,

টানা বৃষ্টিতে পানি ঢুকেছে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে

সময় ডেস্ক : দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে সিলেট নগরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। নগরের বিভিন্ন রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি আর দোকানে পানি জমে যাওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। গতকাল শনিবার সকাল পর্যন্ত অর্ধশতাধিক এলাকায় জলাবদ্ধতা আছে। এদিকে পানিতে তলিয়ে গেছে সিলেটের এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বর ও নিচতলা। ফলে রোগী, তাদের স্বজন ও হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে সেবা কার্যক্রম।
শনিবার সকালে এই হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে যাওয়া এক রোগীর আত্মীয়ের সাথে কথা বলে জানা যায়, সকালেই পানি হাসপাতাল ভবনে প্রবেশ করে। সময় বাড়ার সাথে সাথে ক্রমশ পানিও বাড়তে শুরু করে। এতে করে হাসপাতালের সেবাদান কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে বলে জানান ওই ব্যক্তি।
হাসপাতালের চিকিৎসক অরূপ রাউত জানান, ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের এবং সকল ছাত্রাবাসের নিচতলা অবধি পানি উঠে গেছে। হাসপাতালের সামনের সড়কও জলের নিচে। হাঁটু পানি ভেঙেই চিকিৎসকরা হাসপাতালে এসেছেন।
এদিকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছাড়াও সিলেটের রেলওয়ে স্টেশনসহ গুরুত্বপূর্ণ সেবাদানকারী আরও অনেক প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে ও বাহিরের সড়কে পানি জমে ব্যাহত হচ্ছে সেবা। এছাড়া নগরের উপশহর, মির্জাজাঙ্গাল, তালতলা, কাজলশাহ, শেখঘাট, বনকলাপাড়া, কালীঘাট, পীরমহল্লা, সেনপাড়া, আদিত্যপাড়া, কেওয়াপাড়া, পায়রা, দরগাগেট, চৌহাট্টা, মেজরটিলা প্যারাগন আবাসিক এলাকার রাস্তাঘাট ও বাসায় পানি ঢুকেছে। গোড়ালি থেকে হাঁটুসমান পানি জমেছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্রধানত তিনটি কারণে নগরে অল্প সময়ের বৃষ্টিতেই এখন জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে। এগুলো হচ্ছে নগরের ছড়াগুলোয় (প্রাকৃতিক খাল) অপরিকল্পিত উন্নয়নকাজ, অনেক ড্রেনের উন্নয়নকাজ ধীরগতিতে চলায় পানি চলাচলের স্বাভাবিক গতিপথ রুদ্ধ হয়ে পড়া এবং ছড়া-নর্দমার তলদেশে প্লাস্টিকসহ বিভিন্ন বর্জ্যে ভরাট হয়ে থাকা। এর বাইরে শহরের বুক চিরে প্রবাহিত সুরমা নদীর নাব্যতা হারানোও জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ বলে তারা মনে করেন।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম চৌধুরী কিম বলেন, গত বছরও সিলেট নগর পানির নিচে তলিয়ে যায়। সে সময়ে উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিকে দায়ী করা গেলেও এখন এক রাতের ভারী বৃষ্টিতে সিলেট নগরের অধিকাংশ এলাকা জলমগ্ন। এক বছরে পরিস্থিতির কোনো উন্নয়ন হয়নি। এ জন্য দায়ী খেয়ালখুশির উন্নয়ন। এ উন্নয়নে নগর সম্প্রসারণের নামে হাওর-বিল ভরাট করা, ছড়া রক্ষার অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করে পানিপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান বলেন, ভারী বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। বৃষ্টি কমলে পানি নেমে যাবে। ড্রেন-নালা পরিষ্কার রাখতে সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি নগরবাসীকেও সচেতন হতে হবে। এছাড়া সুরমা নদী খনন করানো জরুরি।
এদিকে সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যবেক্ষক মাহমুদুল হাসান সোহেল সকাল পৌনে আটটার দিকে বলেন, শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে আজ শনিবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫৭ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। আর শনিবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ১০২ মিলিমিটার। এটা অতিভারী বৃষ্টি বলেও জানান তিনি।


     এই বিভাগের আরো খবর