,

চুনারুঘাটে আবারো খোয়াই নদী থেকে মাটি ও বালু লুট

স্টাফ রিপোর্টার : হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে খোয়াই নদীর ভাঙন আতঙ্ক কাটতে না কাটতেই আবারও শুরু হয়েছে বালু-মাটিখেকোদের তান্ডব। নদীর ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে দেদারছে চলছে বালু উত্তোলন। এছাড়াও এক্সেভেটর মেশিন দিয়ে খোয়াই নদীর চর কেটে বিক্রি করা হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকার মাটি।
বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন অমান্য করে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বালু-মাটি উত্তোলন ও বিক্রি করছে একটি চক্র। এছাড়াও ইজারাবহির্ভূত স্থান থেকেও বিক্রি করা হচ্ছে বালু-মাটি। এসব বালু পরিবহনে ব্যবহার করা হচ্ছে অবৈধ ট্রাক্টর।
বালু ও মাটিবাহী ট্রাক্টর নদীর তীরে নেয়ার জন্য নির্বিচারে কাটা হচ্ছে প্রতিরক্ষা বাঁধ। ঝুঁকিপূর্ণ এসব বাঁধ মেরামত না করে উল্টো বাধের উপর দিয়ে বালু-মাটি বাহী ট্রাক্টর চলাচল করায় ঝুকি বাড়ছে দিন দিন। এ নিয়ে সচেতন মহলে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ।
সরেজমিনে দেখা যায়, চুনারুঘাট উপজেলার করিমপুর ও রামশ্রী এলাকার একাধিক স্থানে বিকট শব্দে চলছে ড্রেজার মেশিন। নদী গর্ভের বালু উত্তোলন করায় ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে তীরে। এছাড়াও করিমপুর ও কোট আন্দর এলাকা থেকে এক্সাভেটর দিয়ে চর কেটে নেওয়া হচ্ছে মাটি।
স্থানীয়রা জানান, গত আগস্টে ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে বাঁধ ভাঙার উপক্রম হয় করিমপুর ও রামশ্রী এলাকার দুটি পয়েন্টে। ভাঙ্গন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত্রি যাপন করেন তারা। এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে বালুভর্তী বস্তা ফেলে কোনরকম ভাঙন থেকে রক্ষা পান সেসময় । এই আতঙ্ক কাটার আগেই আবারো বালু উত্তোলন এবং মাটি পরিবহন শুরু হওয়ায় চরম হতাশায় ভুগছেন তারা।
করিমপুর এলাকার নুর উদ্দিন, রুবেল মিয়া ও সোহেল মিয়া নামে কয়েকজন জানান, খোয়াই নদীর এই অংশটি ঝুঁকিপূর্ন হওয়ায় এলাকাবাসী একাধিকবার বালু উত্তোলন করতে নিষেধ করলেও বালুখেকোরা প্রভাবশালী হওয়ায় তা মানছেন না। উল্টো ভয় দেখানো হয় হামলা-মামলার। একাধিকবার প্রশাসন ঘটনাস্থলে আসলেও কার্যকর কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় এখন পর্যন্ত তারা বালুমাটি কেটে বিক্রি করেই যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খোয়াই নদীর উবাহাটা অংশটি জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে বালু মহাল হিসেবে ইজারা নিয়েছেন সোহেল মিয়া নামে এক ব্যক্তি। তার নেতৃত্বেই ইজারার শর্ত ভঙ্গ করে অবাধে বালু উত্তোলন ও মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। এমনকি বাহুবল উপজেলার কোটা আন্দর নামক এলাকাটি উবাহাটা মহালের বাহিরে হলে সেই জায়গা থেকেও তিনি ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন এবং এক্সেভেটর দিয়ে মাটি কেটে বিক্রি করছেন।
তার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এই মহালটি দীর্ঘদিন কেউ ইজারা নেয়নি, এই বছর আমি এনে লসে আছি। আমি গত কয়েকদিন যাবত এলাকায় ছিলাম না, আমি খোঁজ নিয়েছি আমাদের কেউ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করেনি।
একই বিষয়ে চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার আয়েশা আক্তার বলেন, গত সপ্তাহে আমরা ওই স্থানে অভিযান করেছি কিন্তু কাউকে পাইনি। যারা অবৈধভাবে বালু-মাটি উত্তোলন করতেছে তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরো খবর
×

Like us on Facebook

Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.