,

লন্ডন যাবার প্রাক্কালে বক্তব্য.. মোঃ আশরাফ উদ্দিন

দেশে আসার দীর্ঘ চার মাসের মধ্যে এলাকায় জনগণের সাথে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হয়ে আপনাদের দেয়া ভালবাসা, সংবর্ধনা ও আন্তরিকতার জন্য আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সাথে সাথে অভিনন্দন জানাচ্ছি। সেবার মনোভাব নিয়ে জনস্বার্থে এলাকার উন্নয়নের জন্য সাধ্যমত চেষ্টা করেছি। আপনারা আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করেছেন। আরো কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি নবীগঞ্জের নির্বাহী অফিসার, উপজেলা প্রকৌশলী, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সকল কর্মকর্তাগণ, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, ৭ ও ৮নং ইউপি চেয়ারম্যান, স্থানীয় গণ্যমান্য ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের নিকট। যাদের সহযোগিতায় কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে করতে সক্ষম হয়েছি। আমি মনে করি প্রবল ইচ্ছা ও আন্তরিকতা থাকলে এলাকার যে কোন উন্নয়ন করা সম্ভব। আবার অনেকে মনে করেন, জনপ্রতিনিধি না হলে উন্নয়ন সম্ভব নয় টাও সত্যি নয়। প্রায় দুই আড়াই লক্ষলোকের প্রতিনিধি একজন একার পক্ষেসব উন্নয়ন সম্ভব নয়। এছাড়া এদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় তার সীমাবদ্ধতা থাকে। সে ইচ্ছা করলেও অনেক কাজই দলের মতের বাইরে করতে পারে না। আর একজন নিরপেক্ষ লোক ইচ্ছা করলে করতে পারে। যদি ব্যক্তি স্বার্থের উর্ধ্বে জনস্বার্থ হয়ে থাকে। আর ব্যক্তি অর্থ ও সময় ব্যয় করে জনগণের কাজে এগিয়ে আসলে জন সমর্থনও পাওয়া যায়। সেই সাথে সমাজে বা রাষ্ট্রে বিভিন্ন সংস্থায় যদি তার গ্রহণযোগ্যতা থাকে সেই গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে অনেক ত্যাগ-তীতিক্ষার প্রয়োজন হয়। অনেক ভাল মানুষ জনপ্রতিনিধি রয়েছে, যারা সমাজের ক্ষিতও করে না আবার উপকারও করে না। তারা না ভাল না মন্দ। ভাল মানুষ তখনই হবে যার দ্বারা মানুষের কল্যাণ হয়। এমন মানুষ প্রয়োজন, যার যোগ্যতার সাথে কর্ম দক্ষতা দৃঢ় মনোবল, সুষ্ঠ পরিকল্পনাকারী, গণতান্ত্রিক সৎ ও আদর্শবান হয়। নির্বাচনের প্রার্থী হয়ে এলাকায় উন্নয়নের জোয়ার ঘটাবেন অনেকেই অঙ্গীকার করে তারা নির্বাচিত হয়ে নাকে তেল দিয়ে ঘুমাবেন আর ভাববেন ক্ষমতা পেয়ে গেছি, জনগণ এখন আমার কাছে আসবে। আমার কাজ শেষ। এসব ভাবার দিনও শেষ। নেতার সামনে সালাম দিলেও পিছনে ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নেয়। কারণ অযোগ্য নেতারা জনগণের ভোট বা মতামতের মূল্যায়ন করতে জানেন না। কোন প্রতিষ্ঠানের প্রধান হলে শুধু চেয়ারে বসে নিত্য দিন সালাম গ্রহণ করলেই চলবে না, আপনাকে একজন দক্ষ প্রশাসক হয়ে প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার উন্নয়নে সরকারী সহযোগিতা পেতে হলে বিভিন্ন বিভাগের সাথে চিঠি আর ফোনালাপেও কাজ হয় না। প্রয়োজনে সরাসরি ব্যক্তিগতভাবে দেখা স্বাক্ষাত করে সময় দিয়ে পেছনে লেগে থেকে কাজ করে আনতে হয়। যদি নবীগঞ্জ পৌরসভার কথাই উল্লেখ করি, তাহলে দেখা যায় যে, দীর্ঘ দেড় যুগ আগে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর প্রতিশ্র“তি মোতাবেক কি কি উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল, কি কি হয়েছি, কি কি হয়নি আর কি কি হলে পৌরবাসীর চাহিদা পূরণ হতো, এসব মূল্যায়নের সময় এসেছে আজ। মূলত নবীগঞ্জ পৌরসভার দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন পৌরবাসীর দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না কেন? যেখানে পৌর ভবনই নেই। কোটি টাকার গাড়ি রাখার ব্যবস্থা যেখানে নেই, সেখানে সাধারণ পৌরবাসী সুবিধা ভোগ করবে কোথায়। এ অবস্থায় আমি মনে করি এখানে একজন কর্মমুখী লোকের প্রয়োজন। তার কাজ দিয়ে যেনো যোগ্যতা ও দক্ষতা প্রমাণ করতে পারে। পরামর্শ ঃ একজন নিরপেক্ষ দক্ষ ব্যক্তি সমাজ উন্নয়নে অবদান রাখতে চাইলে তার সহযোগিতা নেয়া একান্ত জরুরী বলে আমি মনে করি। প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে কারো সহযোগিতা কামনায় দোষের কিছুই নেই। নিজে করতে পারি না, কাউকে করতেও দেব না, এতে ক্ষতিগ্রস্থ হবে পৌরবাসী। এটা সঠিক চিন্তা নয়। প্রয়োজনে একজন বিদ্যুৎসাহী সহকর্মী কাছে টেনে নিয়ে যৌথভাবে সুষ্ঠ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহযোগিতা নিতে পারেন। হবিগঞ্জ জেলার মধ্যে সবচেয়ে উন্নত নবীগঞ্জ পৌরবাসী এত অবহেলিত কেউ চিন্তাও করতে পারে না। ইতোমধ্যে আগামী পৌর নির্বাচনের প্রচারণা ও সম্ভাব্য প্রার্থীর পদচারণা চলছে। আমরা আশা করছি আগামী পৌর মেয়র হবেন একজন দক্ষ নিষ্টাবান, কর্মতৎপর, কল্যাণমুখী লোক। আমরা সেই প্রত্যাশায় রইলাম।
লেখক ঃ
বিশিষ্ট সাংবাদিক
তালিকাভুক্ত গীতিকার
বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারসত্ত্বাধিকারী – আশরাফ জাহান কমপ্লেক্স, হবিগঞ্জ।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরো খবর
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.