,

প্রেমের টানে সুদূর ব্রাজিল থেকে নবীগঞ্জে আসলেন সেওমা বিজেরা

আনোয়ার হোসেন মিঠু ॥ ধর্ম, সমাজ, রাষ্ট্র ও সংস্কৃতিসহ সকল বাঁধা অতিক্রম করে সুদূর ব্রাজিল থেকে প্রেমের ডাকে সাড়া দিয়ে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের হালিতলা বারৈইকান্দি গ্রামে ছুটে এসেছে ৪৭ বছর বয়সী সেওমা বিজেরা নামের এক মহিলা। সকল প্রতিবন্ধকতা ডিঙ্গিয়ে ঘর বেঁেধছেন নবীগঞ্জ উপজেলার হালিতলা গ্রামের আসকান উদ্দিনের বড় ছেলে মোঃ আব্দুর রকিব সাথে। রকিব মৌলভীবাজার সরকারী কলেজের মার্স্টাস শেষ বর্ষের ছাত্র। এ ঘটনায় এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। খবর পেয়ে আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে অসংখ্য লোকজন ভীড় জমাচ্ছেন আব্দুর রকিবের বাড়িতে। ইতিমধ্যেই আব্দুর রকিব ও সেওমা বিয়ে করে ফেলেছেন। প্রেমের টানে সুদূর ব্রাজিল থেকে বাংলাদেশের ছোট্ট একটি গ্রামে এক বয়স্ক মহিলার এভাবে ছুটে আসা সত্যিই বিরল একটি ঘটনা। গতকাল বুধবার সহকর্মী মোঃ আবু তালেব ও আলমগীর মিয়াকে সাথে নিয়ে সড়েজমিন হালিতলা বারৈইকান্দি গ্রামে মোঃ আব্দুর রকিবের বাড়িতে যাই অসম প্রেমের এ সংবাদ সংগ্রহ করতে। কথা হয় রকিব ও তার প্রেমিকা সেওমার সাথে। খুবই আন্তরিকতার সাথে সেওমা তাদের সম্পর্ক নিয়ে কথা বলেন আমাদের সাথে। এসময় রকিব বলেন প্রায় ৯ মাস পূর্বে তিনি ফেইসবুকে সেওমার আইডিতে লাইক দেন। সেওমাও তাকে লাইক দেন। এভাবেই শুরু। এভাবে চলতে চলতে এক পর্যায়ে তাদের টেক্স বিনিময় থেকে শুরু প্রায় প্রতিদিনই তাদের কথা হতো। ২০১৬ইং সালের ডিসেম্বর মাসের ১ম দিকে সেওমা ব্রাজিলে বাংলাদেশের দুতাবাসে গিয়ে ভিসা সংগ্রহ করেন। ৯ মাস পর অবশেষে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর তিনি বাংলাদেশের হযরত শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে আসেন। বিমান বন্দরে তাকে স্বাগত জানান তার ফেইসবুক প্রেমিক মোঃ আব্দুর রকিব। চলে আসেন নবীগঞ্জে। রকিবের পরিবারের আপত্তি না থাকার কারণে গত ৩ জানুয়ারী হবিগঞ্জের রোটারী পাবলিকের কার্যালয়ে হাজির হয়ে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করেন। পরে ইসলাম ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী ২ লক্ষ টাকার কাবিন রেজিষ্ট্রি করেও বিয়ের অনুষ্টান সম্পন্ন হয়। আব্দুর রকিব বলেন, ‘ফেসবুকের সূত্রেই আমাদের পরিচয় ও প্রেম। শেষ পর্যন্ত এখন আমরা সুখে-শান্তিতে সংসার করছি। সেওমা বাংলা বলতে শিখছে। রকিবের পরিবারের সকল সদস্য এখন খুবই খুশি।’ রকিব আরো জানান, সেওমা ব্রাজিলে পেশায় একজন শিক্ষক। বর্তমানে সেওমা আইন বিষয়ে লেখাপড়া করছেন। সেওমার সাথে আলাপকালে জানাযায়, এর আগে তার বিয়ে হয়েছে এবং ওই সংসারে ৩টি সন্তান রয়েছে। এক ছেলে ও দুই মেয়ে। ছেলের নাম ইদুওয়ারদু এবং মেয়ে দেবুরা ও ব্র“না। তবে সে জানায় আগের স্বামীর সাথে তার ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে অনেক আগেই। ২৬ বছর বয়সী রকিবের কাছে প্রশ্ন ছিলো ৪৭ বয়সের ব্রাজিলিয়ান মেয়ের সাথে প্রেম করে বিয়ে করেছেন কোন উদ্দেশ্য আছে কি না। উত্তরে রকিব জানায় সত্য ভালবাসায় বয়স কোন ব্যাপারই না। আগামী ২৮ জানুয়ারী সেওমা নবীগঞ্জ থেকে তার নিজ বাড়ি ব্রাজিলের উদ্দেশ্যে ফেরত চলে যাবেন। সেখানে গিয়ে তার স্বামীকে ব্রাজিল নেয়ার জন্য কাগজপত্র তৈরী করে রকিবের কাছে পাঠাবেন। নবীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব ছাবির আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘প্রেমের টানে সুদূর ব্রাজিল থেকে বাংলাদেশের ছোট্ট একটি গ্রামে এক মহিলার এভাবে ছুটে আসা সত্যিই বিরল একটি ঘটনা।


     এই বিভাগের আরো খবর