চুনারুঘাট প্রতিনিধি ॥ চুনারুঘাট উপজেলার সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের ছায়াদানকারী বৃক্ষ ঔষধী গাছ, লতাপাতা, বাঁশ ও বেত পাচার থেমে নেই। পাচারকারীরা বনের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের (২য় পৃষ্ঠায় দেখুন) যোগসাজসেই চালাচ্ছে গাছ পাচারের মহোৎসব। ফলে জাতীয় উদ্যানের ১৯৭ প্রজাতির জীবের মধ্যে ১৪৯ প্রজাতির পাখি, ১৮ প্রজাতির সরীসৃপ, মেছোবাঘ, বনের হনুমান ও বনমোরগসহ অনেক প্রাণীই এখন আবাসস্থলের অভাবে চা-বাগানের অভ্যান্তর হয়ে গ্রামে-গঞ্জে চলে আসছে। সেখানে শিকারীদের পাতানো ফাঁদে ধরা পড়ছে নানান ধরনের পাখি, বন মোরগ, বিষধর সাপ দেখে গ্রামে মারা হচ্ছে সাপ। আর এ সুযোগে বনবিভাগে নিয়োজিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নির্দিষ্ট টোকেনের মাধ্যমে সংরক্ষিত বলে প্রবেশ হওয়া পাচারকারীরা ইচ্ছেমত গাছ, বাশঁ, বেত, লতাপাতা ও ঔষধী গাছ কেটে নিয়ে পাচার করছে। স্থানীয় ভাবে ট্রলি, টেম্পো, ডায়না দিয়ে গাছ পাচার করা হয়ে থাকে। ঔষধী লতাপাতা গাছ প্রকাশ্যেই বাস ও ট্রাকে করে নেয়া হয়। ঢাকা-সিলেট পুরাতন মহাসড়কের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের সাইনবোর্ড সংলগ্ন এলাকা থেকে অতি সম্প্রতি ৩ টি সেগুন গাছ কেটে নেয় পাচারকারীরা। পুরাতন মুতা আশ-পাশে রয়েছে অসংখ্য। সাতছড়ি বিডিআর ক্যাম্পের সামনে দিয়ে গাছ লতাপাতা বাশ নিয়ে যায় তেলিয়াপাড়া রেল স্টেশনে। সেখানে থেকে ট্রেনযোগে নিয়ে যাওয়া হয় দেশের সর্বত্র। সদ্য যোগদানকৃত জাতীয় উদ্যান সাতছড়ি বিটের দায়িত্বে নিযোজিত মাসুক মিয়াকে মোটো ফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করলেও পাওয়া যায়নি। অপর এক কর্মচারী জয়নাল বলেন, গাছ লতাপাতা পাচারের বিষয়টি তিনি জানেন না। রেঞ্জ অফিসার (চলতি দায়িত্ব) রেহমান মাহমুদ থাকেন হবিগঞ্জ শহরে। জাতীয় উদ্যানের অপর প্রান্তে তেলমাছড়া বিট অফিস। সেখানে রয়েছেন জুলহাস নামে বিট অফিসার। তিনি অফিসের পেছনে সৃজিত ১৯৯২ সালের বাগানের ১০/১২টি এ্যাকাশী, বেলজিয়াম অফিসের সামনে দিয়ে দিনে দুপুরে পাচার করছেন। তাছাড়া ১৯৮৮ সালের বাগানের কাপাশিয়া এলাকা থেকে ইউকিলিপটাশ, লস্করপুর বদরগাজী রাস্তা দিয়ে পাচার করছেন। রঘুনন্দন পার্বত্য বনভূমির একটি অংশ প্রথম ১৯১৪ সালে রিজার্ভ বনভূমি হিসেবে ঘোষিত হয়। ২০০৫ সালে ১৯৭৪ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) (সংশোধন) আইন অনুযায়ী ২৪৩ হেক্টর এলাকা নিয়ে জাতীয় উদ্যানটি প্রতিষ্ঠা কারা হয়। ৭টি ছড়া এখন মৃত। ফলে জাতীয় উদ্যানের সকল প্রজাতির প্রাণীর মধ্যে পানিয় জলের অভাব। জাতীয় উদ্যানকে ঘিরে রাস্তাঘাট তৈরি হওয়ায় পাচারকারীরা অত্যান্ত নির্ভয়ে গাছ-গাছালী পাচার করে থাকে। বন বিভাগে বনভূমির পরিবেশগত প্রয়োজনীতা জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণে কতটুকু ভূমিকা পালন করছেন বাস্তবে তা ব্যার্থতায় পর্যবশিত হচ্ছে।
Leave a Reply