1. admin@wordpress.com : Adminroot :
  2. dailyhabiganj_shomoy@yahoo.com : Habiganj Shomoy : Habiganj Shomoy
  3. dailyhabiganjshomoy@gmail.com : shomoy2017 : দৈনিক হবিগঞ্জ সময়
October 8, 2025, 5:11 pm

পুরাতন খোয়াই নদী উদ্ধার ও শিল্পদূষণ প্রতিরোধ বিষয়ে সভা

Reporter
  • Updated শনিবার, এপ্রিল ২৩, ২০১৬
  • 674

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ বিশ^ ধরিত্রী দিবস’১৬ উপলক্ষে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনÑবাপা ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপারÑ এর যৌথ আয়োজনে এক পরামর্শক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকাল ১০ টায় হবিগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে “পুরাতন খোয়াই নদী পুনরুদ্ধার ও হবিগঞ্জের শিল্প দূষণ প্রতিরোধ” শীর্ষক পরামর্শক সভায় সভাপতিত্ব করেন বাপা হবিগঞ্জ শাখার সভাপতি অধ্যপক মোঃ ইকরামুল ওয়াদুদ সভা পরিচালনা করেন জেলা বাপা’র যুগ্মÑসম্পাদক সিদ্দিকী হারুন। সভায় সম্মাণিত অতিথি ছিলেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক ও বাপার যুগ্ম সম্পাদক শরীফ জামিল, বাপা হবিগঞ্জ শাখার সহÑসভাপতি অধ্যাপক মোঃ আবিদুর রহমান, হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এডভোকেট মনসুর উদ্দিন আহমেদ ইকবাল এবং বাপা সিলেট শাখার সাধারণ সম্পাদক ও সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার আবদুল করিম কিম। সভার শুরুতে পুরাতন খোয়াই ও হবিগঞ্জের শিল্পদূষণের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার ও বাপা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল। মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনায় তিনি বলেন, হবিগঞ্জ শহরবাসীকে বান-বন্যার কবল থেকে রক্ষা করার জন্য ’৭০ দশকের শেষে ৫ কিলোমিটার লুপ কাটিং করে খোয়াই নদীকে শহরের বাইরে প্রবাহিত করা হয়। থেকে যাওয়া অংশটুকুর নাম হয় পুরাতন খোয়াই নদী। যার গভীরতা ছিল ২৫-৪০ ফুট এবং প্রসস্থতা ছিল ২৫০-৩০০ ফুট। কিন্তু বর্তমানে পুরাতন খোয়াই অধিকাংশই দখল হয়ে গেছে। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল নদীটিকে অব্যাহতভাবে দখল করার কারণে এর শেষচিহ্ন মুছে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। ভূমি খেকুদের লুলুপদৃষ্টি দিনদিন নদীর অবশিষ্ট অংশটুকুও দখল ও দূষণ করছে। নদী তীরবর্তী বাসাবাড়ীর পয়:নিষ্কাশন ব্যবস্থা নদীর সঙ্গে যুক্ত। ফলে নদী সংশ্লিষ্ট মানুষের কাছে ব্যাপক দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে নদীটি। বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃস্টিতেই শহরে দেখা দেয় কৃত্রিম বন্যা। খোয়াই নদীর উপর এরকম অনাকাংকিত অন্যায় কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়, নদীটিকে পুনরুদ্ধার করা না হলে হবিগঞ্জে পরিবেশ বিপর্যয় ও মানবিক বিপর্যয়ও নেমে আসবে। শিল্পদূষণ প্রসঙ্গে মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনায় বলা হয়, গত ৫-৬ বছর ধরে মাধবপুর ও হবিগঞ্জে বিশাল এলাকাজুড়ের মাঝারী ও বড় আকারের শিল্পকারখানা গড়ে উঠেছে। কৃষি জমিতে শিল্প কারখানা অথবা অন্য কোন স্থাপনা নির্মাণ আইন বিরুদ্ধ হলেও রহস্যজনক কারণে সরকারের কাছ থেকে কোম্পানীগুলো অনুমোদন আদায় করে নিচ্ছে। এসব অপরিকল্পিত শিল্পকারখানার বর্জ্যে স্থানীয় গ্রামসমূহে মারাত্মক পরিবেশ দূষণ সৃষ্টি করছে এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত সমস্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ঐ অঞ্চলে কারখানার আশপাশে খাল, জলাশয় ও নদীতে শিল্পবর্জ্য নিক্ষেপের ফলে পানি হয়ে পড়েছে দুষিত। মারা যাচ্ছে হাঁসÑমোরগ ও গবাদীপশু। নদীÑজলাশয় হয়ে পড়েছে মৎস্যশূন্য। ধানের উৎপাদন কমে যাচ্ছে, মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে চর্মসহ মারাত্মক রোগব্যাধিতে। এই অঞ্চলে অন্যতম সুতাং নদীর পানি ইতিমধ্যেই কোম্পানীগুলোর নিক্ষেপ করা বর্জ্যে কালো ও দূষিত হয়ে পড়েছে। সুতাং নদী সংশ্লিষ্ট গ্রামবাসী নদীর পানি ব্যবহার করতে পারছে না। মাছের জন্য বিখ্যাত সুতাং নদীতে এখন আর মাছ পাওয়া যায় না। জেলেরা হয়ে পড়েছে কর্মহীন। তিনি বলেন, এই অঞ্চলে পরিবেশ বিমুখ শিল্পাঞ্চল দেশের উন্নয়ন নয় বরং ধ্বংস ডেকে আনছে। অপরিকল্পিত এই ধরণের শিল্পকারখানা গড়ে উঠার চলমান প্রক্রিয়া বন্ধ না হলে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি ও জনস্বাস্থ্য বিপর্যয়ের মুখোমুখি হবে। বাপার যুগ্ম সম্পাদক বলেন শরীফ জামিল বলেন, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা উভয় বিষয়েই দীর্ঘদিন যাবৎ আন্দোলন করে আসছে। বর্তমান অর্থমন্ত্রী ২০০৬ সালে হবিগঞ্জে খোয়াই নদী আন্দোলন শুরু করেছিলেন। তখনকার আশংকা পরবর্তীতে মানবিক বিপর্যয় থেকে গণÑআন্দোলনে রূপ লাভ করে। সাধারণ মানুষের স্বতর্স্পূত দাবির মুখে স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেন ও পুরাতন খোয়াই নদী পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। যার সাথে বাপা যুক্ত ছিল। তিনি পুরাতন খোয়াই নদী পুনরুদ্ধার করতে সচেষ্ট হবার জন্য সবাইকে আহবান জানান। অপরদিকে হবিগঞ্জের তিন ফসলি জমিতে অপরিনামদর্শী, অপরিকল্পিত ও অনিয়ন্ত্রিত শিল্পায়ন ও শিল্পদূষণের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট গ্রামবাসীকে আরো সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। তিনি আরো বলেন, কোনো কোনো কারখানা উৎসে বর্জ্য পরিশোধন ব্যবস্থা নিশ্চিত না করে অধিক মুনাফা লাভের জন্য কারখানা এলাকায় গর্ত করে বর্জ্য নিক্ষেপ করে যা ভূগর্ভ্যস্থ পানির স্তরকে মারাত্মকভাবে ঝুকির মধ্যে ফেলে দেয়। যা ভূ-উপরিস্থ দূষণের থেকেও মারাত্মক। তিনি এই শিল্পদূষণ প্রতিরোধে সরকারের পরিকল্পনা ও কর্মসূচি প্রকাশের দাবী জানান। পরামর্শক সভায় আলোচনায় অংশ নেন ব্যকসÑএর সাবেক সভাপতি আলাউদ্দিন আহমেদ, চুনারুঘাট সরকারী কলেজের ভাইসÑ প্রিন্সিপাল মোঃ হারুন মিয়া, হবিগঞ্জ এসোসিয়েশন ইউকে’র সহÑসভাপতি এম এ মুনিম চৌধুরী বুলবুল, বেলার সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়কারী এডভোকেট শাহিদা আক্তার, রোটারী ক্লাব অব হবিগঞ্জ সেন্ট্রাল এর প্রেসিডেন্ট তবারক আলী লস্কর, ছাতিয়াইন ইউপি চেয়ারম্যান খায়রুল হোসেন মনু, হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, মোঃ শামছু মিয়া, শাইনিং স্টার টিউটোরিয়াল হোমের চেয়ারম্যান সৈয়দ এবাদুল হাসান, প্রবাসী সৈয়দ জিয়াউল হাসান আসাদ, সাংবাদিক হাফিজুর রহমান নিয়ন, প্রভাষক তানসেন আমীন, শাহ আব্দুল কাইয়ূম, রোটারিয়ান মোহাম্মদ নোমান মিয়া, মোঃ জসিম উদ্দিন প্রমুখ।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2017 dailyhabiganjshomoy.Com
Developer By Zorex Zira
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.

Designed by: Sylhet Host BD