পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন

মোঃ মুজাহিদ চৌধুরী ॥ নবীগঞ্জে আওয়ামী লীগের পথসভায় পেট্রোল বোমা বিস্ফোরণে শহরজোড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। শহরের নতুন বাজার মোড়ে গতকাল সন্ধায় এ বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে। গতকাল রবিবার বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামীলীগের শোভাযাত্রা পরবর্তী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী মুজাহিদ আহমেদ সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু দাশ রানার পরিচালনায় পথসভা শেষে কে বা কারা পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে। এ সময় আশপাশের লোকজন দিকবিদিক ছুটোছুটি করতে থাকলে শহর জোড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় নবীগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নবীগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ আজিজুর রহমান। এ ঘটনার জেরে আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আলহাজ¦ গোলাম রসুল রাহেল চৌধুরীর বাস ভবনে রাত ৯টায় এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নবীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু দাশ রানা। বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ও তার সমর্থকরা নৌকার গণজোয়ার দেখে দিশেহারা হয়ে এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারেন বলে লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করেন নির্মলেন্দু দাশ রানা। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের হবে কি না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে নির্মলেন্দু দাশ রানা জানান, সাংগঠনিক বৈঠক শেষে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী আলহাজ¦ ছাবির আহমদ চৌধুরী তার নির্বাচনী কার্যালয়ে রাত সাড়ে ১০টায় সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবী করেন। লিখিত বক্তেব্যে তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী মিছিল, পথসভা, দেয়ালে পোস্টার লাগানোসহ প্রতিনিয়ত আচরণ বিধি লঙ্গন করে চলেছেন। তিনি আরও অভিযোগ করেন, তার কর্মীদের পুলিশী হয়রানী করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে তার দুইজন কর্মীকে আটক করা হয়েছে। নবীগঞ্জ পৌরবাসীকে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার আহবান জানান আলহাজ¦ ছাবির আহমদ চৌধুরী। আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী গোলাম রসুল রাহেল চৌধুরীকে বৈতল (স্থানীয় নয়) বলে কটাক্ষ করেছেন এমন অভিযোগ রয়েছে, বিষয়টি সত্য কি না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ছাবির আহমদ চৌধুরী বলেন তিনি কাউকে কটাক্ষ করে কথা বলেন নি। কেউ এ বিষয়টি প্রমানও করতে পারবেন না।
স্থানীয়রা জানান, শোভাযাত্রা শেষে নবীগঞ্জ শহরের নতুন বাজার মোড়ে যখন পথসভায় সমাপনী বক্তব্য রাখেন পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি মোজাহিদ আহমদ এই সময়ে হঠাৎ একটি বিকট শব্দ হয়। প্রথমে সবাই গাড়ির চাকা ব্লাস্ট হয়েছে মনে করলেও পরে দেখা যায় বোতলে মোড়ানো ককটেল বিস্ফোরণ ঘটেছে। এতে ছাত্রলীগের ৩ কর্মী আহত হয়েছেন। তাদেরকে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। আহতরা হলেন, নবীগঞ্জ পৌর এলাকার সালামতপুর গ্রামের ছমির মিয়ার পুত্র নজির মিয়া (৩৬), উপজেলার গোপলার বাজার ভানুদেও গ্রামের ফিরোজ মিয়ার পুত্র শিপন আহমেদ (২২), দেবপাড়া ইউনিয়নের প্রজাতপুর গ্রামের হোসেন মিয়ার পুত্র তারেকুল ইসলাম রনি। এ ঘটনায় নবীগঞ্জ শহরজুড়ে আতংক বিরাজ করছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিএনপির সাবেক এমপি শেখ সুজাত মিয়া ও ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী ছাবির আহমেদ চৌধুরীকে দায়ি করে তাৎক্ষনিক প্রতিবাদ মিছিল বের করে উপজেলা, পৌর ও কলেজ ছাত্রলীগের নেতারা। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আজিজুর রহমান বলেন, এ হামলায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। তদন্ত চলছে পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো হবে।