,

Exif_JPEG_420

প্রভাবশালীদের দখলে হবিগঞ্জ শহরের পুরাতন খোয়াই নদী :: ময়লা আর্বজনার স্তুপে পরিবেশ নষ্ট

জুয়েল চৌধুরী : হবিগঞ্জ শহরের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী পুরাতন খোয়াই নদী এখন প্রভাবশালীদের দখলে। মাছুলিয়া থেকে হরিপুর পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার পুরাতন খোয়াই নদীটি দখল করে প্রভাবশালীরা ৪ তলা ৫ তলা ভবন নির্মাণ করেছে। ফলে প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় শহরে। প্রশাসন বারবার জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করলেও এসব অবৈধ দখলের কারণে তার সুফল মিলছেনা।

অভিযোগ রয়েছে, শহরে পানি নিষ্কাষনের ড্রেন দখল করে এসব অট্টালিকা ভবন নির্মাণ করার ফলেই প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়ে জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে। তৎকালীন জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান অভিযান চালিয়ে অনন্তপুর, শ্যামলী, পুরান মুন্সেফী, হরিপুর, স্টাফ কোয়ার্টার, সিনেমা হল, মুসলিম কোয়ার্টারসহ বিভিন্ন এলাকায় পুরাতন খোয়াই নদীর ওপর ভবন উচ্ছেদ করলেও তিনি চলে যাওয়ার পর এসব উচ্ছেদকৃত জায়গায় আবারও প্রভাবশালীরা বাসা নির্মাণ করে বসবাস শুরু করেছেন। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পুরাতন খোয়াই নদী ভরাট করার জন্য প্রভাবশালী মহল ময়লা আর্বজনার স্তুুপ করে রেখেছে।

দুর্গন্ধের কারণে চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে। এসব অবৈধ স্থাপনায় কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে প্রভাবশালীরা বিদ্যুত সংযোগ ও গ্যাসসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন। যদি এখনই এসব অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে পুরাতন খোয়াই নদী উদ্ধার না করায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে। যেমন অবৈধ দখলদারের কারণে ঠিকমতো টিউবওয়েলের পানি উঠছে না। পানি নিষ্কাষনের রাস্তা বন্ধ হয়ে পড়েছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিতেই বিভিন্ন রাস্তাঘাটে হাটু থেকে কোমরপানি পর্যন্ত জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এতে করে রাস্তা ভেঙ্গে খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। যার ফলে সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। রাস্তা মেরামতের ১ বছরের মাথায়ই পানি জমে থাকার কারণে ভেঙ্গে যায়। গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শহরের সিনেমাহল ঝিলপাড়, শ্যামলীসহ বিভিন্ন এলাকায় বড় বড় দালান নির্মাণ হয়েছে। এ ছাড়া সিনেমাহল ও শ্যামলী যাওয়ার মধ্য রাস্তায় জনৈক ব্যক্তি রাস্তার পাড়ের খোয়াই নদী দখল করে বাউন্ডারী নির্মাণ করেছেন। আর এই জায়গায় সিনেমা হল বাজারসহ আশেপাশের এলাকায় ময়লার স্তুপ জমে আছে। অনেকেই নাকে রুমাল দিয়ে চলছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের হবিগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তোফাজ্জল সোহেল জানান, দীর্ঘদিন ধরে পুরাতন খোয়াই নদী দখলদারের কবল থেকে উদ্ধারের জন্য তারা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের আন্দোলনের ফলে জেলা প্রশাসন উচ্ছেদ করলেও আবারও তারা দখল করে নিচ্ছেন। করোনাকালীন সময়ে তাদের আন্দোলন বন্ধ ছিলো। আবারও তারা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের বিষয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। এ ছাড়া এসব অবৈধ দখলের ফলে পরিবেশ বিপর্যস্ত হচ্ছে।


     এই বিভাগের আরো খবর