,

বাহুবলে দু’দলের সংঘর্ষে আহত ১৫ ॥ র‌্যাব-৯ এর হাতে আওয়ামীলীগ নেতা আটক

বাহুবল প্রতিনিধি ॥ বাহুবলের রশিদপুরে পেট্রোল থেকে অকটেনে রূপান্তর করণের জি ফর্মিং ইউনিট স্থাপন শীর্ষক প্রকল্পের কাজ নিয়ে দু’দলের মধ্যে হামলা-সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ৩ র‌্যাব সদস্যসহ কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়। খবর পেয়ে র‌্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ভাদেশ্বর ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি আলাউর রহমান শাহেদকে আটক করা হয়েছে। আওয়ামীলীগ নেতা শাহেদকে আটকের পর থেকেই সড়কপথ অবরোধ করে রাখে লোকজন। প্রত্যদর্শীরা জানায়, ওই প্ল্যান্টে কাজ চলাকালে দু’টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কাজ করা নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। এর জের ধরে বুধবার দুপুরে উভয়পক্ষের মধ্যে হামলা-সংর্ঘষের” ঘটনা ঘটে। এতে উল্লেখিত সংখ্যক লোক আহত হয়। তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ওই প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেকবে ইন্টারন্যাশনালের স্বত্ত্বাধিকারী হুমায়ূন কবির মোবাইল ফোনে জানান, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্র“তি অনুযায়ী বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর তত্ত্ববধানে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ চলছে। তার প্রতষ্ঠান প্রথমে এ প্রকল্পের মাটি ভরাটের কাজ প্রথমে দেয়া হয় সিলেটের আব্দুল আওয়ালের মালিকানাধীন আনাস এন্টার প্রাইজকে। প্রতিষ্ঠানটি ঠিকমতো কাজ করতে না পারায় এবং মাঝে কিছুদিন কাজ বন্ধ রাখায় ১১ জুন তাদের সাথে চুক্তি বাতিল হয়। এর আগে বেশ কয়েকবার ওই প্রতিষ্ঠানকে লিখিতভাবে কাজ করার জন্য বলা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত তার চুক্তি বাতিল করে ১৩ জুন বাহুবলের আ’লীগ নেতা আলাউর রহমান শাহেদের মালিকানাধীন এমএইচ টেডার্স এবং সাইফুদ্দিনের মালিকানাধীন এমএস টেডার্সকে মাটি ভরাটের কাজ দেয়া হয়। এর আগে ওই দু’টি প্রতিষ্ঠানকে ৪ এপ্রিল গাইড ওয়াল নির্মাণের কাজ দেয়া হয়। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে দেশের বিপুল পরিমান রাজস্ব আয় হবে। তিনি বলেন, বুধবার সংঘর্ষ হয়েছে শুনেছি। শাহেদ আগে আব্দুল আওয়ালের সাব ঠিকাদার ছিল। তাদের মধ্যে টাকা নিয়ে কি ঝামেলা হয়েছে। তবে গতকাল বুধবার কি নিয়ে সংঘর্ষ হয়েছে তা জানিনা। আমাকে শ্রমিকরা বলেছে ঠিকাদার শাহেদকে র‌্যাব আটক করেছে। রাস্তা অবরোধ হয়েছে। এ ব্যাপারে র‌্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের কমান্ডার মঞ্জুরুল হক জানান, শাহেদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। আব্দুল আওয়াল নামে একজন তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ দিয়েছেন। গতকাল বুধবার চাঁদা নেয়ার সময় তাকে হাতেনাতে আটক করা হয়। তখন তার লোকজন আইনশৃংখলা বাহিনীর পোষাক পড়া অবস্থায়ও র‌্যাবের উপর হামলা করেছে। এতে ৩ জন র‌্যাব সদস্য আহত হন। বাহুবল থানার ওসি মোশাররফ হোসেন পিপিএম জানান, আব্দুল আওয়াল প্রথমে কাজ নেয়। কিন্তু তার তেমন কোন পুঁজি ছিলনা। সে সাহেদকে সাব ঠিকাদার নিয়োগ দেয়। কিছু কাজ করার পর বিল নিতে গেলে কোম্পানী বুঝতে পেরে সাহেদের টাকা তাকে দিয়ে বাকিটা আওয়ালকে দেয়। এদিকে বুধবার মাটির কাজ চলাকালে শাহেদকে র‌্যাব আটক করে। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা দুপুর থেকে হবিগঞ্জ-মৌলভীবাজার সড়ক অবরোধ করে রাখে। এদিকে বিষয়টি সমাধানের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: শহীদুল ইসলাম ও বাহুবলের উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম র‌্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পে ছুটে যান। যুবলীগের সহ সভাপতি আব্দুল জলিল সন্ধ্যা ৬টায় জানান, আমাদের যুবলীগ নেতা আলাউর রহমান শাহেদকে মুক্তি না দিলে আমরা অবরোধ চালিয়ে যাব। এদিকে স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক সমাচারের নির্বাহি সম্পাদক দিদার এলাহি সাজু ও বিজয়ের প্রতিধ্বনি পত্রিকার বাহুবল প্রতিনিধি জুবায়ের আহমেদ ছবি তুলতে গেলে অবরোধকারীরা তাদের উপর হামলা করে ক্যামেরা ছিনতাই করে বলে অভিযোগ করেন তারা। সন্ধ্যা ৭টায় হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: শহীদুল ইসলাম আ’লীগ নেতা শাহেদকে র‌্যাবের কার্যালয় থেকে পুলিশের জিম্মায় নিয়ে আসলে সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়।


     এই বিভাগের আরো খবর