,

চোর -ডাকাত রোধে বাহুবলে এলাকাবাসীর কঠোর অবস্থান

সংবাদদাতা ॥ বাহুবল উপজেলার চন্দনিয়া বালিচাপড়া এলাকায় চোর-ডাকাত প্রতিরোধে এলাকাবাসী কঠোর অবস্থান গড়ে তুলেছেন। ওই এলাকায় গত তিন মাসে ডজনখানেক চুরি- ডাকাতির ঘটনা সংঘটিত হয়েছে বলে এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে। এদিকে গত, সোমবার রাত ১ টার দিকে বিদেশ ফেরত এক প্রবাসীর নোহা গাড়িতে ডাকাতির চেষ্টাকালে পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে বাচ্চু মিয়া (৩৫) নামের এক দূর্বৃত্তকে গ্রফতার করতে সক্ষম হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাহুবলের প্রবাসী অধুষিত চন্দনিয়া, বালিচাপড়া ও নোয়াবাদ সহ আশ পাশ এলাকায় আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে চুরি ডাকাতি। গত তিন মাসে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ চুরি ডাকাতির ঘটনা সংঘটিত হয়েছে ওই এলাকার। এতে এলাকাবাসীর মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ পরিস্থিতিতে চোর-ডাকাত প্রতিরোধে সামাজিক পদক্ষেপ গ্রহন করতে উদ্যোগী হন এলাকার নেতৃবৃন্দ সহ সর্বস্তরের মানুষ। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কয়েকটি সমাবেশের মাধ্যমে চোর ডাকাতদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের জানান দেন এলাকাবাসী। সর্বশেষ গত, ২৭ জুলাই বালিচাপড়া গ্রামে ইয়াকুত মিয়ার বাড়িতে অনুষ্ঠিত সমাবেশে চন্দনিয়া গ্রামের আরফান আলীর পুত্র জিতু মিয়া ও বালিচাপড়া গ্রামের সিরাজ মিয়ার পুত্র হোসেন মিয়া কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে আত্মসমর্পণ করে। এসময় আত্মসমর্পণকারী দুই ব্যক্তি তাদের অপর সহযোগীদের নাম ও পরিচয় সহস্রাধিক জনতার সামনে প্রকাশ করে পরবর্তীতে উপস্থিত সকলের মতামতের ভিত্তিতে চিহ্নিত চোরদের আগামী ৪ আগস্টের মধ্যে এলাকাবাসীর নিকট আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন উপস্থিত জনপ্রতিনিধি ও মুরুব্বিয়ান। চিহ্নিত চোরেরা হল, বালিচাপড়া গ্রামের মকছুদ আলীর পুত্র জফর ওরফে তোতা, সাজন মিয়ার পুত্র কুটি মিয়া, চন্দনিয়া গ্রামের আফতাব উদ্দিনের পুত্র সাজিদ মিয়া, মর্তুজ মিয়ার পুত্র আব্দুল আজিজ ও চন্দনিয়া গ্রামের আরজু মিয়ার পুত্র বাচ্চু মিয়া। চোর ডাকাত নির্মূলে সামাজিক সমাবেশে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রায় ৮ ঘন্টার মাথায় বাচ্চু প্রবাসীর গাড়িতে ডাকাতির চেষ্টা কালে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, বাহুবল সদর ইউপি চেয়ারম্যান আজমল হোসেন চৌধুরী, ইউপি সদস্য তাজুল ইসলাম, বাহুবল মডেল প্রেসক্লাব সভাপতি নুরুল ইসলাম নুর, সাবেক মেম্বার আব্দুস সালাম ও জৈন উদ্দিন, মুরব্বিদের মাঝে ছিলেন মোয়াজ্জেম হোসেন, ফারুক মিয়া, ছালেক মিয়া, সৈয়দ মিজানুর রহমান, উস্তার মিয়া, ভিংরাজ মিয়া, এখলাছ মিয়া, আব্দুল মালিক, লিল মিয়া, কামাল মিয়া, আলফি মিয়া, ইসলাম উদ্দিন, মানিক মিয়া, মোশাহিদ মিয়া, আলতা মিয়া, বাদ উল্লা, চাও মিয়া, দরবেশ আলী, রেনু মিয়া, আব্দুস সাত্তার, রিয়াজ উদ্দিন ও নুরুল আমিন। এলাকাবাসী জানান, বালিচাপড়া গ্রামের ওমান প্রাবাসী খতিব উল্লার বাড়িতে ঘরের দরজা ভেঙ্গে ডাকাতি সংঘটিত হয়। ডাকাতরা পরিবারের সকলকে বেধে মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। একইভাবে মিঠাপুর দুবাই প্রবাসী আব্দুল কাদিরের বাড়ি, বালিচাপড়ার ইউনুস আলীর বাড়ি ও চন্দনিয়া গ্রামের আমির হোসেনের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতরা লুটপাটের পাশাপাশি নারীদেরকে শ্লীলতাহানি করে। এ ডাকাতির পরপরই এলাকাবাসী কঠোর অবস্থান গড়ে তোলেন এবং আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।
এলাকাবাসীর আল্টিমেটামের ৮ ঘন্টার মাথায় চন্দনিয়া গ্রামের তাউছ মিয়ার প্রবাসী পুত্র আবিদ মিয়া ঢাকা থেকে নোহা গাড়ি যোগে বাড়ি ফেরার পথে খন্দকার বাড়ির সামনের রাস্তায় ডাকাতরা ব্যারিকেড দেয়। এসময় যাত্রীদের শোর চিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে আসলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে বাহুবল থানার এসআই ফোয়াদের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টহল দল তাৎক্ষণিক বাচ্চু মিয়াকে আটক করতে সক্ষম হয়।


     এই বিভাগের আরো খবর