জুয়েল চৌধুরী ॥ লাখাই উপজেলার করাব ইউনিয়নের বেলেশ্বরী মেলায় জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে তিন গ্রামবাসির ৩ ঘন্টা ব্যাপি সংঘর্ষে পুলিশসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৩ পুলিশ সদস্যও রয়েছে। তবে ঘটনাস্থলে ১ মহিলার মারা যাবার খবর নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ ৩০ রাউন্ড রাবার বুলেট ও ১২০ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে। গতকাল বুধবার বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে। সংঘর্ষ চলাকালে মেলায় বসা দোকানপাট ভাংচুর করে লুটপাট করা হয়। এসময় ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন প্রাণভয়ে চারদিকে ছুটাছুটি শুরু করে। আহত ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মেলায় জুয়ার বোর্ড বসানোর সময় লাখাই থানা পুলিশ বাধাঁ দেয়। এসময় এক জুয়ারীকে পুলিশ আটক করে নিয়ে গেলে পুলিশের কাছ থেকে জুয়ারীরা আসামী ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এসময় উভয়পক্ষের জুয়ারীদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে করাব, আষেড়া ও ফান্দ্রাইল গ্রামের কতিপয় লোক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে লাখাই ও হবিগঞ্জ পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্টা করে। কিন্তু কোনোভাবেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে না আসলে ৩০ রাউন্ড রাবার বুলেট ও ১২০ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এসময় আষেড়া গ্রামের মধু মিয়ার স্ত্রী হাদিসা বেগম (৫৫) নামে এক মহিলা ঘটনাস্থলেই মারা যায়। সে ওই মেলায় পানের দোকান দিয়েছিল। তার পুত্র সৈয়দ মিয়ার দাবী তার মা সংঘর্ষের সময় নিহত হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, ভয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। এ নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশ সদস্য সজিব (২৫) ক-৭৩১, হাসান মিয়া (২৪), ক-৪৮১ ও মাসুদ রানা (২৫), ক -১০৯৬। এছাড়া আব্দাল মিয়া (২৭), শিষ আলী (৯০), ইউসুফ মিয়া (৮০), বরকত উল্লা (৫০), আছকির মিয়া (৪০), শাহীন মিয়া (২৫), রহমত উল্লা (৫০) কে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে রফিক মিয়া (৫০) এর পেটের ভুড়ি বের হয়ে গেলে আশংকাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানি মেডিকেলে প্রেরণ করা হয়েছে। এব্যাপারে সদর ওসি মোঃ নাজিম উদ্দিন ও লাখাই থানার ওসি মোঃ মোজাম্মেল হক জানান, পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। ফের সংঘর্ষ এড়াতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, হাদিসা বেগম স্টোক করে মারা গেছে।
Leave a Reply