,

ভুয়া পরিচয়ে পাসপোর্ট করতে এসে রোহিঙ্গা তরুণীসহ দালাল মাহি আটক

ইউপি চেয়ারম্যান ছালিক মিয়ার স্বাক্ষর জাল করে ভূয়া জন্মনিবন্ধন তৈরী

জুয়েল চৌধুরী : হবিগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে ভুয়া পরিচয়ে পাসপোর্ট করতে এসে রুবিনা আক্তার রোকেয়া (১৮) নামের এক রোহিঙ্গা তরুণীসহ দালাল আমানুর রশীদ মাহি (২২) আটক করা হয়েছে। গতকাল রবিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। রুবিনা আক্তার ওরফে রোকেয়া কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা। দালাল মাহি রাজনগর এলাকার হারুন মিয়ার পুত্র এবং পুরাতন পৌরসভা রোডের ট্যাভেলস এজেন্সির মালিক।
হবিগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক মো. বজলুর রশিদ বলেন, রোকেয়া পাসপোর্ট জমা দিতে সকাল ১০টায় আমাদের কাছে আসে। এ সময় সন্দেহ হলে তাকে ফিরিয়ে দেই। পরবর্তীতে আমানুর রশীদ মাহি জোরপূর্বক জমা দিতে গেলে সন্দেহ আরও বাড়ে। পরে বিষয়টি যাচাই বাছাই করে জানতে পারি ওই মেয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা। বিষয়টি তাৎক্ষনিক জেলা প্রশাসকের জানালে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সদর থানা পুলিশ এসে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে মাহি সত্যতা স্বীকার করে।
জানা যায়, রোহিঙ্গা যুবতী রোকেয়া বেগম তার আবেদনে নবীগঞ্জ উপজেলার ৪নং দীঘলবাগ ইউনিয়নের বাসিন্দা মর্মে একটি জন্মনিবন্ধন সনদ দাখিল করে। যাতে দেখা যায়, ০৪-০৬-২০২১ইং তারিখে চেয়ারম্যান ছালিক মিয়ার স্বাক্ষর করা। কিন্তু এ বিষয়ে চেয়ারম্যান ছালিক মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ২০২২ সানের ফেব্রুয়ারিতে আমি যোগদান করি। এটা আমার স্বাক্ষরিত কোনো জন্মনিবন্ধন নয়।
এ ছাড়া আবেদনের সাথে সংযুক্ত পিতার জাতীয় পরিচয়পত্রে নবীগঞ্জ উপজেলার দেওতৈল এ কে হীরাগঞ্জের নজিম উল্লার পুত্র মোঃ নাজমুল হোসেন চৌধুরী ও শেখ উম্মে সেলিনা শিবু নামের এক নারীর আইডি কার্ডের ফটোকপি সংযুক্ত করা হয়। এগুলো ভূয়া বলে জানা গেছে।
জানা যায়, হবিগঞ্জ আঞ্চলিক ওই পাসপোর্ট অফিসে মাহিসহ কতিপয় দালাল প্রায়ই প্রভাব খাটিয়ে পাসপোর্টের আবেদন জমা দেয়। ইতোপূর্বেও তাদেরকে পুলিশ ও জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে নিষেধ করা হয়েছে যাতে মাহিসহ অন্য দালালরা অফিসে না ঢুকে। এরপরও তারা এ নিষেধ উপেক্ষা করে বরাবরের মতোই অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের সহযোগিতা করছে কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা, কর্মচারী ও নামধারী সাংবাদিক। তারা দিনের বেলা হাতে সিকু পাইপ ঘড়ি, জিন্স প্যান্ট পড়ে বিভিন্ন প্রাইভেটকার ও মোটর সাইকেলযোগে ভূইপোড় অনলাইন পত্রিকা, টিভির স্টিকার ব্যবহার করে প্রশাসনের চোখ আড়াল করার জন্য দালালির সাথে জড়িয়ে পড়ে। পুলিশ জানায়, উক্ত মাহির নেপথ্যে কারা রয়েছে তাদেরকেও রিমাণ্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে রহস্য উন্মোচন করা হবে। ওসি (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় পাসপোর্ট অফিসের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। আজ সোমবার মাহিকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। এ ছাড়া আটক রোহিঙ্গা নারীকে তার ক্যাম্পে পাঠানো হবে।


     এই বিভাগের আরো খবর