,

নবীগঞ্জে গ্রামীণ ফোনের নামে মাত্র থ্রিজি ॥ গ্রাহকদের ভোগান্তি চরমে

মতিউর রহমান মুন্না ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার গ্রাম গঞ্জে থ্রীজি নেটওয়ার্ক শুধু নামেই আছে, কাজের বেলায় কিছুই নেই। গ্রামীন ফোনের লোভনীয় বিজ্ঞাপন দেখে বিভিন্ন প্যাকেজ কিনে প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ গ্রাহক, এমন অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে অহরহ। বর্তমানে শহরে থ্রীজির স্পীড ৫ থেকে ৬ শত কেবি থাকলেও গ্রাম-গঞ্জে ১ থেকে ২শত কেবি স্পিডের বেশি পাওয়া যায়না, যা অত্যন্ত নিম্নগতির ইন্টারনেট। এসব নানা সমস্যার সম্মূখিন হয়ে সাধারন গ্রাহকরা গ্রামীন ফোন বাদ দিয়ে ইতিমধ্যে অন্যান্য অপারেটর ব্যবহার করা শুরু করেছেন। সময় থাকতে এ সমস্যার সমাধান না হলে পরবর্তিতে গ্রামীণ ফোনের গ্রাহক অর্ধেক কমে যাবে বলে ধারনা সচেতন মহলের। গ্রাহকরা জানান, প্রায় ২ বছর আগে নবীগঞ্জ উপজেলায় গ্রামীন ফোনের থ্রীজি সেবা চালু হয়। শুরুতে থ্রীজির প্যাকেজ গুলোর সার্ভিস ভাল থাকায় এর প্রতি ইন্টারনেট গ্রাহকদের মনজয় করতে সক্ষম হয় গ্রামীণফোন। নবীগঞ্জের মোবাইল ব্যবহারকারীরাও অন্যান্য অপারেটর বাদ দিয়ে গ্রামীন ফোনের ইন্টারনেট সার্ভিসের থ্রীজি প্যাকেজটি ব্যবহার শুরু করেন। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে এর মান ততই কমছে। বর্তমানে ই-মেইল পাঠানোর ক্ষেত্রেও বিড়ম্বনায় পড়ছে অনেক গ্রাহক। এছাড়া ঘরের ভিতরে ইন্টারনেট স্প্রিড না আসায় অনেক ফেইসবুক ব্যবহারকারীরা রাতেও বাহিরে বাহিরে গিয়ে চ্যাট করতে দেখা যায়। প্রবাসীরা স্বজনদের ইমো, ভাইবার কিংবা অন্য মাধ্যমে ভিডিও দেখে দেখে কথা বলবেন, এমন আশায় বিদেশ থেকে দামী দামী স্মার্ট ফোন কিনে দেন স্বজনদের। প্রবাসীদের কিন্তু স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়। নামে মাত্র থ্রীজি দিয়ে ইন্টারনেটে কথা বলাতো দূরের কথা এমনিতেই ফোনে কথা বলা যায়না। বর্তমানে গ্রামীন ফোন দিয়ে ঘরের ভিতরে বসে ফোনে কথাই বলা যায় না। বিদেশ থেকে অনেকেই ভিডিও কলে কথা বলার চেষ্টা করে কিন্তু সম্ভব হয়না। এছাড়া ইন্টারনেটের স্পীড অত্যন্ত কম হওয়ায় আমি অন্য অপারেটর দিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছি’। তিনি বলেন, ‘গ্রামীন ফোন যখন প্রথম নবীগঞ্জে থ্রীজি সেবা চালু করেছিল তখন ঘরের বসেই ই-মেইলের মাধ্যমে ভিডিও ফুটেজ, নিউজ প্রেরন ও ফেইসবুক ব্যবহারসহ ইন্টারনেটের সব কাজ করতে পেরেছি। কিন্তু এখন ল্যাপটপ হাতে নিয়ে ঘরের বাহিরে গিয়েও নিউজ প্রেরনে নানা ভোগান্তির শিকার হতে হয়। ১০ থেকে ১২ এমবি‘র একটি ভিডিও ফুটেজ পাঠাতে কমপক্ষে আধাঘন্টা সময় লাগে। এসব কারণেই গ্রামীণ ফোন ব্যবহার করা বাদ দিচ্ছি।’ তিনি নবীগঞ্জ উপজেলায় গ্রামীণফোনের থ্রীজি ইন্টারনেট গতি বাড়ানোসহ সকল সমস্যা সমাধানে গ্রামীণ ফোন কতৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষন করেন। দিনারপুর এলাকার সামসুল ইসলাম নামের এক ব্যবসায়ী জানান, আগে গ্রামীণ ফোনের ইন্টারনেট সেবার মান ভাল থাকায় আমরা প্রতিদিনই গ্রাহকদের ১ জিবি, ২ জিবি সহ বিভিন্ন প্যাকেজ চালু করে দিয়েছি। গ্রাহকরা ঘরে বসে ঘুমিয়েও ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পেরেছে। কিন্তু এখন থ্রীজি সেবার স্প্রিড কম থাকায় আমাদের এলাকায় গ্রামীনের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের চাহিদাও দিন দিন কমে যাচ্ছে। এখন গ্রাহকরা অন্যান্য কোম্পানীর এমবি কার্ড ও প্যাকেজ চালু করার জন্য আমাদের নিকট আসে। ইরান থেকে সাহার নামের এক তরুণীর সাথে মোবাইল কলে আলাপ কালে জানান, ‘আমার বন্ধু বান্ধব ও প্রিয় লোকজন বাংলাদেশের নবীগঞ্জ থাকেন, তাদেরকে ভিডিও কল দিয়ে দেখে দেখে কথা বলার জন্য প্রায়ই চেষ্টা করি কিন্তু ওই খানের নেটওয়ার্ক খুবই দূর্বল। থ্রীজি নেট না থাকায় ভিডিও দেখে দেখে কথা বলতে পারিনা। থ্রীজি ব্যবহারকারীদের দাবী সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন।


     এই বিভাগের আরো খবর