,

ঈদকে সামনে রেখে কেনাকাটা জমজমাট :: শহরে দীর্ঘ যানজট

জুয়েল চৌধুরী : ঈদকে সামনে রেখে একেবারে শেষ সময়ে এসে জমজমাট হয়ে উঠেছে কাপড় কেনাবেচার বাজার। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে বেচাবিক্রি। তাই হবিগঞ্জ শহরের প্রতিটি বিপণি কেন্দ্র এখন ক্রেতাদের পদচারণায় মুখর। এদিকে শত শত ব্যটারি চালিত অটোরিকশা ও টমটমের কারণে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তিনকোনা পুকুড়পাড় থেকে চৌধুরী বাজার পর্যন্ত যানজট লেগে রয়েছে। শায়েস্তানগর থেকে চৌধুরী বাজার ১৫ মিনিটের রাস্তায় ২ ঘন্টায়ও পার হওয়া যায় না। অপরদিকে সাইলেন্সার খোলে দ্রুতগতিতে উঠতি বয়সী যুবকদের মোটর সাইকেল চালাতে দেখা গেছে। এতে করে বৃদ্ধ, শিশুসহ হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীদের মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। শহরবাসীর অভিযোগ বারবার প্রশাসনকে বলার পরও এসব মোটর সাইকেলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় তাদের উপদ্রব বেড়েছে।
এ ছাড়া শেষ মুহুর্তে হবিগঞ্জে জমে উঠেছে কেনাকাটা। ব্যবসায়ীরাও ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে বাহারি ডিজাইনের পোশাক সাজিয়ে রেখেছেন দোকানগুলোতে। বেচাকেনাও হচ্ছে বেশ। তবে দাম নিয়ে সন্তষ্ট হতে পাড়ছেন না ক্রেতারা। ক্রেতারা বলছেন, গতবারের চেয়ে দাম কিছুটা বেশি। আর বিক্রেতারা বলছেন, ভালো জামা কাপড়ের দাম তো কিছুটা বেশি থাকবেই।
সরেজমিন শহরের ঘাটিয়া বাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, দিনের বেলায় নারী ক্রেতারা তেমন নেই। তবে ইফতারের পর থেকেই যেন মার্কেটগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন তারা। প্রতিটি মার্কেটের ভেতরে যেন পা ফেলার ঠাঁই নেই ক্রেতাদের জন্য। আর একের পর এক জামা-কাপড় দোখাতে দেখাতে হাঁপিয়ে উঠছেন বিক্রেতারা।
শুধু ঘাটিয়া বাজার এলাকাই নয়, এমন চিত্র এখন শহরের বিভিন্ন স্পটে। শহরের বাণিজ্যিক এলাকা, তিনকোনা পুকুরপাড়, চৌধুরী বাজারসহ প্রতিটি স্পটেই বিক্রি হচ্ছে ধুমধাম। এর মধ্যে এসডি স্টোর, এসডি প্লাজা, এমবি প্লাজা, মধুমিতা ও খাজা গার্ডেন সিটি, আশরাফ জাহান ও তিনকোনা পুকুর পাড় এলাকায় বেশি ক্রেতা সমাগম লক্ষ করা গেছে।
এবারের ঈদ কালেকশনে নারী ক্রেতাদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে কাঞ্জিবরণ, মুসলিম জামদানি, অরগেঞ্জাসহ বেশ কয়েকটি শাড়ি। এসব শাড়ি ৫ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া তরুণীদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে সারারা, শায়রা, আলিয়াকাট ও পাকিস্তানি জামা। এসব জামা বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। আর শিশুদের পছন্দে রয়েছে আলিয়াকাট ও আগবান জামা, যা ১২০০ থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। তবে আলিয়াকাট জামা এবার তরুণীদের প্রথম পছন্দের চাহিদা রয়েছে। এ ছাড়াও শাড়ি, লুঙ্গি, থ্রি-পিস, ওড়না, গজ কাপড়সহ কোনো কিছুরই কমতি নেই দোকানগুলোতে।
ক্রেতারা বলছেন, এবারের ঈদ কালেকশনের জামা কাপড়গুলো গতবারের তুলনায় দাম কিছুটা বেশি। দোকানিরা পছন্দের জামা কাপড়গুলো বেশি দাম হাকাচ্ছেন। দাম বেশি হলেও সামনে যেহেতু ঈদ, তাই অনেকেই বেশি দাম দিয়েই তাদের পছন্দের জামা-পোশাক ক্রয় করছেন।
তারা বলছেন, কাপড়ের বাজারে যদি জেলা প্রশাসনের মনিটরিং থাকতো, তাহলে হয়তো বাজার দাম আরও নিয়ন্ত্রণে থাকত।
ব্যবসায়ী আরিফ আহমেদ বলেন, গত দুই বছরের চেয়ে এবার ভালো কেনাবেচা হচ্ছে। আরো যে কয়দিন আছে, আশা করছি ভাল বিক্রি হবে। এসডি স্টোরের ম্যানেজার বিশ্বজিৎ রায় বলেন, আগের থেকে এখন কেনা বেচা বেড়েছে। আগামী যে কয়েকদিন আছে, কেনাবেচা আরও বাড়তে পারে।
পুলিশ সুপার মো. আক্তার হোসেন বলেন, ঈদকে সামনে রেখে যাতে করে আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকে, সেজন্য মাঠে রয়েছে পুলিশ বাহিনী। পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দারাও মাঠে রয়েছে। ঈদ বাজার যাতে করে নির্বিঘ্নে মানুষ করতে পারে, সে জন্য পুলিশি টহলের পাশাপাশি বড় বড় বিপণি বিতানগুলোর সামনে পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে।


     এই বিভাগের আরো খবর