই ছাত্রীর বাড়িতে যাই। তখনও তার সামনে ওই ছাত্রী অভিযোগ করে ঘটনার বর্ণনা দেয়। পরে মোফাজ্জল স্বীকার করে। তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদ- প্রদান করা হয়েছে। নবীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) গোলাম দস্তগীর আহমেদ জানান, দন্ডপ্রাপ্ত মোফাজ্জলকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।