,

আজ থেকে হবিগঞ্জ জেলা মোটর মালিক গ্রুপের সকল বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা

জুয়েল চৌধুরী ॥ আজ রবিবার থেকে হবিগঞ্জ জেলা মোটর মালিক গ্রুপের সকল বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। অপরদিকে জেলা সিএনজি মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ মোতাচ্ছিরুল ইসলাম শ্রেষ্ট চেয়ারম্যান হওয়ায় তাকে গণসংবর্ধনা দেয়া হবে। ফলে সংবর্ধনাকালীন সময় পর্যন্ত সিএনজি চলাচলও বন্ধ থাকবে। এতে করে সাধারণ মানুষ ও যাত্রীদেরকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এর আগে গত শুক্রবার হবিগঞ্জ মটর মালিক গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধ না হলে আজ রবিবার সকল গাড়ি জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত হয়। সকাল ১১টায় হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক, মাধবপুর, বাহুবল, নবীগঞ্জ ও লাখাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে সকল বাস তারা হস্তান্তর করে দেবেন। হস্তান্তর করার জন্য সকল বাস, মিনিবাস কোচ নিয়ে যাওয়া হবে ডিসি অফিস ও ইউএনও অফিসের সামনে। ফলে বাস চলাচল বন্ধ থাকবে। এদিকে আজ রবিবার একই সময়ে জেলা সিএনজি মালিক সমিতির পক্ষ থেকে শায়েস্তানগর সিএনজি স্ট্যান্ডে সংগঠনের সভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোতাচ্ছিরুল ইসলামকে গণসংবর্ধনা উপলক্ষে সিএনজি চলাচল বন্ধ থাকবে। সচেতন মহল জানিয়েছেন, জেলার বৃহৎ সংগঠন মোটর মালিক গ্রুপের আওতাধীন সকল যান বন্ধ থাকলে উপজেলা থেকে অফিস আদালতে আগত যাত্রীদের পোহাতে হবে চরম দূর্ভোগ, গুনতে হবে দ্বিগুন ভাড়া।
প্রসঙ্গত, ২৮ নভেম্বরের মধ্যে হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন সড়ক মহাসড়কে অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধ না হলে সকল সড়কেই বাস চলাচল স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়ার হুশিয়ারি দিয়েছিল হবিগঞ্জ মটর মালিক গ্রুপ, জেলা বাস, মিনিবাস কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন সমন্বয় পরিষদের নেতৃবৃন্দ। ১৮ নভেম্বর হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তারা এ হুশিয়ারি দেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ ফজলুর রহমান চৌধুরী বলেন, হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন সড়ক মহাসড়কে অবৈধ গণপরিবহন চলাচল করছে। এমনকি হাইকোর্টের নির্দেশনা অমান্য করে মহাসড়কে সিএনজি অটোরিক্সাও দেদারছে চলছে। এসব পরিবহন বন্ধের জন্য দীর্ঘদিন ধরে আমরা দাবি জানিয়ে আসছি। বিভিন্ন সময় বাস চলাচল বন্ধ করে কর্মবিরতি পালন করেছি। এ সময় প্রশাসনের কর্মকর্তারা অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলেও কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। অবৈধ যানবাহনের কারণে দিনের পর দিন মোটা অংকের লোকসান গুণতে হচ্ছে বৈধ পরিবহনগুলোকে। অনেক পরিবহন এখন দেউলিয়া হওয়ার পথে। পাশাপাশি অবৈধ পরিবহনগুলোর বেপরোয়া চলাচলের কারণে প্রাণ দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। কিন্তু এরপরও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। বাস শ্রমিকরা এ ব্যাপারে প্রতিবাদ করলে মারধরের শিকার হতে হয়। সর্বশেষ গত ১৪ অক্টোবর তারা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। কিন্তু এরপরও কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা না নেয়ার কারণে ২০ অক্টোবর বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়। এ সময় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার তাদের আশ্বস্ত করেন ১ নভেম্বর থেকে অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া শুরু হবে। কিন্তু কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় বাধ্য হয়ে তাদেরকে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। এবিষয়ে হবিগঞ্জ জেলা ট্রাফিক ইন্সপেক্টর হিমাংশু দাশ জানান, ইতোমধ্যে পুলিশ শহরসহ জেলার বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে ৩ থেকে ৪শ অবৈধ সিএনজি , ইজিবাইক আটক করে মামলা দিয়েছে। অভিযান অব্যাহত আছে। অপরদিকে মোটর মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক শঙ্খ শুভ্র রায় বলেন, পুলিশ আমাদের দাবি অনুযায়ী এখনও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। এ ছাড়া হাইওয়েতে এখনও সিএনজি চলাচল করছে। সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ রবিবার সকাল ১১টায় সকল বাস, মিনিবাস জেলা প্রশাসকসহ ইউএনওদের নিকট হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। দাবি না মানলে আন্দোলন চলবে। এদিকে জেলা সিএনজি মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ মোতাচ্ছিরুল ইসলাম জানান, মালিক সমিতির পক্ষ থেকে আজ রবিবার ১১টার সময় শ্রেষ্ট চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে। ফলে সংবর্ধনাকালীন সিএনজি বন্ধ থাকবে এবং পরবর্তীতে সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।


     এই বিভাগের আরো খবর