,

হবিগঞ্জে মায়ের পরকিয়া প্রেমের বলি অবুঝ শিশু

জুয়েল চৌধুরী ॥ হবিগঞ্জ সদর উপজেলার চারিনাও গ্রামে পরকিয়া প্রেমের বলি হলো এক অবুঝ সন্তান এবং অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে দুই শিশু। এ ঘটনার রহস্য উন্মোচন এক বছর সদর থানা পুলিশ উদঘাটন করেছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তৌহিদুল ইসলামের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি প্রদান করে হত্যার শিকার শিশুর পাষণ্ড মা ফাহিমা খাতুন (২৮)। এ ঘটনায় গতকাল রাতে সংবাদ সম্মেলন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম। আদালতের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ওই গ্রামের টমটম চালক সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী ফাহিমা তার স্বামী অভাব অনটনের কারণে প্রাণ কোম্পানীতে চাকরি করতো। ফাহিমার স্বামীর অভাব অনটনের সাংসারিক জীবনের দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে সে পাশের বাড়ির বিত্তশালী আক্তারের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে। তাদের এ অবৈধ সম্পর্ককে বাস্তবে রূপ দিতে গিয়ে তারা দেখে যে তাদের পথের কাটা হচ্ছে ৩ সন্তান। তাই আক্তার ও ফাহিমা মিলে ৩ সন্তানকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০১৯ সালের ১৭ অক্টোবর পরকিয়া প্রেমিক আক্তার বিষ কিনে এনে ফাহিমাকে দেয়। পরের দিন শুক্রবার দুপুরে সেই বিষ ফাহিমা জুসের সাথে মিশিয়ে তার তিন অবুঝ শিশুকে খাইয়ে দেয়। বিষক্রিয়া তারা ছটফট করতে থাকলে ওই দিন সন্ধ্যায় সদর হাসপাতালে নিয়ে এলে তার ৩য় সন্তান সাথী আক্তার (৬) কে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। অপর দুই শিশু সন্তান তোফাজ্জল ইসলাম (১০) ও রবিউল ইসলাম (৭) কে সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সৌভাগ্যক্রমে ওই দুই শিশু প্রাণে বেঁেচ যায়। এরপর তারা সকলেই স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে থাকে। এদিকে কিছুদিন যাবার পর আক্তার হোসেন ও ফাহিমার প্রেমের সম্পর্কটি এলাকায় প্রকাশ হতে থাকে। বিষয়টি নিয়ে কানাঘুষা শুরু হয়। এতে ফাহিমার স্বামীর সন্দেহ বাড়তে থাকলে সে নিশ্চিত হয় ফাহিমা ও আক্তার মিলিতভাবেই তার শিশু সন্তানকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় সিরাজ বাদি হয়ে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা হলে সদর ওসি ফাহিমাকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিলে সে প্রাথমিকভাবে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে। সেই অনুযায়ী গতকাল তার স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি নেয়া হয় এবং আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সদর থানার ওসি মাসুক আলী ও অন্যান্য কর্মকর্তাগণ।


     এই বিভাগের আরো খবর