March 25, 2025, 12:56 pm

নবীগঞ্জের কুশিয়ারার ডাইক এ যেন মুদ্রার এপিট ওপিট জলাবন্ধতাই নেপথ্যর কারণ

এম.এ আহমদ আজাদ ॥ নবীগঞ্জের কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদ সীমার প্রায় একফুট উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা ডাইকের বাহিরের অংশে বন্যা আর জলাবদ্ধতা ভিতরের অংশে শুকনো। এযেন মুদ্রার এপিট ওপিট বন্যার সৃষ্টি হচ্ছে সচেতনতার অভাবে। ফলে বাহিরের অংশের শতাধিক পরিবারকে প্রতিবছর জলাবব্ধতায় আর বন্যার পানিতে বর্ষাকাল ৬ মাস থাকতে হয়। নদীর তীরবর্তী কুশিয়ারার ডাইকের বাহিরের অংশে উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের দীঘলবাক গ্রাম, কসবা, চরগাঁও, উমরপুর, গালিমপুর, মাধবপুর, কুমারকাঁদা (একাংশ), আহম্মদপুর, ফাদুল্লা, রাধাপুর, জামারগাঁও, রাধাপুর প্রাইমারী স্কুলসহ বেশ কিছু এলাকায় শতাধিক পরিবার প্রায় ১৫দিন যাবত এখনো পানিবন্ধি অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছে। সরকারী ত্রানসামগ্রী এখনো ঐ এলাকায় পৌছেনি। গতকাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ আবারো এলাকা পরিদর্শন করে বলেন কয়েকদিনের মধ্যেই ত্রান পৌছে যাবে। তিনি সরকারী বাঁধটি মেরামতের উদ্যোগ নিচ্ছেন। এসময় তিনি বলেন বাঁধের ভিতরে অংশে কোন বন্যা নেই। বাঁধের চেয়ে নিচু জায়গায় বাড়ি ঘর নির্মান করার ফলে কয়েকশ পরিবার কুশিয়াররা পানিতে বন্ধি হয়ে পড়েছে। বাঁধের কারনে আটক পানি জলবদ্ধতা সৃষ্টি করে এতে স্বাভাবিক ভাবে ওদের দ্রুত প্লাবিত করে ফেলে। তাই আগামী শুকনো মওসুমে এসব বাড়ি ঘর মাটি দিয়ে উচু করতে হবে অন্যাতায় সমস্যাটি স্থায়ী হিসাবে থেকে যাবে। কারন বর্ষার পানি আসলেই ওরা প্রতিবছর কুশিয়ারা বন্যার পানিতে বন্ধি হয়ে পড়বে। তাই সবাই সচেতন হলে যারা বাঁধের ভিতরে বাড়ি ঘর নির্মান করেছেন তারা নিচু জায়গায় হলেও নিরাপদ আর বাহিরের অংশে যারা তারা স্বাভাবিক ভাবে কুশিয়ারার বানের পানি উজান থেকে আসলেই ঘর বাড়ি তলিয়ে যায়। তাই তাদের আরো সচেতন হয়ে বাঁেধর চেয়ে নিজেরদের বসত ঘরের ভিটে বাড়ি উচু করতে হবে তখন জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা পাবেন। তিনি এসময় সাংবাদিকদের জানান সরকারী ভাবে ফাটলকৃত বাঁধ মেরামত করা হয়েছে। বাঁধের বাহিরের অংশ নিয়ে কৃষকরা রয়েছেন মহা দুঃচিন্তায়। অপর দিকে অনেক লোকদের বেশ ক’য়েকটি মৎস্য খামার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। এছাড়া কুশিয়ারা ডাইকের বিপদসীমার কাছ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। রাধাপুর নানু মিয়ার বাড়ির নিকটে ডাইকে ব্যাপক ফাটল মেরামত করা হয়েছে। ডাইকের বাসিন্দা সাবেক মেম্বার আব্দুল বারিক রনি এ প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন ওই ডাইক ভেঙ্গে গেলে নবীগঞ্জের কয়েক’টি ইউনিয়নে বন্যায় প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হবে বলে আশংখ্যা করছেন এলাকাবাসী। ডাইকে ফাটল দেখার কারনে আতংক ছিল এলাকার লোকজনের মধ্যে। এ ব্যাপারে জরুরী ভিত্তিতে কুশিয়ারা নদীর ওই ডাইকের মেরামত করার ফলে অকাল বন্যার হাত থেকে নবীগঞ্জ বাসীকে রক্ষা করা হয়েছে। এছাড়া গত ক’দিন ধরে টানা বর্ষণ ও উজান থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি নেমে আসায় কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আসছিল। ইতিমধ্যে উল্লেখিত গ্রামের বাঁধের বাহিরের অংশের লোকদের বাড়িঘরে ও আঙ্গিনায় পানি উঠায় পানি বন্দি জীবন যাপন করছেন। ঘর থেকে বের হতে হলেই কলাগাছের ভেলা, নৌকা বা বাশেঁর সাকোঁ ব্যবহার করতে হয়। প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে এবাঁধের বাহিরে অংশের মানুষের দূর্বিষহ জীবন যাপন করতে হয়। নদীর তীরবর্তী গ্রাম ও বাড়িঘর হওয়ার কারনে এ দূর্ভোগের শিকার হন। অনেক পরিবারের লোকজন হাটুঁ পানিতে ভিজে ঘরে আসা যাওয়া করতে হচ্ছে। গতকাল দিন ব্যাপী ওই এলাকায় সরজমিনে গেলে এমন দৃশ্য গুলো চোখেঁ পড়ে। এ প্রতিনিধি কে স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি গোলাম হোসেন বলেন, প্রতি বছরই কুশিয়ারা নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়ে শত শত পরিবার নিঃস্ব হচ্ছে। এরমধ্যে বর্ষা মৌসুমে মানুষের পানিবন্ধি ও জলাবদ্ধতায় দূর্ভোগের অন্ত নেই। বৃষ্টি বন্ধহলেও নদীর পানি কমছে না উজান থেকে পাহাড়ী ঢলের পানি আসায় প্রতিদিনই পানি বাড়ছে এবং নতুন নতুন বাড়িঘর প্লাবিত হচ্ছে। মানুষের দূর্ভোগ ও কষ্টের শেষ নেই। ফলে স্কুল কলেজ পড়–য়া ছাত্র-ছাত্রীরা রয়েছে বিপাকে। এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট আলমগীর চৌধুরী বলেন, কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী গ্রাম গুলোর লোকজন পানি বন্দি অবস্থার খবর পেয়েছি। সরজমিনে গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য ত্রান মন্ত্রনালয়কে জানানো হয়েছে। পানিউন্নয়ন বোর্ড বাঁধ মেরামত করছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরো খবর
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.