হবিগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় জামিনে থাকা সিসিক মেয়র (সাময়িক বরখাস্তকৃত) আরিফুল হক চৌধুরীর উপস্থিতিতে সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মকবুল আহসান তিন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের পিপি কিশোর কুমার কর জানান, আদালতে মামলার অভিযুক্ত আরিফুল হক চৌধুরীসহ কারান্তরীণ ১৩ আসামিদের মধ্যে ১২ জন উপস্থিত ছিলেন। তবে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। আদালত আলী আফসর, জসিম উদ্দিন ও সৈয়দ সুহেল নামে তিন ব্যক্তি সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ৭ এপ্রিল নির্ধারণ করা হয়েছে। কিশোর কর আরো জানান, কিবরিয়া হত্যা মামলার ৩২ আসামির মধ্যে ৯ জন জামিনে, ১৩ জন কারাগারে ও ১০ জন পলাতক রয়েছেন। হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে সিলেট দ্রুত বিচার আদালতে স্থানান্তরিত করা হয় কিবরিয়া হত্যা মামলাটি। দ্রুত বিচার আদালতে মামলাটি ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে শেষ হওয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল। কিন্তু এ সময় পেরিয়ে যাওয়ায় নিয়মানুযায়ী ১৫ কর্মদিবস করে দুই দফা সময় বাড়ানো হয়। সেই সময় পেরিয়ে যায় গত বছরের ৯ ডিসেম্বর। এমতাবস্থায় মামলার কার্যক্রম সিলেট দ্রুত বিচার আদালতে রাখতে গত ৬ জানুয়ারি আইন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী গত ১১ মার্চ থেকে দ্রুত বিচার আদালতে বিচার শুরু হয় আলোচিত এ মামলার। ওইদিন হবিগঞ্জের আলতাব ও আবদুল খালিক নামক দুজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। পরে গত ১৬ মার্চ সব আসামি উপস্থিত না থাকায় আদালত সাক্ষ্য গ্রহণ করেননি। প্রসঙ্গত, টানা নয় দফা পেছানোর পর গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলার চার্জ (অভিযোগ) গঠন করা হয়। মামলার কারান্তরীণ ও জামিনে থাকা সকল আসামির উপস্থিতিতে মোট ৩২ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জ গঠন করা হয়। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, সিসিকের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জিকে গউছ, হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নান প্রমুখ। ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদরের বৈদ্যের বাজারে এক জনসভায় গ্রেনেড হামলায় নিহত হন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া। হামলায় নিহত হন কিবরিয়ার ভাতিজা শাহ মনজুরুল হুদা, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহিম, আবুল হোসেন ও সিদ্দিক আলী। এ ঘটনায় হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ খান হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন।