,

কিবরিয়া হত্যা মামলা ॥ এখনও বাদ পড়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নাম আসমা কিবরিয়া

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আমি দীর্ঘদিন অপেক্ষায় ছিলাম আমার স্বামীর প্রকৃত হত্যাকারী এবং হত্যার মদদদাতাকারী, সহায়তাকারীদের প্রকাশ্যে আদলাতে বিচার হউক। আজ ১০ বছর পর নতুন একটি চার্জশীট দেওয়া হয়েছে, যাতে কয়েকটি নতুন ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তির নাম রয়েছে। যদিও এ চার্জশীটে দু একটি গুরুত্বপূর্ণ ষড়যন্ত্রকারীর নাম এখনও আসেনি, তাদের মধ্যে অন্যতম হবিগঞ্জের সাবেক ডিসি মো: এমদাদুল হক। গতকাল মৃদুভাষনের ওয়েবসাইটে দেয়া এক বির্বৃতিতে তিনি একথা বলেন । তিনি বলেন যে, বর্তমান তদন্তকারী কর্মকর্তার দাখিলকৃত অভিযোগ পত্রে মোটামুটি প্রকৃত হত্যাকারী ও মদদদাতাকারী, সহায়তাকারীদের নাম চলে এসেছে। এএসপি মেরেুন্নেসা দায়িত্বশীলতা ও সাহসের সাথে তদন্ত অনেক দুর নিতে পেরেছেন। আর আমাদের হবিগঞ্জের আইনজীবি আলমগীর ভুইয়া বাবুল অত্যান্ত সাহস, ধৈর্য্য ও নিষ্ঠার সাথে এ মামলা পরিচালনা করেছেন। তার প্রচ্ষ্টোয় মামলাটি বর্তমান চার্জশীটের পর্যায় পৌচেছে। দুর্ভাগ্যবশত আমার স্বামীর হত্যা মামলাটি তদন্ত বার বার বাধা গ্রস্থ হয়ে প্রকৃত অপরাধী পাড় পেয়ে যাচ্ছিল। দ্বিতীয় তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির এএসপি রফিকুল ইসলাম তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করে অভিযোগ পত্র দাখিল করলেন। তখন আমি সেটা কোন অবসস্থাতেই মেনে নিতে পারিনি। বাদী জনাব আব্দুল মজিদ খান এমপি কে অনুরোধ করেছিলাম চার্জশীটের বিরুদ্ধে না রাজী দেওয়ার জন্য, তিনি তা করেননি বরং ভুল চার্জশীটের মাধ্যমে আসল অপরাধীদের পাশ কাটিয়ে বিচার চেয়েছিলেন এবং সেই অসম্পূর্ণ চার্জশীট সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করলেন। তখন আমি আমার আইনজীবিদের সাথে পরার্মশ করে নিজেই বাদী হয়ে না রাজী দেই। কিছু মানুষ মনে করলেন এই তদন্ত না রাজী দিয়ে আমরা নিজেরাই মামলাকে বাধাগ্রস্থ করেছি। একটি বিষয় দেশবাসীর কাছে আমার প্রশ্ন : ভুলে ভরা এবং প্রকৃত অপরাধী ছাড়া অভিযোগ পত্রের মাধ্যমে বিচার সম্পন্ন করা কি ঠিক হত? এই ব্যাপারে আমাকে বাধ্য করতে চেষ্টা করেছিলেন বাদী আব্দুল মজিদ খান, এমপি । তিনি কাদেরকে বাচাঁতে চেয়েছিলেন ? কি স্বাার্থে তদন্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামকে সমর্থন করেছিলেন? আজ সংশোধিত চার্জশীটের মাধ্যমে তা প্রকাশিত হয়েছে আমাদের প্রচেষ্টায়। এ বিষয়ে আমি আব্দুল মজিদ খানঁ , বর্তমান পিপি আকবর হুসেন (যিনি আদালত কে প্রভাবিত করতে চেষ্টা করেছেন ভুল চার্জশীট গ্রহণ করার জন্য) এবং তদন্ত কারী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুদকের মাধ্যমে তদন্ত করার আহ্বান জানাচ্ছি, মামলাটি নিয়ে কি দূর্ণীতি হয়েছে তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। ১০ বছর পর সম্পূর্ণ না হলেও মোটমুটি গ্রহণযোগ্য নতুন চার্জশীট দেখে যেতে পারলাম। কিন্তু আমার ভাসুর তার ভাই শাহ এএমএস কিবরিয়া এবং তার ছেলে শাহ মনজুর হুদার হত্যার বিচার কিংবা চার্জশীট কোনটিই দেখে যেতে পারেননি। একটি মস্ত বড় দুঃখ নিয়ে তিনি চলে গেলেন। আমি প্রথম প্রথম যখন “শান্তির স্বপক্ষে নীলিমা ” ও “ রক্তের অক্ষরে শপথের স্বাক্ষর” এসব শান্তিপূর্ণ আন্দোলন সাধারণ জনগণের অংশ গ্রহণ ও সমর্থন কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করি। আমার আরও ইচ্ছা ছিল এই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া ও জনগণকে সচেতন করা। আমি এটি একটি হত্যার প্রতিবাদ হিসেবে করতে চেয়েছিলাম । আমার স্বামীর হত্যা নিয়ে কোন রাজনীতি করার ইচ্ছে ছিলনা। চেয়েছিলাম এই নীরব প্রতিবাদ মাধ্যমে যেন জনগণও প্রতিবাদ করতে শেখে, যেন অন্যায়কে তারা সহ্য না করে এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাড়াবার সাহস খুজেঁ পায়। দশ বছরে একটি মোটমুটি চার্জশীট আমরা পেলাম এখন একটা প্রশ্ন বিচারের পদ্ধতি শেষ হতে আর কত বছর লাগবে? আমার শরীর তেমন একটা ভাল নেই। শেষ বয়সে আমার স্বামীর হত্যার সুষ্ঠ বিচার হয়েছে এবং প্রকৃত অপরাধীরা সাজা পেয়েছে সেটা দেখে যেতে পারলে শান্তি পেতাম। দেশবাসীর প্রতি আমার অনুরোধ আপনারা দোয়া করবেন যেন সুষ্ঠ বিচার প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়েছে তা আমি যেন দেখে যেতে পারি।


     এই বিভাগের আরো খবর