,

সিলেটে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে করোনা

সময় ডেস্ক : সিলেটে করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। হু হু করে বেড়ে চলছে আক্রান্তের সংখ্যা। মাত্র দুই মাস পাঁচ দিনেই সিলেট জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা চার অঙ্কের কোটা পাড়ি দিয়েছে। প্রথম ৫০০ শনাক্ত হয়েছিল ৫৬ দিনে। আর শেষ ৫০০ শনাক্ত হয়েছে মাত্র ১০ দিনে। আর চার অঙ্কে প্রবেশের পর এই সংখ্যা বাড়ছে প্রবল গতীতে।

সিলেট বিভাগে এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৬১ জন। এর মধ্যে সিলেট জেলায় আক্রান্ত রয়েছেন ১ হাজার ২৩৭ জন। গত বুধবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সিলেট বিভাগে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ৯৭ জন। এর মধ্যে শুধু সিলেট জেলায় আক্রান্ত ৭৪ জন। এর আগের দিন সিলেট জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৭৫ জন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণের এই ভয়াবহতা ঠেকাতে এখনই কারফিউর মতো কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে একদম প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত যেভাবে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে তা কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে না। সিলেটে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ৫ এপ্রিল। শুরুতে সংক্রমণের তীব্রতা ছিল অনেক কম। সংক্রমণের হার দেখে ঈদের আগ পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই ছিল বলে দাবি করেছিলেন সংশ্লিষ্টরা। এজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের তাগিদ দেওয়া হয়। কিন্তু ঈদের আগে লকডাউন শিথিল করা হলে সিলেটের পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়। বিভিন্ন উপজেলা থেকে মানুষ শহরে কেনাকাটা করতে আসেন। গণপরিবহন চালু হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থাও স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। এই সুযোগে সিলেটের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। যে কারণে করোনা সংক্রমণের গ্রাফ এখন ঊর্ধ্বমুখী।
করোনা সংক্রমণের ভয়াবহতা প্রসঙ্গে সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডা. মোর্শেদ আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘সিলেটে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। রাস্তায় বের হওয়া মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য কারফিউর মতো কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ছাড়া পুনরায় আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু হলেও সিলেট-লন্ডন ফ্লাইট চালু না করাই উত্তম হবে। এই ফ্লাইট চালু হলে সিলেটের অবস্থার আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য অফিসের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান বলেন, ‘গত তিন মাস ধরে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা চলছে। কিন্তু কোনোভাবেই তাদের স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করানো সম্ভব হচ্ছে না। রাস্তাঘাটে মানুষ মাস্ক ছাড়া ঘোরাফেরা করছে। বিনা প্রয়োজনে রাস্তায় বের হয়ে আড্ডা দিচ্ছে, ঘোরাঘুরি করছে। এ অবস্থায় আইনের আরও কঠোর বাস্তবায়ন ছাড়া কোনোভাবেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব নয়।’


     এই বিভাগের আরো খবর