March 22, 2025, 6:35 pm

নবীগঞ্জে ২ সন্তানসহ গৃহবধূর মৃত্যু নিয়ে ধুম্রজাল ॥ স্বামী গ্রেফতার হত্যা না আত্মহত্যা…?

সাইফুল জাহান চৌধুরী/রাকিল হোসেন ॥ গতকাল রবিবার সকালে পুলিশ নবীগঞ্জের বড় ভাকৈর ইউনিয়নের ফরিদ মিয়ার স্ত্রী রুমেনা খাতুন (৩০) কে গাছের ঢালের সাথে ঝুলন্ত ও ছেলে মুসা মিয়া (৭), কন্যা মুসলিমা খাতুন (৫) এর মৃত দেহ পুকুরে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। রুমেনা বেগম ছেলে মেয়েদের পানিতে ঢুবিয়ে নিজে পুকুর পাড়ের জামরুল গাছের ঢালের গলায় ওড়না পেছিয়ে আত্মহত্যা করেছে নাকি পারিবারিক কলহের জেরধরে স্বামী ফরিদ মিয়া স্ত্রী পূত্রকন্যাকে নির্মমভাবে খুন করেছে এ প্রশ্ন এলাকার মানুষের মূখে মূখে নানা ভাবে ঘুরপাক খাচ্ছে। পুলিশ ফরিদ মিয়াকে থানা হাজতে আটক করেছে। হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহিদুল ইসলামসহ উর্ধ্বতন পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। লাশ ৩টি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্যে হবিগঞ্জ মর্গে পাঠানো হয়েছে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার রাতে খাওয়া দাওয়া করে ফরিদ মিয়া ও তার স্ত্রী সন্তানরা অন্যান্য দিনের মতো ঘুমিয়ে পরেন। রাত অনুমান ৩টার দিকে ফরিদ মিয়া দেখেন তার স্ত্রী ও সন্তানরা তার পাশে নেই। দুই সন্তান ও স্ত্রীকে পাশে না পেয়ে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন ফরিদ মিয়া। এক পর্যায়ে তিনি বাড়ির পাশে পুকুর পারে একটি জারুল গাছে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় তার স্ত্রীর ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখতে পান। তারপর পাশেই বাড়ির পুকুরে দুই সন্তানের মৃতদেহ পানিতে ভাসতে দেখেন তিনি। এসময় তার সুর চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। এদিকে রুমেনার স্বামী ফরিদের দাবি, রুমেনা মানসিক রোগে আক্রান্ত ছিলেন। রাতে তিনি ঘুমিয়ে পড়ার পর সন্তানদের পুকুরে ফেলে নিজেও আত্মহত্যা করেন বলে দাবী করেন ফরিদ মিয়া। অপর দিকে রুমেনার বাবা উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের মামদপুর গ্রামের মাসুক মিয়া জানান, দীর্ঘ দিন ধরে তাদের দাম্পত্য কলহ চলে আসছিল। প্রায় ২মাস আগে দাম্পত্য কলহের জের ধরে রুমেনা ও তার দুই সন্তান নিয়ে বাবার বাড়ি আটক ছিল। এক পর্যায়ে শালিসে মিমাংসার মাধ্যমে স্বামীর বাড়ি ফিরে আসে। রুমেনার বাবা ও তাদের আত্মীয় স্বজনদের দাবী রুমেনার স্বামী ফরিদ মিয়া তাদেরকে হত্যা করে আত্মহত্যার নাটক তৈরী করেছে। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনর্চাজ লিয়াকত আলী জানান, প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা যাচ্ছে ফরিদ মিয়াগং রুমেনা ও সন্তানদের হত্যা করেছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। নিহতের ভাই শাহীন মিয়া জানান, ভোর ৫টার দিকে মৃত রুমেনার দেবর ফোনে তাদের জানায়, ফরিদ মিয়া তার স্ত্রী রুমেনা ও দু’ সন্তানকে হত্যা করেছে। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকদের নিয়ে ঘটনাস্থল বোনের বাড়ি ভাকৈর গ্রামে ছুটে আসি। এ সময় বোনের মৃতদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় এবং দু’অবুঝ সন্তানের মৃতদেহ ঘরের ভিতরে পড়ে থাকতে দেখি। পানিতে ভিজানোর কোন আলামত পাওয়া যায়নি বলেও দাবী শাহীনের। শাহীন বলেন, তার বোন ও সন্তানদের স্বামী ফরিদ উদ্দিন ও তার পরিবারের লোকজন হত্যা করেছে। তারা এ ঘটনার সুষ্ট তদন্তসহ ঘাঁতকদের ফাঁসি দাবী করেছেন। এব্যপারে নিহত গৃহবধূ রুমেনার চাচা আশোক মিয়া বাদি হয়ে রুমেনার স্বামী ফরিদ মিয়া প্রধান আসামী করে ছয়জনের বিরুদ্ধে নবীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন বলে জানা গেছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরো খবর
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.