,

“আমরা ফেল করলেও পাস, পাশ করলেও পাস” :: জাপা নেতার বেফাঁস বক্তব্যে তোলপাড়

জাবেদ তালুকদার : ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টির সমঝোতার ২৬টি নির্বাচনী এলাকায় ‘সিলেট বিভাগে ১৯টি আসনের মধ্যে হবিগঞ্জ-১ আসনটি হচ্ছে আমাদের। শেখ হাসিনা জাতীয় পার্টির সঙ্গে আঁতাত করে এ আসন থেকে নৌকার প্রার্থীকে তুলে নিয়েছেন। এই আসনটি হচ্ছে আমাদের। তাই আপনারা মনে রাখবেন আমরা (লাঙ্গল প্রতীক) ফেল করলেও পাস, পাস করলেও পাস। দেশের প্রেক্ষাপট কী হবে সেটি আপনাদের বুঝার দরকার নেই।’ জাপা প্রার্থী এম এ মুনিম চৌধুরী বাবুর সমর্থনে দেয়া রহস্যে ঘেরা ওই বক্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এনিয়ে নির্বাচনী এলাকার (নবীগঞ্জ-বাহুবল) সাধারণ ভোটারদের মধ্যে গুজবের ঢেউ উঠেছে। আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। দাপুটে ওই বক্তব্যে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। আলোচিত ওই নেতা হলেন হবিগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম সম্পাদক ডা. এমদাদুল হক সবুজ। গত শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) জুমার নামাজের আগে বাহুবল উপজেলার মীরপুর ইউনিয়নের লাকরীপাড়া মসজিদে তিনি মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি আরও বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী কেয়া চৌধুরী (ঈগল মার্কা) তো আওয়ামী লীগেরই। তাকে কেন ভোট দেবেন। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হয়েছে তা বিশ্বকে দেখানোর জন্য, শেখ হাসিনা একজন ডামি প্রার্থী দিয়ে রেখেছেন। মুনিম চৌধুরী বাবু এমনিতেই পাশ’।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে প্রকাশ, জাতীয় পার্টি নেতা ডা. এমদাদুল হক সবুজের এ বক্তব্য ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। গুজব সংবলিত বক্তব্য প্রদানের ৩ দিন পেরিয়ে গেলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল।
হেলাল মিয়া নামের জনৈক ভোটার বলেন, এ ধরনের বক্তব্য সাধারণ ভোটারদের বিভ্রান্ত করছে। সুষ্ঠ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। আরেক ভোটার মৃনাল কান্তি রায় মিনু বলেন, সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এবং নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য যারা এ ধরনের অপপ্রচার করে তাদের বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে হবে।
এনিয়ে বাহুবল উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফরিদ মিয়া তালুকদার বলেন, “নবীগঞ্জ-বাহুবলের জনসাধারণ কেয়া চৌধুরীকে ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছে। ঈগলের প্রচারণায় স্বতস্ফুর্ত জনস্রোত দেখে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মুনিম বাবু ও তার সমর্থক নেতাকর্মীদের মাথা নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণে তারা “লাঙ্গল পাস করলেও পাস, ফেল করলেও পাস” বলে বেফাঁস বক্তব্য প্রচার করছে। গুজব রটিয়ে যারা জনগণকে ভোট উৎসবে নিরুৎসাহিত করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তিনি।”
ভাইরাল বক্তব্যে অভিযুক্ত হবিগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম সম্পাদক ও বাহুবল উপজেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. এমদাদুল হক সবুজ বলেন, “কথাটা আমার স্লীপ হয়ে গেছে। আমি আমার গ্রামের মানুষদের বুঝাতে চেয়েছিলাম মুনিম বাবু পাশ করলেও আপনাদের পাশে থাকবেন, ফেল করলেও আপনাদের পাশে থাকবেন। কথাটা সবাই অন্যভাবে গ্রহণ করেছেন”।
সার্বিক বিষয়ে নির্বাচনী এলাকার বাহুবল উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা তাহমিলুর রহামান বলেন, নির্বাচনী ষড়যন্ত্র ও গুজব নিয়ে প্রশাসন সচেতন রয়েছে। আলোচিত বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, এনিয়ে জুডিশিয়াল তদন্ত চলছে।


     এই বিভাগের আরো খবর