এস এম খোকন : বানিয়াচংয়ে ধানের মূল্য কমে যাওয়ায় কৃষকের মুখের হাসি হাসি মুছে কপালে পড়েছে চিন্তার ভাজ। বৈশাখ মাসের শুরুতে ধানের মূল্য যেখানে ছিল ৭ শ টাকা এক সপ্তাহের ব্যবধানে সেই ধানের মূল্য কমে হয়ে গেছে ৫শ টাকা থেকে সাড়ে ৫ শত টাকায়। এক সপ্তাহের ব্যবধানে মন প্রতি ২ শ টাকা কমে যাওয়ায় কৃষককে লোকসান গুনতে হচ্ছে। ধানের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ার জন্য ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকগণ স্থানীয় আড়তদার ও মিল মালিকদের সিন্ডিকেটকে দায়ী করছেন। এ ব্যাপারে কামালখানী গ্রামের কৃষক কবির মিয়া জানান, চলতি বছরে তিনি ১২ একর জমিতে ধানের আবাদ করেছিলেন। প্রতিমন ধান ৫ শ টাকা থেকে সাড়ে ৫ শত টাকা মন ধরে বিক্রয় করতে বাধ্য হয়েছেন। এতে করে কৃষক জমি চাষাবাদ বাবত যে পরিমান টাকা খরচ করেছেন ধানের মূল্য কমে যাওয়ায় এখন লোকসান গুনতে হবে। এ ব্যাপারে কাজী মহল্লা গ্রামের কৃষক মখলিছুর রহমান জানান, করোনা ভাইরাসের অযুহাতে মিল মালিক ও স্থানীয় আড়তদাররা ধানের মূল্য কমিয়ে দিয়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে আড়তদাররা অতিরিক্ত মুনাফার আশায় মন প্রতি ২শ টাকা কমিয়ে দিয়েছে। আড়তদাররা দোষারুপ করছে মিল মালিকদের। মিল মালিকরা ধানের মূল্য কমিয়ে দেওয়ায় আড়তদাররা ও ধানের মূল্য কম দিচ্ছেন। ছোট নগড় গ্রামের কৃষক আনিস উল্লা জানান, গত বছরও কৃষি জমি চাষ করে লোকসান হয়েছে। যে কারনে চলতি বছর জমি আবাদের পরিমান কম ছিল। এই বছরও লোকসান হওয়ার কারনে আগামীতে জমি চাষাবাদ আর করব না। এ ব্যাপারে ধানের খুচরা ব্যাবসায়ী মোঃ আলী হোসেন জানান, আমরা ৫ শ টাকা করে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনতেছি। চিকন ধান (ব্রি-২৮) আছে ৬ শ টাকা। এ ব্যাপারে হোসেন এন্টারপ্রাইজের মালিক চান মিয়া জানান, আমাদের কি করার আছে, আমরা মিলারদের কাছে ধান বিক্রয় করি। মিলাররা আমাদেরকে যেভাবে ধানের মূল্য ধরে দেন আমরা এর বাইরে যেতে পারিনা। উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, বানিয়াচং উপজেলায় চলতি বছরে ৩৫ হাজার ১শ হেক্টর বোরো-ইরি জমিতে আবাদ করা হয়েছে। ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লক্ষ ৭৬ হাজার মেঃ টন। বৈশাখ মাসের শুরু থেকে আজ ২৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২৬% জমির ধান কাটা হয়েছে। তবে কর্তনকৃত অধিকাংশ জমির ধানই আগাম জাতের মোটা ধান। আরও এক সপ্তাহ পরে চিকন ধানের জমি কর্তন শুরু করা হবে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন।
Leave a Reply