,

হবিগঞ্জে বেচাকেনার ধুম

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ আর মাত্র তিন-চারদিন পরই মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। সবাই এখন ব্যস্ত ঈদের প্রস্তুতিতে। ঈদকে সামনে রেখে হবিগঞ্জের বাজারেও বেচাকেনার ধুম পড়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে বেচাকেনা। নিজেদের পছন্দসই জিনিস কিনতে তরুণ-তরুণীরা ছুটছেন এক দোকান থেকে অন্য দোকানে। ঈদকে ঘিরে হবিগঞ্জ শহরও সেজেছে বর্ণিল সাজে। লাইটিং করা হয়েছে শহরের অনেক এলাকায়। দেখে মনে হচ্ছে যেন আজই ঈদ। বাজারের কাপড়, জুতা, প্রসাধনীসহ বিভিন্ন উপহারের দোকানে পা ফেলার জায়গা নেই। শহরের বিভিন্ন এলাকায় সোমবার ঘুরে দেখা যায়, পুরোদমে চলছে বেচাকেনা। শহরের তিনকোণা পুকুরপাড়, চৌধুরী বাজার, ঘাটিয়া বাজারের কাপড়ের দোকানগুলোতে লোকজনদের উপচেপড়া ভিড়। বিক্রেতারা জানান, ১৫ রমজানের পর থেকেই সাধারণত শুরু হয়েছিল কেনাবেচার ধুম। শেষ মুহূর্তে বিক্রিবাট্টা আরও বেড়েছে। তবে অনেক ক্রেতারা জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের ঈদে কাপড়ের দাম বেশি হওয়ায় নিম্ন আয়ের ক্রেতারা কাপড় কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন। সরেজমিনে চৌধুরী বাজার, ঘাটিয়া বাজার, এসডি প্লাজা, পরশমনি, শংকর সিটি, এসডি ক্লথ স্টোর, আল নুর সিটি, মধুমিতা ক্লথ স্টোর, এমজি প্লাজাসহ বিভিন্ন দোকান ঘুরে ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। তবে অধিকাংশ ক্রেতাই সাধ এবং সাধ্যের বাইরে থাকায় দরদাম করেই চলে যাচ্ছেন। ভারতীয় সিরিয়ালের নায়িকাদের নামের পোশাকের চাহিদা বেশি প্রতিবারের মতো এবারও ভারতীয় সিরিয়ালের নামের থ্রি-পিস আর কাপড়ের চাহিদা তরুণীদের কাছে বেশি। এ চাহিদা মিটাতে বাজারে এসেছে নজরকাড়া ডিজাইনের থ্রি-পিস। আলাপকালে কয়েকজন ক্রেতা দ্য রিপোর্টকে জানান, এবারও অন্যান্য বছরের মতো ভারতীয় সিরিয়ালের নামের পোশাক ‘কিরণমালা’, ‘পাখি’ ‘জলনূপুর’, ‘কটকটি’, ‘রাশি’, ‘মুতিমালা’, ফ্লোর টাচ, কমল টিস্যু, জুট কাতানই বেশি জনপ্রিয়। দামের দিক থেকে দেখা যায়, ‘কিরণমালা’ জামা ১ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা, ‘কটকটি’ ১ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকা, ‘পায়েল’ দেড় থেকে ৬ হাজার টাকা, ফ্লোর টাচ ২ থেকে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শাড়ির মধ্যে জামদানি ২ থেকে ১২ হাজার টাকা, সিল্ক জামদানি ৩ থেকে ৮ হাজার টাকা, জর্জেট ৩ থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ছেলেদের ভাল মানের পাঞ্জাবি ১ থেকে ১০ হাজার টাকা দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এ ছাড়া জুতার দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। এসডি ক্লথ স্টোরের মালিক দুলাল সূত্রধর দৈনিক হবিগঞ্জ সময় প্রতিনিদিকে জানান, এবার সর্বোচ্চ ২২ হাজার টাকা দামে শাড়ি বিক্রি করেছেন। অন্য বছরের তুলনায় বেচাকেনা ভালোই। পাঞ্জাবিই তরুণদের প্রথম পছন্দ ঈদের নামাজতো পাঞ্জাবি পরেই পড়তে হবে। সে জন্য চাই নতুন পাঞ্জাবি। বাঙালি মুসলমানদের এ চিরাচরিত ঐতিহ্য ধরে রাখতে সচেষ্ট সবাই। এ সুযোগে ক্রেতাদের পছন্দনীয় পাঞ্জাবি তোলা হয়েছে বড় বড় শপিং মলে। তরুণ ও প্রবীণসহ সব বয়সের পুরুষের পছন্দের তালিকায় পাঞ্জাবি। এবারের ঈদে পাঞ্জাবির ডিজাইন, রং ও কাপড়ে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে বলে জানান বিক্রেতারা। আর তরুণদের পাঞ্জাবি পাওয়া যাচ্ছে সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৮ হাজার টাকায়। গহনা আর প্রসাধনীর দোকানে ভিড়। ঈদকে সামনে রেখে গহনা আর প্রসাধনির দোকানে ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। গহনার দোকানে গিয়ে কেউ নিজের জন্য, আবার কেউ উপহার দেওয়ার জন্য গহনা কিনছেন। নতুন ডিজাইনের পুঁতি, কড়ি, শেল, সুতা, কাঠ ও পিতলের তৈরি গহনার প্রতিই তরুণীরা বেশি আগ্রহী। ব্যবসায়ীরা বলেন, ১৫ রমজানের পর থেকেই গহনার দোকানে ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে থাকে। কারণ এ সময় অনেকেরই পোশাক কেনা হয়ে যায়। এর পরই পোশাকের সঙ্গে ম্যাচিং গহনা কিনতে ভিড় জমান নারীরা। প্রসাধনীর দোকানেও ভিড় রয়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের পোশাক কেনার পর তরুণীরা ছোটেন তাদের পোশাকের সাথে ম্যাচিং করে বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী কিনতে। ডিজিটাল যুগেও ঈদ কার্ডের চাহিদা সবাই বলে ডিজিটাল যুগে ঈদ কার্ডের চাহিদা কমে গেছে। সবাই এখন ই-মেইল, মোবাইল এসএমএস, এমএমএস, ফেসবুক, টুইটসহ বিভিন্নভাবে ঈদ শুভেচ্ছা জানান। এর পরও অনেকে ঈদ কার্ডের মাধ্যমেই প্রিয়জনকে ঈদের শুভেচ্ছা জানানোর চেষ্ট করছেন। এর ফলে কার্ডের দোকানে লক্ষ্য করা গেছে ক্রেতাদের ভিড়। এদিকে হবিগঞ্জে ঈদকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তার কারণে নিরাপদে বেচাকেনা করতে পারছেন বিক্রেতা ও ক্রেতারা। আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) জয়দেব কুমার ভদ্র জানান, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও যানজট দূর করতে প্রশাসন উদ্যোগ নিয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘যৌন হয়রানি ঠেকাতে সারা জেলায় সুন্দরী নারী পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। সুতরাং যৌন হয়রানির সুযোগ নেই বললেই চলে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরো খবর
×

Like us on Facebook

Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.