,

হবিগঞ্জে মুন জেনারেল হাসপাতাল থেকে এক ভুয়া চিকিৎসক গ্রেফতার

জুয়েল চৌধুরী ॥ হবিগঞ্জে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এদের অধিকাংশই স্বাস্থ্য বিভাগ ও যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই নিজেদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যেখানে ভুল চিকিৎসায় প্রায়ই ঘটছে রোগী মৃত্যুর ঘটনা। শহরবাসীর ভাষ্য, অনুমোদনহীন এসব হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিকরা সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে খেলা করছে। গতকাল বুধবার বিকেলে হবিগঞ্জ জেলা শহরের শায়েস্তানগর এলাকায় মুন জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তার মাসুদ করিমকে আটক করে ভুয়া ডাক্তার প্রামানিত হওয়ায় তাকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত। ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামসুদ্দিন মোঃ রেজা এ রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডাঃ মোঃ মাসুদ করিম। তিনি রংপুর জেলার সদর উপজেলাধীন রাধা বল্বব গ্রামের মৃত আব্দুস শুকুরের পুত্র। হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের আরএমও ডাঃ মোমিন উদ্দিন চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মুন জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদানরত ভুয়া ডাক্তারকে হাতেনাতে আটক করা হয়। এ সময় তার সকল কাগজপত্র পর্যবেক্ষণে ভুয়া চিকিৎসকের সত্যতা পাওয়া যায় এবং অভিযুক্ত ব্যক্তি দোষ স্বীকার করেন। জানা যায়, হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে রোগীর চাপ তেমন একটা চোখে না পড়লেও হবিগঞ্জের আনাচে কানাচে গড়ে উঠা ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারগুলোতে ঠিকই রোগীর চাপ বাড়ছে। এসব বেশিরভাগ ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক এসব ক্লিনিকের শতকরা ৮০ ভাগেরই বৈধ লাইসেন্স নেই; নেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, নার্সসহ আসবাবপত্র। আবার অধিকাংশ ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিকের চিকিৎসা সেবা চলছে ভূয়া চিকিৎসক দিয়ে। অনেক ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক‘ সেন্টারে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা রোগীদের সব ধরনের অপারেশন করা হয়’ এমন সাইন বোর্ড টাঙানো রয়েছে। ইদানীং ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিকগুলো বৈধ কাগজের জন্য আবেদন করলেও তাদের প্রতারণা থেমে নেই। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চূড়ান্ত অনুমোদন (লাইসেন্স) ছাড়া কোনো বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নার্সিং হোম, প্যাথলজি ও ডেন্টাল ক্লিনিকের কার্যক্রম শুরু করা যাবে না বলে নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু এরপরও কোনোপ্রকার অনুমোদন ছাড়াই চলছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। শুধু কার্যক্রম শুরুর জন্য প্রাথমিক আবেদন করে প্রতিষ্ঠান খুলে চিকিৎসা কার্যক্রম চালাচ্ছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। যা সম্পূর্ণ অবৈধ ও বেআইনি। এদিকে আবার বেশকিছু হাসপাতাল ও ক্লিনিক চলছে ভুয়া চিকিৎসক এবং নার্স দিয়ে। অবৈধ এসব হাসপাতালে চলে ‘সর্বরোগের চিকিৎসা’। এছাড়া বেসরকারি অধিকাংশ হাসপাতালের পরিবেশও রীতিমতো চমকে ওঠার মতো। দুর্গন্ধ ও ময়লা-আবর্জনায় ভরা অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে চলে চিকিৎসা কার্যক্রম। অবৈধ এসব চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে সাধারণ ও জটিল রোগ নিয়ে আসা রোগীরা প্রতিনিয়ত প্রতারিত হলেও প্রতিষ্ঠানের মালিকসহ সংশ্লিষ্টরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় প্রতিবাদ করতে সাহস পান না কেউ।


     এই বিভাগের আরো খবর