March 18, 2025, 11:04 pm

বাহুবলে চালককে হত্যার পর লাশ ফেলে গাড়ি নিয়ে পালায় দুর্বৃত্তরা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাহুবল উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে গাড়ি চালক মোশারফ হোসেন হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ওই হত্যাকান্ডের মূলহোতা শামীমকে আদালতে ১০দিনের রিমান্ড আবেদন করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম। তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার বিজ্ঞ আদালতে শামীমের রিমান্ড প্রার্থনা করেন। এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ পরিদর্শক মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম এর নেতৃত্বে পিবিআইয়ে একটি বিশেষ টিম অভিযান চালিয়ে ঢাকার হাজারীবাগ এলাকা থেকে মো. শামীম ফকির (৩৫) কে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অপরাধে আটক করা হয়। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওইদিন রাতে বরিশালের উজিরপুর এলাকা থেকে সালাউদ্দিন মীর মিলন (২৯)কেও আটক করা হয়। পুলিশ পরিদর্শক মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম জানান, চাঞ্চল্যকর মোশারফ হোসেন হত্যা মামলাটি দায়ের করার পর বাহুবল থানা পুলিশ প্রায় ২মাস তদন্ত করেন। কিন্তু এর কোন অগ্রগতি না হওয়ায় মামলাটির তদন্ত বার দেয়া হয় পিবিআইকে। পিবিআই মামলাটি তদন্ত করার জন্য আমাকে দায়িত্ব প্রদান করেন। এ প্রেক্ষিতে আমি ৭/৮ মাস মামলাটি গুরুত্বের সহিত তদন্ত করি এবং আসামীদের সনাক্ত করে ঢাকাসহ রবিশাল জেলা থেকে যথাক্রমে ঘটনায় জড়িত আসামী শামীম (৩৫), সালা উদ্দিন মীর মিলন (২৯) গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। এদিকে গত বুধবার সন্ধ্যায় গ্রেফতারকৃত হত্যাকান্ডের অন্যতম আসামী সালাউদ্দিন মীর মিলন হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান উদ্দিন প্রধানের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিতে ঘটনার বর্ণনা করে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন হবিগঞ্জ পিবিআইর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিয়া কুতুবুর রহমান চৌধুরী। সাংবাদিকদের কাছে আসামী মিলনের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে তিনি জানান, ২০১৮ সালের ২৭ মে ঢাকা থেকে ইউনিক গাড়িতে করে সিলেটে এসে জাফলং যাওয়ার জন্য মোশারফ নামে এক গাড়ি চালকের প্রাইভেট কার ভাড়া নেয় তিন দুর্বৃত্ত। সেখানে ঘুরে তারা সিলেট শহরে ফিরে আসে। পরে সিলেটের রোজবিউ হোটেল থেকে ভিয়ার কিনে এর সাথে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে কৌশলে গাড়ি চালক মোশারফকে পান করিয়ে অচেতন করে। আসামী শামীম চালক মোশারফকে গাড়ির চাবি নিয়ে নিজেই প্রাইভেট কার চালিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। পথে বাহুবল উপজেলার রুপশংকর এলাকায় চালককে গলায় গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর মহাসড়কের পাশে লাশ ফেলে প্রাইভেট কার নিয়ে চলে যায়। গাড়ি নিয়ে যাওয়ার সময় নরসিংদী এলাকায় পুলিশ চেক পোস্টের ভয়ে গাড়ি রেখে হত্যাকারীরা পালিয়ে যায়। এদিকে বাহুবল থানা পুলিশ ২০১৮ সালের ২৮ মে লাশ উদ্ধার করলে স্থানীয় গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিহত মোশারফের পরিবার দেখতে পেয়ে বাহুবল থানায় এসে লাশ সনাক্ত করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় গাড়ির মালিক কামাল আহমেদ বাদি হয়ে অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় সোহেল নামের আরেক আসামী পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের জন্য পিবিআই’এর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। উল্লেখ্য পিবিআইয়ের চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম ইতো-মধ্যে মাধবপুরে আলোচিত শাহনাজ হত্যা মামলা ও হবিগঞ্জ শহরের বহু আলোচিত ব্যবসায়ী গৌরাঙ্গ চৌধুরী হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন এবং আসামীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরো খবর
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.