,

সুতাং নদী পরিদর্শনে বাপা

সংবাদদাতা ॥ ‘পৃথিবী বাঁচাতে শিল্প দুষণ বন্ধ করো’ এই শ্লোগান নিয়ে সুতাং নদী পরিদর্শন করেছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ এবং খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপারের একটি প্রতিনিধি দল। গতকাল সোমবার বিশ্ব ধরিত্রী দিবস উপলক্ষে শিল্পবর্জ্য দূষণে আক্রান্ত সুতাং নদীর বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখেন পরিবেশকর্মীরা। এসময় সাধুর বাজারে সুতাং নদীতে এক প্রতিবাদী কর্মসূচী করা হয়। পরিবেশ দূষণে ক্ষতিগ্রস্থ নদী পাড়ের বাসিন্দারা এই কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেন। পরিদর্শনকালে প্রতিনিধিদল দেখতে পান সুতাং নদীর পানি কালো হয়ে আছে। দূর্গন্ধে নাক বন্ধ করে চলাচল করছে এলাকার লোকজন। কলকারখানার বর্জ্যে সুতাং নদীসহ আশ-পাশের জলাশয়গুলো মারাত্মকভাবে দূষিত হয়ে পড়েছে। শিল্পবর্জ্য দূষণে সুতাং নদীটি হয়ে পড়েছে মৎস্যশূন্য, নদীর পানি ব্যবহারকারীরা পড়েছেন মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে। মারা যাচ্ছে হাঁস-মোরগ-গবাদিপশু। মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে চর্মরোগসহ নানা অসুখে। মাঠে ফসল উৎপাদন কমে যাচ্ছে। এসময় বাপা হবিগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, বছরের পর বছর ধরে কলকারখানার বর্জ্য সুতাং নদীতে ফেলা হচ্ছে। এই বর্জ্যে নদীটি এখন মৃতপ্রায়। কৃষিজমি, খাল, ছড়া, নদীসহ সকল প্রকার জীবন ও জীবিকা দূষণের শিকার হয়েছে। এতে কোন কোন এলাকায় হাঁস-মোরগ, গৃহপালিত পশুর মৃত্যুসহ নানা রোগ জীবানু ছড়িয়ে পড়ছে। যা কৃষিজমি ধ্বংস, ফসলের ক্ষতি ও নিরাপদ পানির অভাবসহ মারাত্মক মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করছে। কোনভাবেই কলকারখানার অপরিশোধিত বর্জ্য পরিশোধন নিশ্চিত না করে কারখানার বাইরের এলাকায় যে কোন উপায়ে কিংবা কারখানার অভ্যন্তরে ভূগর্ভস্থ পানি দূষণ করতে পারে না, এটি দেশের প্রচলিত আইন ও বিধি ব্যবস্থার পরিপন্থী। তিনি বলেন, হবিগঞ্জের চলমান বেপরোয়া ও অপরিকল্পিত শিল্পায়ন এবং সম্ভাব্য পরিবেশ ও মানবিক বিপর্যয়ের কথা একাধিকবার আনুষ্ঠানিকভাবে দেশবাসীর সামনে তুলে ধরে পরিকল্পিত ও উৎসে বর্জ্য পরিশোধন ব্যবস্থা নিশ্চিত এর দাবি জানিয়ে আসছি আমরা। এ অঞ্চলের মাটি, পানি, বায়ু দূষণ থেকে বিরত রাখতে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল দপ্তরের কোন প্রক্রিয়া চোখে পড়ছে না। তিনি আরও বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণ আইনসহ দেশের প্রচলিত আইনসমুহ অমান্য করে কলকারখানাগুলো বেপরোয়া দূষণ চালিয়ে আসছে যা নদী সংশ্লিষ্ট গ্রামসমূহের বাসিন্দাদের সাংবিধানিক অধিকারের উপর প্রত্যক্ষ আঘাত। দীর্ঘদিনের দুষণ দৈনন্দিন জীবনে ব্যাপক বিপর্যয়ের পাশাপাশি উদ্বেগজনক মানবিক সংকটের সৃষ্টি করেছে। তাই অবিলম্বে দায়ী কলকারখানার মালিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা, সুতাং নদী পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনাসহ এলাকাবাসীর যথাযথ ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি। পরিদর্শনকালে আরো বক্তব্য দেন পরিবেশকর্মী অ্যাডভোকেট শিবলী খান, ডাঃ আলি আহসান চৌধুরী পিন্টু, আমিনুল ইসলাম, নদী পাড়ের বাসিন্দা মো. আলাউদ্দিন, শেখ মো. কামাল মিয়া, মানিক মিয়া প্রমুখ।


     এই বিভাগের আরো খবর