,

শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার হবে: শিক্ষামন্ত্রী

সময় ডেস্ক ॥ গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় রাজধানীর হেয়ার রোডে সরকারি বাসভবনে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের অপসারণ চেয়ে শিার্থীদের চলমান আন্দোলন নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন শিামন্ত্রী ডা.দীপু মনি। এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দীপু মনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় হামলা ও গুলি চালানোর অভিযোগে পুলিশ যে মামলা দায়ের করেছিল, তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।’ শিক্ষামন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন চলাকালেই খবর আসে, উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে অর্থায়নের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত সাবেক ৫ শিক্ষার্থীকে জামিন দিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার বিকেলে মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানা ৪ জনকে আদালতে প্রেরণ করেছিল। অপরজন করোনা আক্রান্ত হয়ে নগরীর শহীদ ডা. শামসুদ্দিন আহমদ আদালতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গত সোমবার ২৪ জানুয়ারী ঢাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। গতকাল বুধবার বিকেলে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রেফতারকৃত সাবেক শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান, রেজা নূর মঈন, একেএম মারুফ হোসেন ও ফয়সাল আহমেদকে আদালতে পাঠায় পুলিশ। রাত ৭টার দিকে শুনানি শেষে মহানগর হাকিম ২য় আদালতের বিচারক মোঃ সুমন ভূঁইয়া তাদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। সিলেট মহানগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার বিএম আশরাফ উল্লাহ তাদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন। শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান আন্দোলনে অর্থায়নের অভিযোগে রাজধানী থেকে আটকের পর গত মঙ্গলবার ২৫ জানুয়ারী ৫ জনকে সিলেট মহানগর পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। সে রাতে জেলা তাঁতী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. লায়েক আহমদ বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১০০-১৫০ জনের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি প্রদর্শন, চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা করেন। গতকাল বুধবার এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ৪ জনকে আদালতে পাঠানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, আন্দোলনরত ও অনশনরত শিক্ষার্থী সবার সঙ্গে কথা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা আন্দোলন প্রত্যাহার করবেন এই বিষয়ে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। কিন্তু তারা কী কারণে আন্দোলন করেছেন, তা সবাই মিলে অ্যাড্রেস করব।’ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে ইচ্ছুক শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিপর্যস্ত হয়ে আছেন। তারা একটু সুস্থ হয়ে উঠলেই আলোচনা হবে। প্রয়োজনে তিনি সিলেটে গিয়ে আলোচনা করবেন। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে দীপু মনি বলেন, ‘শুরুতে তাদের আন্দোলন ছিল হলের প্রভোস্টকে নিয়ে। ভিসিকে নিয়ে নয়। তবে আগে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসব, তারপর সব সমস্যার সমাধান করা হবে।’ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে দেশের বিভিন্ন জেলায় ও বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতীকী অনশন ও বিােভ কর্মসূচি চলছে। শাবিপ্রবির বেগম সিরাজুন্নেছা চৌধুরী ছাত্রী হলের প্রভোস্টের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগে ১৩ জানুয়ারি রাতে আন্দোলন শুরু হয়। পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ হামলা চালায়। এর পর থেকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন রূপ নেয় অন্য দিকে। এ ঘটনায় তারা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। ১৭ জানুয়ারি থেকে শাবিপ্রবি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে তার পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। গত বুধবার থেকে একই স্থানে অনশন শুরু করেন ২৪ শিক্ষার্থী। বাসবভনের সামনে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেওয়ার কারণে ১৭ জানুয়ারি থেকেই কার্যত অবরুদ্ধ অবস্থায় আছেন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। বুধবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল তার স্ত্রী অধ্যাপক ইয়াসমিন হকের উপস্থিতিতে অনশন ভাঙেন শিক্ষার্থীরা। জনপ্রিয় এই লেখক শিক্ষার্থীদের পানি পান করিয়ে সপ্তাহব্যাপী করা অনশন ভাঙান। অনশন ভাঙলেও আন্দোলন চালিয়ে যাবার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে অসুস্থ শিক্ষার্থীরাও হাসপাতাল থেকে ক্যাম্পাসে এসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগ দেন।


     এই বিভাগের আরো খবর