আয়া দিয়ে ডেলিভারী করাতে গিয়ে মা ও নবজাতকের অবস্থা আশংকাজনক
জুয়েল চৌধুরী : হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল নামেই আধুনিক। কিন্তু নেই কোন আধুনিক চিকিৎসা। উপরন্তু ডাক্তার ও নার্সের পরিবর্তে চিকিৎসা চালাচ্ছে আয়া ও ওয়ার্ড বয়রা। তারা নাকে তেল দিয়ে রাতের বেলায় ঘুমিয়ে থাকে। এ যেন প্রতিদিনের কাহিনী। গতকাল শনিবার ভোরে নার্সের পরিবর্তে আয়ারা ডেলিভারী করাতে গিয়ে নবজাতক ও তার মা মৃত্যুর পথযাত্রী। শুধু তা-ই নয়, মৃত্যুর পর আবার জীবিত। এ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
খবর নিয়ে জানা যায়, গতকাল ভোরে প্রসূতির ব্যথা নিয়ে বানিয়াচং উপজেলার মুরাদপুর ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের স্ত্রী তাসলিমা আক্তার (১৯) হাসপাতালে ভর্তি হন। যার রেজি: নং- ২৪৩৫৮। অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হলে তাকে গাইনী ওয়ার্ডে রেফার করা হয়। সেখানে ভর্তির পর রোগীর নরমাল ডেলিভারী করানোর জন্য ২৪ ঘন্টা নার্স থাকলেও তারা থাকেন ঘুমিয়ে। এই সুযোগে টাকার লোভে হাসপাতালের আয়া চুমকি, মাধবী, প্রতিমা তাসলিমাকে ডেলিভারী নিয়ে যায়। সেখানে ওষুধপত্র ছাড়াই টানা-হেচড়া করে ডেলিভারী করায়। একপর্যায়ে তাসলিমা ও নবজাতক ডেলিভারী হওয়ার পর রক্তক্ষরণ হতে থাকে। তখন তাসলিমার নাড়াচাড়া বন্ধ হয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। একপর্যায়ে ডাক্তার এসে দায়সারাভাবে পরীক্ষা নীরিক্ষা করে তাৎক্ষনিক তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। স্বজনরা তাসলিমাকে সিলেট নিয়ে যাওয়ার জন্য এ্যাম্বুলেন্সে উঠাতে গেলে সে নড়েচড়ে উঠে এবং কথা বলতে শুরু করে। তখন তাকে পুনরায় সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
রোগীর স্বজনদের অভিযোগ- ডাক্তার ও নার্সরা চিকিৎসা না করায় আয়ারা তাদের রোগীর ডেলিভারী করাতে গিয়ে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। তারা এ ব্যাপারে আইনী ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছেন। নবজাতককে সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। যে কোন সময় যে কোন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। যাতে তাদের মত আরো কারো কোন রোগীর এমন অবস্থা না হয়। দূর-দূরান্ত থেকে হাসপাতালে এসে চিকিৎসা করাতে গিয়ে অপচিকিৎসার শিকার হন অনেকেই।
Leave a Reply