,

নবীগঞ্জে সাংবাদিক নির্যাতনকারী ও মামলার চার্জশীট ভুক্ত আসামী ইউপি চেয়ারম্যান হারুনের বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর কাছে অভিযোগ

সংবাদদাতা ॥ নবীগঞ্জ উপজেলায় নির্য়াতিত তিন সাংবাদিক গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় সরকার আইনের ৩৪ ধারা মোতাবেক সাংবাদিক নির্যাতনকারী উপজেলার আউশকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান ও নির্যাতন মামলার চার্জশীট ভুক্ত আসামী মহিবুর রহমান হারুনের বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রীর কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। মন্ত্রীর পক্ষে এ অভিযোগ গ্রহন করেন নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার পাল। অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের কর্মরত সাংবাদিকগণ বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে আসা ত্রাণ ও বয়স্ক ভাতা, প্রধানমন্ত্রীর আড়াই হাজার টাকা প্রণোদনা নিয়ে নানা অনিয়ম হলে উক্ত সংবাদ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে তুলে ধরা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন ইউপি চেয়ারম্যান মহিবুর রহমান হারুন ও তার লোকজন। এর প্রেক্ষিতে গত ১ এপ্রিল দেশের স্বনামধন্য জাতীয় পত্রিকা দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদ এর হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি শাহ সুলতান আহমদ, সরকারের ১০ টাকা কেজির চাল ও করোনা উপলক্ষে আসা সরকারের ত্রাণ বিতরণে নানা অনিয়মের কারনে ত্রাণ বঞ্চিত কিছু মানুষের কথা ফেসবুক লাইভে ও সংবাদ মাধ্যমে তুলে ধরার অপরাধে দিনেদুপুরে নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি বাজারে যাত্রী ছাউনী সংলগ্ন সাথী ফার্মেসী থেকে সাংবাদিক শাহ সুলতানকে ধরে এনে নবীগঞ্জ উপজেলার ৫নং আউশকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহিবুর রহমান হারুন ও তার লোকজন প্রকাশ্যে রাস্তায় ক্রিকেট খেলার ব্যাট দিয়ে পিটান। এ সময় সাংবাদিক শাহ সুলতান অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে গেলে তাকে উদ্ধারের জন্য এগিয়ে আসেন দৈনিক আমার সংবাদের প্রতিনিধি সাংবাদিক এম. মুজিবুর রহমান ও চ্যানেল এস এর প্রতিনিধি বুলবুল আহমদ। তখন তাদেরকেও চেয়ারম্যান ও তার লোকজন মারপিট করেন। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন এসে ৩ সাংবাদিককে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় সাংবাদিক শাহ সুলতানকে সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সাংবাদিকদের উপর হামলার ও মারপিটের ঘটনাটি সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করে। বিভিন্ন টিভিতে টকশো ও বাংলাদেশের প্রতিটি মিডিয়ায় প্রকাশ হয়। ঐ ঘটনায় নবীগঞ্জ থানায় নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের পক্ষে মামলা দায়ের করেন সাংবাদিক এম. মুজিবুর রহমান। ফৌজদারী মামলা (নবীগঞ্জ থানা মামলা নং- ০৩/৬২, হবিগঞ্জ আদালতে জিআর নং- ৬২/২০২০) ঐ মামলার চার্জসীট নং-৯৭ তারিখ ৯ জুলাই ২০২০ ধারা ১২৩/৩২৩/৩৭৯/৫০৬(২)/১১৪/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০ নবীগঞ্জ থানা এফআইআর নং ০৩/৬২ তারিখ ০৩ এপ্রিল ২০২০। ধারা ১৪৩/৩২৩/৩২৫/৩০৭ /৩৭৯/৫০৬(২) /১১৪/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০) ফৌজদারী মামলা থাকা স্বত্বেও অজ্ঞাত কারনে উক্ত চেয়ারম্যানকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে এখনো বরখাস্ত করা হয়নি। বিষয়টি স্থানীয় সরকার মন্ত্রীকে অবগত করা হলে তিনি নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন। এরই প্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্য়াতিত সাংবাদিকদের পক্ষে অভিযোগ দেন হামলার শিকার সাংবাদিক শাহ সুলতান আহমদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ সারোয়ার শিকদার, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর মিয়া ও সাবেক সভাপতি এম.এ আহমদ আজাদ। ওই ইউ/পি চেয়ারম্যান নবীগঞ্জ উপজেলার ৫ জন সিনিয়র সাংবাদিকসহ নিরপরাধ লোকজনের উপর দুটি মিথ্যা মামলা দায়ের করিয়েছেন। এছাড়াও তিনি নির্যাতিত সাংবাদিক শাহ সুলতানের বিরুদ্ধে পরপর দুটি মামলা করেছেন। তিনি চেয়ারম্যান পদে বহাল থাকায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাংবাদিকদের বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছেন। তার ত্রাণ বিতরণ ও বয়স্ক ভাতা প্রদানে অনিয়ম, বিভিন্ন ভূয়া প্রকল্পের নামে টাকা আত্মসাত এর অনিয়ম দূর্নীতি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণে আহবান জানানো হয় অভিযোগে। নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার পাল বলেন অভিযোগ পেয়েছি, স্থানীয় সরকারের বিধি অনুযায়ী চেয়ারম্যান পদ থেকে বরখাস্ত করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হবে।


     এই বিভাগের আরো খবর