,

হবিগঞ্জের বিভিন্ন নদীতে চর নৌ চলাচল ও সেচ ব্যাহত

ডেস্ক রিপোর্ট : হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন নদ-নদীতে পানি প্রবাহ হ্রাস এবং অব্যাহত চর পড়ায় স্বাভাবিক নৌ-চলাচল ও সেচ কার্য ব্যাহত হচ্ছে। খোয়াই, করাঙ্গী, সুতাং, সোনাই, ভেড়ামোহনা, সুটকী, রত্না, বিজনা ও কুশিয়ারা নদীতে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ না থাকায় মালবাহী বড় বড় নৌকা ও লঞ্চ চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের ত্রিপুরা থেকে বয়ে আসা খরশ্রোতা খোয়াই নদীর পানির সাথে প্রচুর পলিমাটি আসায় নদীর গভীরতা পূর্বের ২০ ফুটের স্থলে বর্তমানে ১১ থেকে ১৪ ফুটে দাঁড়িয়েছে। ১৫০ ফুট প্রশস্ত এই নদীতে স্বাভাবিক পানি প্রবাহ ৫ হাজার থেকে ৮ হাজার কিউসেক। বর্ষাকালে তা দ্বিগুণ এবং শীতকালে ১০০ কিউসেকে বা আরো কমে দাঁড়ায়।
চুনারুঘাট উপজেলার বাল্লা সীমান্ত থেকে ২৫ কিলোমিটার উজানে ভারতের চাকমাঘাট নামকস্থানে নির্মিত বাঁধের মাধ্যমে খোয়াই নদীর পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করার ফলে নদীতে পানির প্রবাহ অস্বাভাবিকভাবে কমে গেছে। এছাড়া, অপরাপর নদীগুলোতে শুষ্ক মৌসুমে নানা কারণে পানির প্রবাহ মারাত্মক ভাবে হ্রাস পেয়েছে।
ফলে জেলার ভাটি অঞ্চলে নৌ চলাচল ব্যাহত হওয়া ছাড়াও বোরো ধান চাষাবাদে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। বানিয়াচং উপজেলার মার্কুলী বাজারের পূর্ব দিকে কুশিয়ারা ও বিবিয়ানা নদীর সংযোগ স্থলে চর পড়ায় বর্ষাকালেও স্বাভাবিক নৌ চলাচল ব্যাহত হয়। মার্কুলী থেকে হিলাল নগর পর্যন্ত স্থানে নদীতে চর পড়ে নদীর পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। আজমিরীগঞ্জ থেকে শেরপুর পর্যন্ত বিস্তীর্ণ নদী পথের বিভিন্ন স্থানে চর পড়ায় যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচলেও বিঘ্ন ঘটছে।
জেলার ভাটি অঞ্চলে বিশেষ করে বানিয়াচং, আজমিরীগঞ্জ, লাখাই ও নবীগঞ্জ উপজেলার ব্যবসা বাণিজ্য অনেকটাই স্বাভাবিক নৌ-চলাচলের উপর বহুলাংশে নির্ভরশীল। নদীগুলোতে পানি প্রবাহ হ্রাস পেয়ে নৌ-চলাচল ব্যাহত হওয়ায় ব্যবসায়ীদের মালামাল পরিবহন ব্যয়ও অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।
হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ জানান, জেলার নদীগুলোর নাব্যতা ও পানি ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে সেচ সুবিধা ও নৌ যোগাযোগ অব্যাহত রাখার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড ড্রেজিং সহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। চলতি মৌসুমে সোনাই, করাঙ্গী, খাসটি এবং বিজনা নদী আংশিকভাবে এক্সকেভেটর ও ড্রেজার দিয়ে পুনঃ খনন করা হয়েছে। এছাড়া কুশিয়ারা নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণের কাজ অব্যাহত রয়েছে।
তিনি জানান, খোয়াই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ, ড্রেজিং এবং বাঁধ পুনরাকৃতিকরণ সহ একটি বড় পরিকল্পনার প্রস্তাবনা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞ দল কর্তৃক প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


     এই বিভাগের আরো খবর