,

জোড়া লাগানো দুই শিশুকে লালন পালন করতে হিমশিম খাচ্ছেন বাবা

জুয়েল চৌধুরী ॥ কাওসার ও ফাহিমা। একই মায়ের দুই যমজ সন্তান। প্রায় ৮ বছর আগে মাত্র কিছু সময়ের ব্যবধানে দুইজনই দরিদ্র রিকশা চালকের ঘর আলো করে আসে। কিন্তু বিধিবাম। জন্ম থেকেই শিশু দুইটির পা জোড়া অবস্থায় জন্ম নেয়। এরপর থেকেই এই দুই শিশুর লালন পালন নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়েন রিকশা চালক সেলিম ও তার স্ত্রী। বর্তমানে তাদের বয়স ৮ বছর হলেও পা দুইটি জোড়া লাগানো অবস্থায় এখনও রয়েছে। টাকার অভাবে জন্মের এতোদিন পার হয়ে গেলেও অস্ত্রোপচার করা যায়নি তাদের। এ কারণে দুই ভাই বোনকে সারাক্ষণই একসঙ্গে থাকতে হচ্ছে। এরই মাঝে জন্মের কয়েক বছরের মাথায় মারা যায় তাদের মা আকলিমা বেগম। মা মারা যাবার পর থেকে আরও বিপাকে পড়েন রিকশা চালক সেলিম। গতকাল শনিবার দুপুর ১২টার দিকে শায়েস্তাগঞ্জ রেল স্টেশনে এ প্রতিনিধির কাছে অর্থাভাবে সন্তানদের চিকিৎসা করাতে না পেরে নিজের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয় নগর উপজেলার পাহাড়পুরের গ্রামের বাসিন্দা সেলিম মিয়া আগে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু জোড়া লাগানো দুই শিশুকে লালন পালন করতে গিয়ে তিনি এখন আর রিক্সা নিয়ে বের হতে পারেন না। আদরের দুই সন্তানকে নিয়েই জীবন জীবিকার তাগিদে তাকে ছুটতে হয় বিভিন্ন মাজারে ওরসে। লোকজনের কাছ থেকে সাহায্য সহযোগিতা যা পান তা দিয়েই নিজের পাশাপাশি দুই সন্তানের ভরণ পোষণ করেন। তিনি জানান, ছেলে মেয়ে দুইটির পায়ের পাতা লাগানো। ফলে অস্ত্রোপচার করে তাদের আলাদা করা জরুরি হয়ে পড়েছে। চিকিৎসার বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ নিতে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে জেনে এসেছেন যে এর জন্য প্রচুর টাকার প্রয়োজন। তিনি বলেন, চিকিৎসকরা বলেছেন, সঠিকভাবে অস্ত্রোপচার করাতে পারলে, তাদের আলাদা করা যাবে। কিন্তু তার জন্য তো অনেক টাকার প্রয়োজন, যা আমার কাছে নেই। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এ চিকিৎসায় খরচ হবে কয়েক লক্ষ টাকা। এত টাকা পাবো কোথায়? কাওসার ও ফাহিমার ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন সেলিম মিয়া। তারা তাদের সন্তানদের সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা চেয়েছেন।


     এই বিভাগের আরো খবর