,

শহরে অবৈধ টমটমের কারণে যানজট সৃষ্টি

জুয়েল চৌধুরী : হবিগঞ্জে অবৈধভাবে চলছে ৪ থেকে ৫ হাজার টমটম। আর পৌরসভা থেকে পার্কিং অনুমতি নিয়ে বৈধভাবে চলছে মাত্র ১২শ’। ছোট এ শহরে অবৈধ টমটমের কারণে প্রতিনিয়ত অসহনীয় যানজট তৈরি হচ্ছে। এসব টমটম দৈনিক বিদ্যুৎ খাচ্ছে মোট বরাদ্দের ১০ শতাংশ। জানা যায়, শহরে প্রচুর অবৈধ টমটমের জন্য যানজট সৃষ্টি হয়। এগুলোর জন্যই মানুষের ভোগান্তি হয়। আমরা সংসদ সদস্য ও জেলা প্রশাসকের সঙ্গে পরামর্শ করেছি। শহরের বাইরে থেকে যে অবৈধ টমটম এবং ব্যাটারিচালিত রিকশা আসছে তাদের প্রবেশ বন্ধ করতে হবে। ‘একটি সীমিত সংখ্যক চলার অনুমতি দিয়ে যাতে শহরে মানুষের চলাচলে অসুবিধা না হয় সে বিষয়ে আমরা পুলিশ, ট্রাফিক বিভাগসহ সকলের সঙ্গে সমন্বয় করে যানজট নিরসনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’ এদিকে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন সরদার বলেন, প্রতিদিন পিডিবির বিদ্যুৎ প্রয়োজন সাড়ে ১৫ মেগাওয়াট। কিন্তু এখন মিলছে ৮ মেগাওয়াট। এর মধ্যে পিডিবির অধীন অনুমোদিত যে টমটম (বৈদ্যুতিক ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক) গ্যারেজ রয়েছে তাতে বিদ্যুৎ খরচ হয় প্রায় ৭ শ কিলোওয়াট। হবিগঞ্জের বিশিষ্ট নাগরিক সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. সৈয়দ সায়েম উদ্দিন বলেন, আমাদের এ শহরটি এক সময় খুবই পরিচ্ছন্ন ছিল। যানজট আমরা চিন্তাও করতে পারিনি। কিন্তু যখন টমটম এসেছে তখন থেকেই যানজট শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, এমনিতেই আমাদের শহরের রাস্তাগুলো ছোট। তাছাড়া বিদ্যুতের কিছুটা ক্রাইসিসও চলছে। এগুলো অনেক শহরেই এখন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যেখানে আছে সেখানেও গ্যাসে চলছে। এখানেও যদি গ্যাসে চলতো তাহলে বিদ্যুতের সমস্যা হত না। আবার শুধু যেগুলো বৈধ হিসেবে পৌরসভা থেকে অনুমতি নিয়েছে সেগুলো রেখে যদি বাকিগুলো অভিযান চালিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় তাহলে যানজট অন্তত কিছু কমবে। হবিগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বর্তমান বৈদ্যুতিক সংকটের সময় হবিগঞ্জে পিডিবির অধীন এলাকায় দৈনিক বিদ্যুতের প্রয়োজন সাড়ে ১৫ মেগাওয়াট। কিন্তু দৈনিক মিলছে ৮ মেগাওয়াট। তা দিয়েই সমন্বয় করে চলছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এর মধ্যে পিডিবির অধীন এলাকায় টমটম গ্যারেজ রয়েছে ৩৫টি। এগুলোতে বিদ্যুৎ ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে ৭শ’ কিলোওয়াট। তবে বাস্তবে আরও অনেক বেশি থাকলেও যেগুলো অবৈধ তার হিসেব নেই বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে। সেগুলোতে কী পরিমাণ বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে তারও কোনো হিসাব নেই। পৌরসভার দেওয়া তথ্য ও সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, হবিগঞ্জ পৌর শহরে মোট ১২শ টমটমের বৈধ পার্কিং অনুমতি রয়েছে। এগুলোর কাছ থেকে নম্বর প্লেট ও পার্কিং অনুমতি বাবদ বছরে ৮ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে চলছে প্রায় ৬ হাজার। অবৈধ এসব টমটম বন্ধের বিষয়ে বিভিন্ন সময় আইনশৃংখলা কমিটির সভায়ও আলোচনা হয়। এরপর মাঝে মাঝে দু’একটি অভিযান চালানোর পর অদৃশ্য কারণে ফের তা বন্ধ হয়ে যায়। অবৈধ এসব টমটমের কারণে শহরের প্রধান দু’টি রাস্তায় মারাত্মক যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনাও ঘটে। টমটম চালক শহরতলীর পশ্চিম ভাদৈ গ্রামের মোহাম্মদ আলী ও ধুলিয়াখালের নওশাদ মিয়া জানান, শহরে ১২শ’ টমটম চলাচলের জন্য পৌরসভা অনুমতি দিয়েছে। এজন্য বছরে ফি নেয় ৮ হাজার টাকা। আর নতুন করে কাউকে এটি দেওয়া হচ্ছে না। যেগুলো দেওয়া হয়েছে তা কয়েক বছর আগেই দেওয়া হয়েছে। শুধু এগুলো যদি চলে তাহলে কোনো যানজট সৃষ্টি হবে না। তারা বলেন, অবৈধ টমটমে শহর ভরে গেছে। মাসে একবার যদি অভিযান চালানো হয় তাহলে আর যানজট থাকবে না। অবৈধগুলোও শহর থেকে চলে যাবে।


     এই বিভাগের আরো খবর