,

হঠাৎ উত্তপ্ত হবিগঞ্জ শহর আতংকে যান চলাচল বন্ধ

সুন্নি ও শিয়াপন্থিদের মাঝে মতপার্থক্য নিয়ে সংঘর্ষ

জুয়েল চৌধুরী : হবিগঞ্জ শহরে শিয়া ও সুন্নীদের বাহাসের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে শহর। গতকাল শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে দুই পক্ষের মাঝে বাহাস অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। দুই পক্ষই তাদের প্রতিনিধি নিয়ে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে যান। তবে উভয়পক্ষের সাথেই প্রতিনিধি ছাড়াও বিপুল সংখ্যক অনুসারী মিছিল নিয়ে আসে। ফলে বাহাসে বসা হয়নি। এ নিয়ে দুই পক্ষের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ তাদেরকে কার্যালয়ের এলাকা থেকে বের করে দেয়। পরে তারা সড়কে এসে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় লিপ্ত হয়। এতে ৫ জন আহত হয় এবং ২নং পুল এলাকার হবিগঞ্জ-শায়েস্তাগঞ্জ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। তবে এ ঘটনায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। শিয়া ও সুন্নি অনুসারীদের মাঝে আবারও যে কোনো সময় সংঘর্ষের আশংকা করা হচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আমিরে মুয়াবিয়াকে মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর সাহাবি মানা না মানা নিয়ে দু’পরে মধ্যে কিছুদিন আগে চুনারুঘাট উপজেলার লালচান্দ বাগানে উভয়পক্ষ একই সাথে মাহফিলের আয়োজন করে। এতে প্রশাসন বাধা দিলে তারা পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হন। গতকাল শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে বাহাস হওয়ার কথা ছিল।
সুন্নিদের পক্ষে নেতৃত্বে ছিলেন হবিগঞ্জ দারুসুন্নাহ কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ফারুক মিয়া, সিরাজনগর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ শিব্বির আহমদ ও মুফতি মাওলানা গিয়াস উদ্দিন আত-তাহেরী। তাদের দাবি, আমিরে মুয়াবিয়া মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর সাহাবি ছিলেন।
শিয়াদের পক্ষে নেতৃত্বে ছিলেন চুনারুঘাট উপজেলার শানখলা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল আওয়াল ও সদর উপজেলার নিজামপুর ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার কনু মিয়া। তারা এ দাবির বিরুদ্ধে ছিলেন। বাহাসে উভয়পরে ৫ জন করে মোট ১০জন অংশ নেয়ার কথা। কিন্তু উভয়পক্ষই হবিগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা থেকে বিপুলসংখ্যক লোক সমাগম করেন এবং নিজেদের পক্ষে শ্লোগান দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে উভয়পক্ষে হট্টগোল সৃষ্টি হলে উল্লেখিত বিষয় নিয়ে বাহাস হয়নি। তখন উভয়পক্ষ বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন এবং লাঠিসোটা নিয়ে হাতাহাতি হয়। এ সময় ওই সড়কে যানবাহন চলাচল ও দোকান পাট বন্ধ হয়ে যায়। আতংকে স্থানীয়রা দিকবিদিক ছুটাছুটি শুরু করেন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।
এ বিষয়ে সদর থানার ওসি গোলাম মর্তুজা জানান, পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নতুবা ভয়ানক সংঘর্ষ ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতো।


     এই বিভাগের আরো খবর