,

নবীগঞ্জে সাংবাদিক সম্মেলনে ॥ চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান পরিবার

আশাহিদ আলী আশা ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার লোগাওঁ গ্রামে প্রতিপক্ষের লোকজন কর্তৃক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে লন্ডন প্রবাসী বদিউজ্জামানের বিলাস বহুল বাড়ি দখলের ঘটনায় চরম
(২য় পৃষ্ঠায় দেখুন) নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান পরিবার এবং থানা পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ করে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন তারা। গতকাল শনিবার বিকালে নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবে লিখিত সাংবাদিক সম্মেলনে উক্ত অভিযোগ করেন চেয়ারম্যান পুত্র এবং নবীগঞ্জ পৌর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়েজ আমীন রাসেল। এ সময় তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। তিনি বলেন আমার পিতা মোঃ শাহ্ নেওয়াজ দীর্ঘদিন যাবৎ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে অত্যন্ত সুনামের সহিত মানুষের সেবা করে আসছিলেন। এলাকায় আমাদের ঐতিহ্য বিদ্যমান। এমতাবস্থায় একটি বিশেষ মহল দীর্ঘদিন যাবৎ আমাদের পরিবারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য নানা ষড়যন্ত্র করে আসছে। তারই ধারাবাহিকথায় গত ৩০ ডিসেম্বর বিকালে আমার চাচাতো ভাই লন্ডন প্রবাসী বদিউজ্জামানের মালিকানাধীন এবং ভোগদখলে থাকা একটি বিলাসবহুল বাড়ি-ঘরসহ ভুমি জবর দখল করার জন্য পাশের বাড়ির জিতু মিয়া মেম্বার, তার সহোদর আলা মিয়ার নেতৃত্বে একদল ভাড়াটে লোক নিয়ে হামলা করে। এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে তারা আমার পিতা উক্ত ইউনিয়নের সুনামধন্য ৩ বারের চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শাহ্ নেওয়াজকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর রক্তাত্ব জখম করে প্রাণেণহত্যার চেষ্টা করে। এতে আমরা বাধা দিতে চাইলে জিতু মিয়া মেম্বার একটি আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি ভাবে আমাদের উপর গুলি বর্ষন করে। আল্লাহর অশেষ কৃপায় বড় ধরনের দূর্ঘটনা থেকে আমার পরিবার রক্ষা পায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার নামে আমাদের নিরাপরাধ দু’জন লোককে গ্রেফতার করে কোর্ট হাজতে প্রেরন করেছে। এদিকে আমার আহত পিতাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল ভর্তি করে ঘটনার সাথে জড়িত জিতু মিয়া মেম্বারসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে ৩০ ডিসেম্বর রাতে একটি মামলা দায়ের করি। এ মামলায় থানা পুলিশ কাউকে গ্রেফতার না করে উল্টো প্রতিপক্ষের ৩১ ডিসেম্বর দায়েরকৃত সাজানো মিথ্যা মামলায় আমাদের নিরীহ লোকদের হয়রানী করে আসছে। এবং ওই মিথ্যা মামলায় আমাদের দু’ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নবীগঞ্জ উপজেলার লোগাওঁ মৌজাস্থিত জেএলনং ২০২, খতিয়ান নং ২৬১, দাগ নং ১৫০, মোয়াজি ২৬ শতক বাড়ি রকম ভুমি এসএ ও চলমান জরিপে আমার চাচাতো ভাই বদিউজ্জান চৌধুরীর নামে রেকর্ড রয়েছে। এবং যুগযুগ ধরে ওই ভুমিতে তারা দখল থাকিয়া সরকারী খাজনা, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের কর নিয়মিত পরিশোধ করে আসছেন। এছাড়া উক্ত ভুমিতে আমার চাচাতো ভাই বদিউজ্জামান চৌধুরী লন্ডন থেকে দেশে এসে ১৯৯৪ইং সনে প্রায় কোটি টাকা ব্যয় করে একটি দু’তলা বাড়ি নির্মাণ করে লন্ডন চলে যায়। উক্ত বাড়িতে হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে। যা বদিউজ্জামানের নামে একটি বিদ্যুৎ মিটার হিসাব নং ৮০৩-৩৪০০। ফলে ওই মিটার ব্যবহার করে বিল পরিশোধ করে আসছে। ওই বাড়িতে কেয়ার টেকার হিসেবে লাল মিয়া নামক এক ব্যক্তি বসবাস করে আসছিল। বিগত ১৩ ফেব্র“য়ারী ২০১৪ইং গভীর রাতে উক্ত জিতু মিয়া মেম্বারের নেতৃত্বে ৩ জন লোক জোরপুর্বক বাড়িতে প্রবেশ করে ওই কেয়ারটেকারকে মারপিট করে তার মেয়ে রুমি বেগমকে ধর্ষনের চেষ্টা ও শ্লীলতাহানী করে। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ নারী শিশু আদালতে মামলা দায়ের করেন কেয়ারটেকারের স্ত্রী ও নির্যাতিতার মা মরিয়ম বেগম। এরপর থেকেই তারা বিভিন্ন সময় আমার চাচাতো ভাই বদিউজ্জামান চৌধুরীর বাড়িটি জবর দখল করার অপচেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে গত ৩০ ডিসেম্বর পরিকল্পিতভাবে আগ্নেয়াস্ত্র সহ হামলা করে। উক্ত ঘটনার সংবাদটি বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় ভিন্নভিন্ন ভাবে প্রকাশিত হয়েছে। এতে আমি ও আমার পরিবার চরমভাবে মর্মাহত হয়েছি। এছাড়া দু’ একটি পত্রিকায় আমার দেয়া বক্তব্যের একাংশে লিখেছেন যে’ আমি আত্বরক্ষার্থে গুলি ছুড়েছি। যা আদৌ সঠিক নয় এবং এ ধরনের বক্তব্য দেই নি। আমার বক্তব্য টি ছিলো আমার পিতা এলাকার সুনামধন্য চেয়ারম্যান শাহ্ নেওয়াজকে প্রতিপক্ষের লোকজন নির্মমভাবে হত্যা করার হীন উদ্দেশ্যে আক্রমন করে। তাদের কবল থেকে রক্ষা করতে চাইলে তারা গুলি বর্ষন করেছে। আমি মনে করি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দেয়া আমার বক্তব্যে শব্দ বিভ্রাটের কারনে এ ঘটনা ঘটতে পারে। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েও পুলিশ আমাদের মামলায় কাউকে গ্রেফতার না করে উল্টো প্রতিপক্ষের সাজানো মিথ্যা মামলায় আমাদের লোকদের হয়রানী করে আসছে এবং আমাদের নিরাপরাধ দু’ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। আমি আজকের সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে পুলিশকে নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবী জানাচ্ছি এবং আমার নিরাপরাধ লোকদের হয়রানী না করার জন্য অনুরুধ করছি। একই সাথে জিতু মিয়া মেম্বারের নিকট থাকা অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রটি উদ্ধারের জন্য প্রশাসনের প্রতি দাবী জানাচ্ছি। এক পর্যায়ে ফয়েজ আমীন রাসেল সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবান দেন। প্রতিপক্ষ আলা মিয়া গুলিবিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রতিপক্ষের কোন লোক গুলিবিদ্ধ হয়েছে আমি কেন গ্রামের কেউ বলতে পারবেন না। এছাড়া অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে গুলি বর্ষন করেছেন প্রতিপক্ষ। বিচ্ছিন্নভাবে ইট পাটকেল নিক্ষেপেরও ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আমার আহত বৃদ্ধ বাবাকে নিয়ে ব্যতিব্যস্ত ছিলাম। ঘটনার পর পর আলা মিয়াগংদের ঘুরা ফেরা করতে দেখেছি। তবে তিনি যদি আহত হয়েও থাকেন তা আমাদের জানা নাই।


     এই বিভাগের আরো খবর