,

মহাসড়কে অটোরিক্সা চলাচল বন্ধ বাহুবলে যাতায়াত বিড়ম্বনায় স্কুল কলেজে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি হ্রাস

নূরুল ইসলাম মনি, বাহুবল থেকে ॥ ঘড়ির কাটায় বিকেল সাড়ে ৪টা। স্কুল, কলেজ, মাদরাসা সবে ছুটি হয়েছে। বাহুবল বাজারের একপ্রাপ্ত দোকানপাটের ছায়ায় দাঁড়িয়ে প্রহর গুণছে শ’ দুয়েক ছাত্রছাত্রী। অনেকক্ষণ পর একটি যাত্রীবাহী লেগুনা গাড়িতে মিরপুর বাজারের দিক থেকে এসে থামলো। ১১সিটের এ লেগুনা গাড়িকে দেখেই এগিয়ে গেল অপেক্ষমান ছাত্রছাত্রীরা। শুরু হলো ধাক্কাধাক্কি, কার আগে কে গাড়িতে উঠবে। শেষ পর্যন্ত খালি সিটে ৫ জন এবং বাম্পারে ঝুঁলে ৩ জন বাড়ির পথে যাত্রা করলো। আটকা পড়া অবশিষ্টদের আর একটি লেগুনার জন্য প্রহর গুণা শুরু হলো। কখন যে এসব ছাত্রছাত্রীর বাড়ি ফেরা হবে, কারো জানা নেই। হতো কারো কারো বাড়ি ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যাও গাড়িয়ে যাবে। পরদিন আবার তাদের স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার ক্লাস ধরার জন্য পথে নামতে হবে সেই সাতসকালে। এ ভাবেই গত ১০/১১ দিন ধরে চলছে এ অঞ্চলের শিক্ষার্থী ও সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তি। আসা-যাওয়ায় এরূপ বিড়ম্বনা স্থানীয় স্কুল, কলেজ ও মাদরাসায় ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি কমে গেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এ নিয়ে স্থানীয় ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের দুশ্চিন্তার অন্তঃ না থাকলেও কর্তৃপক্ষের যেন কোন ভাবনা নেই। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বাহুবল বাজারে যানবাহনের অপেক্ষায় থাকা শিক্ষার্থীদের সাথে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। এ সময় শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকার বিকল্প যানবাহনের ব্যবস্থা না করেই হাঠৎ করে মহাসড়কে অটোরিক্সা বন্ধ করে দিয়েছে। এতে বাহুবল উপজেলার শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের যাতায়াতে ব্যাপক দুর্ভোগ নেমে এসেছে। ফেরদৌসী নামে এক স্কুল ছাত্রী জানায়, তার বাড়ি সদর থেকে ৫ কিলোমিটার উত্তর দিকে একটি গ্রামে। সদরে প্রাইভেট পড়ার জন্য তাকে সকাল ৭টায় আসতে হয়। সে লক্ষ্যে তাকে ভোর বেলা বাড়ি থেকে বের হতে হয় এবং স্কুলের ক্লাশ শেষ করে যানবাহনের দুর্ভোগ মুখাবেলা করে বাড়ি ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। ফলে রাতে আর তার দ্বারা পড়ালেখা করা সম্ভব হয় না। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী সমাপনী পরীক্ষায় তাকে ফল বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হবে বলেই তার আশঙ্কা। কথা হয় ফয়সল নামে এক কলেজ ছাত্রের সাথে। সে জানায়, বাহুবল উপজেলা সদরে ২টি হাইস্কুল ও একটি কলেজ রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে উপজেলা বিভিন্ন গ্রামের কয়েক সহস্র শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। ওইসব গ্রাম থেকে বাহুবল সদরে আসতে মহাসড়কের বিকল্প কোন পথ নেই। আবার সিএনজি চালিত অটোরিক্সা ছাড়া কোন যানবাহনও নেই। অটোরিক্সা বন্ধ করে দেয়ার পর মিরপুর বাজার থেকে দ্বিগাম্বর বাজার পর্যন্ত দু’একটি লেগুনা চলাচল করলেও তা পর্যাপ্ত নয়। ফলে যানবহনের অভাবে আমরা নিয়মিত স্কুল, কলেজে আসা-যাওয়া করতে পারছি না। ফলে এখানকার শিক্ষার্থীদের ক্লাশ গ্রহণ মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরো খবর
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.