সুমন আলী খাঁন ॥ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের জনতার বাজারের সিলেটের সর্ব বৃহৎ গরু ছাগলের হাট বসেছে। ভিডিও কলের মাধ্যমে লন্ডন আমেরিকা থেকে প্রবাসীরা গরু ছাগল দেখে পছন্দের পশুটি ক্রয় করছেন। আগামীকাল (সোমবার) মুসলিম উম্মার প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদ-উল আযহা। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলাজুড়ে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। গতকাল শনিবার উপজেলার সর্ববৃহৎ ও বিভাগের অন্যাতম বৃহৎ পশুর হাট উপজেলার দিনারপুর অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী গজনাইপুর জনতার বাজারে ছিল জমজমাট পশুর হাট। প্রায় ১০ হাজার গরু ও ছাগল হাটে নিয়ে আসেন বিক্রেতারা।
সরজমিনে দেখা যায়- প্রচুর গরু সকাল থেকেই কেনাবেচা হচ্ছে। এছাড়াও নবীগঞ্জ পৌর এলাকার সালামতপুর, ইনাতগঞ্জ, সৈয়দপুর বাজার, নতুন বাজার, কাজির-বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পশুর হাট গুলোতে গরু কেনা বেচা হয়েছে। ক্রেতারা জানান- এবার গরুর ছাগলের দাম খুবই বেশি। হাটগুলো ক্রেতাদের পদ চারণায় সরগরম থাকলেও দাম সাধ্যের বাইরে থাকায় অনেক ক্রেতাই দাম কমার আর ১ দিন অপেক্ষা করছেন। তবে একদিনের মধ্যে ক্রেতারা কোরবানির পশু কিনতে হবে। একদিনের মধ্যে ক্রেতারা মনে করছেন হাটে পশু বিক্রি করতে আসা গরু ছাগল বিক্রি করবেন ব্যবসায়ীরা।
এদিকে, ডিজিটাল তথ্য প্রযুক্তি ছোঁয়ায় আরো একধাপ এগিয়ে জমে উঠেছে পশুর হাট। অনেকেই স্মার্ট ফোনে ফোর-জি, থ্রী জি নেটওয়ার্কের আওতায় ইমো, হোয়াটসআপসহ বিভিন্ন অ্যাপ এর মাধ্যমে ভিডিও কলে বিদেশে অথবা বাড়িতে থাকা লোকজনকে গরু দেখাচ্ছেন এবং তারা ভিডিও কলে গরু দেখে দেখে পছন্দ করছেন কোনটা কিনবেন। এ ছাড়াও অনেকেই গরুর ছবি তুলে হোয়াটসআপের মাধ্যমে তাদের স্বজনদের শেয়ার করছেন।
হবিগঞ্জ থেকে আসা খোকন মিয়া একটি ষাঁড় নিয়ে এসেছেন যার দাম ১০ লক্ষ টাকা দাবি করছেন। বিশাল এই ষাঁড়ের নাম তিনি দিয়েছেন ‘খোকা বাবু’। তিনি তার ব্যক্তিগত খামারে এই ষাঁড়টি লালন পালন করেছেন বলে জানান। তিনি বলেন তার ষাঁড়টি এখন পর্যন্ত ৪ লাখ টাকা দাম হয়েছে।
উপজেলার গজনাইপুর গ্রামের ক্রেতা লুৎফুর রহমান জানান- দেশীয় গরু কিনতে বাজারে এসছি, বাজারে দাম খুব বেশী তাই কোরবানির গরু কিনতে হিমশিম খাচ্ছি।
উপজেলার দেবপাড়া এলাকার বাসিন্দা আব্দুল কাদির পশু বিক্রি করতে এসেছেন এ হাটে। তার সাথে কথা হলে তিনি জানান, অনেকেই আসছেন কিন্তু দেখে দেখে চলে যাচ্ছেন। ক্রেতারা অভিযোগ করছেন গরুর দাম বেশি। তাই কোরবানির পশু না কিনে চলে যাচ্ছেন। যার ফলে আমরা আশানুরূপ বিক্রি না করতে পারায় সেগুলো নিয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে। একটি গরু ৮০ হাজার টাকা দাম চাইলে ও ক্রেতারা ৫০/৬০ হাজার টাকা দাম করেছেন। তাই বিক্রি করতে পারিনি। তবে ঈদের আগের বাজার আরো অনেক ভাল হবে বলে আশা করছি।
জনতার বাজারে গরু বিক্রি করতে আসা আব্দুল গফুর জানান, দীর্ঘদিন ধরে গরু লালন-পালন করেছি লাভের আশায়, যদি ভারতীয় গরু বাজারে না আসে তাহলে আমাদের দেশীয় গরুগুলো ন্যায্য মূল্য পাবো বলে আশাবাদী।
কায়স্থগ্রামের গ্রামের আবুল খায়ের কায়েদ বলেন, নবীগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী দিনারপুর জনতার বাজার পশুর হাটে বিভিন্ন এলাকা থেকে বিক্রেতারা পশু নিয়ে আসেন। অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছর দাম একটু বেশি এবং ভারতীয় গরু বাজারে আসায় দেশীয় গরু বিক্রেতারা হিমশিম খাচ্ছেন। তাই ক্রেতারাও দাম চড়া হওয়ায় গরু কিনতে পারছেন না। অনেকেই শেষ বাজারের অপেক্ষা করছেন।
নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান ইমদাদুর রহমান মুকুল বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও নির্বিঘেœ ক্রেতা বিক্রেতারা পশু ক্রয় বিক্রয় করছেন। আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।