,

বার বার বদলি ঠেকিয়ে রয়েছেন নবীগঞ্জে! নবীগঞ্জ এলজিইডি অফিসের হাসানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়রমর অভিযোগ

কিবরিয়া চৌধুরী : নবীগঞ্জ এলজিইডি অফিসের কার্য সহকারী মোহাম্মদ হাসানের ঠিকাদারি ব্যবসা দুর্নীতির চরমে। অফিসের কর্মকর্তাদের যোগসাজসে কাজ হাতিয়ে নেওয়া, একজন সরকারি কর্মচারী ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার কারণে এখন স্থানীয়দের মুখে মুখে তার নামই আসছে নবীগঞ্জ এলজিইডি অফিসে। ২০১৩ সালে মাঝামাঝি সময়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের নবীগঞ্জ উপজেলা এলজিইডি কার্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগে যোগ দেন মোহাম্মদ হাসান। এরপর শুরু তার হয় দুর্নীতির নতুন অধ্যায়। যোগ দেয়ার পরে ধীরে ধীরে তিনি সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন স্থানীয় ঠিকাদার ও এলাকার লোকজনের সঙ্গে। একে একে তাদের অনেকেই আটকে যান তার প্রতারণার ফাঁদে। সাধারণ ঠিকাদারদের অভিযোগ, জেলা সহ নবীগঞ্জ সদর ও উপজেলায় কোনো ঠিকাদার কাজ বিক্রি করতে চাইলে সেটি মোহাম্মদ হাসানকে দেয়া এক প্রকার অলিখিত বিধান। ঠিকাদারি ব্যবসার কারণে তিনি সাধারণ ঠিকাদারদের প্রতিপক্ষ করছেন। কোনো কোনো সময় যদি তিনি কাজ না পান, তখনই তার রোষানলে পড়েন কাজ পাওয়া ঠিকাদার।
জানাযায়, স্থানীয় সরকার অধিদফতর থেকে বার বার বদলির আদেশ আসলেও নির্দেশ মানছেন না নবীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশল (এলজিইডি) অফিসের কার্যসহকারী মোহাম্মদ হাসান! নতুন কর্মস্থলে যোগ না দিয়ে নানা তদবিরে বদলির আদেশ ঠেকিয়ে রয়েছেন পুরনো কর্মস্থলে। তিনি একাধারে প্রায় ০৯ বছর ধরে রয়েছেন নবীগঞ্জে। ফলে তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক অনিয়ম দুনীর্তীর অভিযোগ। ০৯ বছর ধরে দায়িত্ব পালন কালে তিনি জড়িয়ে পড়েন ঠিকাদারি ব্যবসায় এমন অভিযোগ স্থানীয় লোকজনের ও ঠিকাদারদের। বর্তমানেও অন্য ঠিকাদারের নাম নিয়ে মোহাম্মদ হাসান উপজেলায় বেশ কয়েকটি কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। একাধিক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে নিজে ও তার সিন্ডিকেটের লোকজনকে দিয়ে নামমাত্র কাজ করে অধিকাংশ টাকা আত্মসাত করাও অভিযোগ রয়েছে। এই সিন্ডিকেটের মূলহোতা সহ তার সহযোগীদের এ অনিয়ম, ঘুষ বাণিজ্য, কমিশন বাণিজ্য এবং দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত পূর্বক কঠোর ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী স্থানীয় ঠিকাদাররা।
এদিকে, গত ১৬ আগষ্ট স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌলী খন্দকার মোঃ আব্দুল্লাহ আদ্ দাদ্ স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে মোহাম্মদ হাসানকে বদলির আদেশ দেওয়া হয় সিলেট জেলার বিশ্বনাথে। পরদিন ১৭ আগষ্ট আবারও উপরোক্ত আদেশ বাতিল করে বদলি দেখিয়ে নতুন কর্মস্থল সিলেটের বালাগঞ্জে দেওয়া হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই অফিসের এক কর্মকর্তা জানান, এবারও তিনি বদলি ঠেকাতে বিভিন্নভাবে অযৌক্তিক চাপ সৃষ্টি করে অফিসের শৃংখলা ভঙ্গ করছেন। তিনি আরো বলেন, লক্ষ্য করা যাচ্ছে, বদলিকৃত কর্মচারীর বদলির আদেশ এক পূর্বে এলেও প্রদানকৃত কর্মস্থলে যোগদান না করে আদেশ পরিবর্তন, বদলানো, সংশোধন ও বাতিলের জন্য বিভিন্ন মহল হতে তদবির করে প্রশাসনিক জটিলতা সৃষ্টি করছেন, যা সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা পরিপন্থী। এর আগেও ২০১৯ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী তার বদলী এসেছিল।
২০২১-২২ অর্থ বছরে রাজস্ব খাতের ২০ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার কাজ পেয়েছে বশির এন্টার প্রাইজ। এ বিষয়ে বশির এন্টার প্রাইজের স্বত্বাধীকারী বশির মিয়া জানান, উপজেলা পৌকশলী (এলজিইডি)র অফিসের কার্যসহকারী মোঃ হাসান ২০২১-২২ অর্থ বছরে রাজস্ব খাতে ২০ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার কাজ কিনার জন্য লাখে ৮% দিবেন বলে জানান। আমি কাজ বিক্রি করতে না চাইলে লাখে ৯% দিবেন বলে কাজ নিতে উঠেপরে লেগেযান। তিনি বলেন এরকম অনেক কাজ কিনে দিচ্ছে ঠিকাদারদের কাছ থেকে। তবে কাজ গুলো কার জন্য কিনে নেন তা তিনি জানেন না।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী সাব্বির আহমেদ এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা তিনি এর সত্যতা স্বীকার করেন এবং কার্য সহকারী মোহাম্মদ হাসানের ঠিকাদারি ব্যবসা ও নানান অনিয়মের দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলার ঠিকাদার সমিতির সভাপতি মোস্তাক আহমদ মিলু বলেন, সরকারি কর্মকর্তার বদলির বা অনিয়ম দুর্নীতি যদি করে থাকেন সেটা তার উর্ধতন কর্মকর্তাদের বিষয়।
এসব অনিয়মরোধ এবং অধিদফতরের কাজে শৃংখলা আনতে অবিলম্বে বদলিকৃত মোহাম্মদ হাসানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে দাবী করেন স্থানীয় লোকজনসহ ঠিকাদার গন।


     এই বিভাগের আরো খবর