,

গাছের সাথে বেঁধে শিশু নির্যাতনের ঘটনায় আটক ৩ ॥ মুছলেকায় মুক্তি

মতিউর রহমান মুন্না ॥ নবীগঞ্জের পল্লীতে বিস্কুট চুরির অপরাধে ১৩ বছরের শিশু কতৃক অপর ১৩ বছর বয়সের এক সংবাদপত্র বিক্রেতাকে গাছের সাথে বেঁধে মারপিট করে ভিডিও হোয়াটসআপের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ জনকে আটক করা হয়। পরে ভিকটিমের কোন অভিযোগ না থাকায় মুছলেকার প্রেক্ষিতে আটকৃতদের ছেড়ে হয়। গতকাল সোমবার দিনব্যাপী নবীগঞ্জ থানার একদল পুলিশ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে পুলিশ বনকাদিপুর গ্রামের লুৎফুর রহমানের ছেলে মেহেদী হাসান নাইম (১৩), তার ভাই বড় ভাই মিছবাহ উদ্দিন (২৭) ও ভিডিও ধারনকারী একই গ্রামের চুনু মিয়ার ছেলে রেজাউল করিম (১৪)কে আটক করে থানায নিয়ে আসে। কথিত নির্যাতনের শিকার পত্রিকা বিক্রেতা নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের বনকাদিপুর গ্রামের ইসন উল্লার পুত্র দবির হোসেন (১৩)। ঘটনাটির কোন সত্যতা না থাকায় অবশেষে গতকালই ভিকটিমের পিতা ইসন উল্লাহ থানায় লিখিত দেন এবং বিষয়টি সামাজিক ভাবে সমাধান করা হয়। পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানাযায়, প্রতিদিনের ন্যায় গত শুক্রবার সকাল ১০ টার সময় দবির হোসেন পত্রিকা নিয়ে কামারগাঁও বাজারে গেলে মিজবাহ উদ্দিনের মালিকানাধীন হাবিব রেস্টুরেন্টে যায়। এ সময় রেস্টুরেন্ট থেকে ২ প্যাকেট বিস্কুট চুরির করে নিয়ে যাওয়ার অপরাধে রেস্টুরেন্টে থাকা মালিক মিজবাহ উদ্দিনের ছোট ভাই ১৩ বছরের শিশু নাইম ও হোটেলের কর্মচারী হোসাইন ক্ষিপ্ত হয়ে হকার দবির কে ডেকে এনে ৫ মিনিট বেধে রেখে বিস্কুট চুরির কথা স্বীকার করায়। এ সময় বিস্কুট চুরির ঘটনাটি দবিরের পিতাসহ পরিবারের লোকজনকে অবগত করার জন্য প্রমান হিসেবে ভিডিও করে রাখা হয়। সেই ভিডিও তাদের এক আস্থাভাজন লোক মিজবাদের পরিবারের লোকজনকে ফাঁসানের উদ্যোশে কৌশলে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও হোয়াটসআপের মাধ্যামে প্রচার করে দেয়। আর এই ভিডিও কে কেন্দ্র করে উপজেলা জুড়ে নানা আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এবং ভিডিওতে দবির হোসেন চুরির কথা স্বীকার করছে। গতকাল সোমবার নবীগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল বাতেন খানের নেতৃত্বে ইনাতগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির এসআই ধর্মজিৎ সিনহা একদল পুলিশ নিয়ে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে উল্লেখিতদের আটক করেন। যদিও এ বিষয়টি স্থানীয় ভাবে ইউপি চেয়ারম্যানসহ বিশিষ্ঠ ব্যক্তিবর্গের মাধ্যমে সমাধানের জন্য দিন তারিখ নির্ধারন করা হয়েছিল। এ ঘটনায় দবিরে হোসেনের পরিবারের লোকজনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ছবিসহ বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় ঘটনার মোড পাল্টে যায়। শুরু হয় নানা আলোচনা-সমালোচনা। শেষ পর্যন্ত ভিকটিমের কোন অভিযোগ না থাকায় ঘটনাটি আপোসে মিমাংসা হয়েছে। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ওসি মোঃ আব্দুল বাতেন খাঁন বলেন, “যদিও শুক্রবারে ঘটনাটি ঘটেছে তবে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ আসেনি। গতকাল ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে এবং ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে ৩ জন কে আটক করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে ভিকটিমের কোন অভিযোগ না থাকায় এবং মুছলেকার মাধ্যমে আটকৃতদের ছেড়ে দেওয়া হয়।” তবে ঘটনাটি মূলত ভূল বুঝাবুঝি এবং ঘটনাটির সত্যতা প্রমান না হওয়ায় উভয় পক্ষের বক্তব্যে ও ভিকটিমের পিতার লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে থানায় স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে বিষয়টি সামাজিক ভাবে সমাধান করা হয়েছে এবং আটকৃতের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।


     এই বিভাগের আরো খবর