,

৫ ছিনতাইকারী শ্রীমঙ্গলে আটক করেছে পুলিশ

মাহফুজ নয়ন ॥ ঈদেকে সামনে রেখে হবিগঞ্জে সিএনজি অটোরিক্সা ও ব্যাটারী চালিত টমটম ছিনতাইকারী সক্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রায়ই হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন সড়কে চালককে মারপিট করে হত্যা করে এসব যানবাহন ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে এ চক্রের সদস্যরা হল সুন্দরী যুবতীরা। তারা সেজে গুজে সি এন জি কিংবা টমটম রিজার্ভ নিয়ে নির্ঝন রাস্তায় নিয়ে হত্যা করে এসব যান বাহন নিয়ে চম্পট দেয়। গতকাল সোমবার ভোর বেলা হবিগঞ্জ ধুলিয়াখাল আনন্দপুর এলাকায় বাইপাস সড়কের ডুবায় হাত পা চোখ বাধা উলঙ্গ ও রক্তাক্ত অবস্থায় কাউছার মিয়া (৩৫) নামে এক সিএনজি চালকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সে চুনারুঘাট উপজেলার শানখলা ইউনিয়নের রমাপুর ঢেউয়াতলী গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বার এর পুত্র। ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় ৫ ছিনতাইকারী কে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন, সদর উপজেলার রিচি গ্রামের মৃত শের আলীর পূত্র রুবেল মিয়া (২৫), মাছুলিয়া গ্রামের শফিক মিয়ার পূত্র বাদল মিয়া (২২), ধুলিয়াখাল এলাকার এংরাজ মিয়ার ছেলে কাউসার মিয়া (২০), বড় বহুলা গ্রামের মৃত নুর আলীর পূত্র শাহআলম (২০), হবিগঞ্জ পৌর এলাকার মোহনপুরের সিজিল মিয়ার পূত্র জুয়েল মিয়া(২০)। এদিকে বিক্ষোদ্ধ শত শত সি এন জি চালকরা খবর পেয়ে সদর হাসপাতালের সামনে ছিনতাইকারী বাদল মিয়ার চায়ের দোকান গুড়িয়ে দিয়েছে। তার মা বাবা ভাই বোন তাড়া খেয়ে পালিয়ে গেছে। যে ভাবে সি এন জি চালক খুন হল। গত রবিবার ইফতার করে শশুর বাড়ী শুরাবই থেকে বাড়ীতে যাওয়ার জন্য রওয়ানা হয় সি এন জি চালক কাউছার মিয়া। এসময় ছিনতাইকরীরা তাকে ফোন করে বলে রিজার্ভ টিপ নিয়ে হবিগঞ্জ যেতে হবে। সে জানায় আমি রোজা রেখেছি তারাবিহ নামাজ পরব যেতে পারবনা অন্য কাউকে নিয়ে যান। এসময় তারা বলে জরুরী দরকার তাড়াতাড়ি হবিগঞ্জ যেতে হবে, তোমাকে টাকা বেশী দেওয়া হবে। তুমি আস। কথা বার্তার এক পর্যায়ে দরিদ্র কাউছার তাদের কথায় রাজি হয়। কিন্তু সে জানতনা এটাই তার শেষ যাওয়া আর হয়ত দুনিয়ার মুখ দেখবে না। অলিপুরের অধুর থেকে উল্লেখিত ৫ ছিনতাইকারী তাসফিয়া পরিবহন (হবিগঞ্জ থ-১১-৫৭৫৩) নিয়ে হবিগঞ্জের উদ্ধেশ্যে রওয়া দেয়। এদের মধ্যে রিচির গ্রামের শের আলী পুত্র রুবেল চালক কাউছারের পরিচিত ছিল। উল্লেখিত স্থানে আসা মাত্র তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার গায়ের কাপড় দিয়ে হাত পা মুখ বেধে পার্শবর্তী খাদে ফেলে তাকে হত্যা করে ডুবায় ফেলে রেখে সি এন জি নিয়ে চম্পট দেয়। এদিকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পেয়ে তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খুজাখোজি শুরু করে। কোথাও না পেয়ে রাতে শায়েস্থাগঞ্জ থানাকে অবগত করা হয়। শায়েস্থাগঞ্জ থানার ওসি ইয়াসিনুল হক হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় বিষয়টি অবগত করেন। এ নিয়ে সারা জেলায় তোলপার শুরু হয়। রাত ২ টার সময় সিএনজিটি বিক্রির উদ্দেশ্যে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার বরুনা নিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তায় টহলরত পুলিশ তাদের কে আটক করে। জিঞ্জাসাবাদে তাদের সন্দেহ হলে পুলিশ হবিগঞ্জ থানায় যোগাযোগ করে নিশ্চিত হয় চালক কে হত্যা করে সি এন জি ছিনতাই করে নিয়ে এসেছে। এসময় ছিনতাইকারীদেরকে ব্যাপক ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা উপরোক্ত ঘটনা শিকার করে। তাদের শিকাররোক্তি মতে সোমবার ভোরে সদর থানা ওসি মোঃ নাজিম উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ লাশ উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। এস আই মিজানুর রহমান ও ওয়াহেদ গাজী সুলতহাল রিপোর্ট তৈরী করে ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের জিম্মায় প্রেরণ করেন। এদিকে সন্ধায় আটককৃত ৫ ছিনতাইকারীকে শ্রীমঙ্গল থানা থেকে হবিগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তারা হবিগঞ্জ থানায় এসে পৌছেনি। সি এন জি চালকের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। চালকরা ছিনতাইকারীদের ফাঁসির দাবী জানায়। নিহত চালকের এক কন্যা সন্তান রয়েছে বলে জানাগেছে। ওসি জানান, প্রাথমিক ভাবে আটকৃতরা ঘটনার কথা শিকার করেছে। রিমান্ডে এনে জিঞ্জাসাবাদ করলে আরো কয়জন কে হত্যা করে সিএনজি ছিনতাই করছে এবং কারা কারা জড়িত তা জানাযাবে। তাদের বিরুদ্ধে আদালতে রিমান্ড চাওয়া হবে। এই ঘটনার পর থেকে হবিগঞ্জ ও এর আশ পাশের সিএনজি চালকদের মাঝে আতংক বিরাজ করছে।হবিগঞ্জে চালককে হত্যা
করে সিএনজি ছিনতাই


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরো খবর
×

Like us on Facebook

Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.