,

নবীগঞ্জের শংকরসেনা গ্রামে রুমন নামের এক সিএনজি চালক খুন মায়ের দাবী ॥ প্রেমিকা সুলতানা’র আত্মীয় স্বজনদের পরিকল্পিত হত্যা

এম.মুজিবুর রহমান ॥ নবীগঞ্জের দূর্গম পাহাড়ি অঞ্চল গজনাইপুর ইউনিয়নের শংকরসেনা গ্রামে গতকাল শুক্রবার সকালে রুমন মিয়া (২২) নামের এক সিএনজি চালককে হত্যা করে গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ করেন নিহতের পরিবার। আম গাছের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর ময়না তদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে। নিহত যুবকের বাড়ি একই উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের বেতাপুর গ্রামে। তার বাবার নাম জামাল মিয়া এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহত পরিবার ও এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এ নির্মম হত্যাকান্ডের ঘটনায় নবীগঞ্জ উপজেলার সর্বত্র আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। জানাযায়, উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের বেতাপুর গ্রামের দিনমজুর জামাল মিয়ার পুত্র সিএনজি চালক রুমন মিয়াকে গত বৃহস্পতিবার সন্ধা রাতে মোবাইল ফোন করে ডেকে নেয় একই উপজেলার শংকরসেনা গ্রামের তৌলত মিয়ার কন্যা সুলতান বেগম (২০) নামের এক যুবতী। এর পর থেকে রুমনের কোন সন্ধান মিলছিলনা। তবে, নিহত রুমনের মাতা জাহানারা বেগম উপস্থিত সাংবাদিকদের কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমার ছেলেকে ওরা মোবাইল ফোনে ডেকে এনে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে। আমার এক মাত্র উপার্জনকারী পুত্রকে হারিয়ে আমি এখন কোথায় যাব। তিনি তার ছেলে হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবী জানান। এ কথা বলে তিনি বার বার মুর্ছা যাচ্ছিলেন, সাংবাদিকদের আরো বলেন, ধর্মীয় আত্মীতার সুবাদে সুলতানার পরিবারের সাথে র্দীঘদিন ধরে তাদের পরিবারের একটি গভীর সর্ম্পক গড়ে উটে। হয়তো তার ছেলেকে সুলতানা নামের ওই মেয়েটি সবার অজান্তে ভালবাসতো। তাই গত বৃহস্পতিবার রাতে নিহত রুমনের মোবাইল ফোনে ফোন করে সুলতানা বলে তার বড় বোন বেদানা বেগমকে তার স্বামীর বাড়ি হবিগঞ্জ সদরে নিয়ে যেতে হবে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রুমন ওই বাড়িতে যেতে হবে। এই সময় রুমন রাতের খাবার খেতে বসেছিল ফোনটি রিসিভ করে সুলতানার সাথে কথা বলেন রুমনের মাথা। সুলতানার কথা মতো রাত অনুমান ১০টার দিকে রুমন ওই বাড়িতে গিয়ে পৌছে। পাড়া প্রতিবেশী অনেকেই বলেন, রুমন প্রায় সময়ই ওই বাড়িতে আসা যাওয়া করতো। রুমনের সাথে প্রেম অতঃপর অবৈধ সর্ম্পক গড়ে তুলে সুলতানা। হয়তো এরই জের ধরে রুমনকে সুলতানার ভাই ও তার লোকেরা নির্মমভাবে হত্যা করে বাড়ির পিছনে আম গাছের সাথে একটি ডালের মধ্যে ঝুলিয়ে আরেকটি বড় ডালের মধ্যে লাশ বসিয়ে রাখে। হয়তো তাদের ধারনা ছিল লাশটি ঝুলিয়ে রাখলে আত্মহত্যা বলেই মনে করবে সবাই। তবে, ঘটনাটি ঘটে গেছে উল্টো। লাশের যৌনাঙ্গতে ক্ষত চিহেৃর আঘাত রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। সকালে আম গাছের মধ্যে এই লাশ ঝুলন্ত দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে গোপলার বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আইসি, এস, আই আরিফ একদল পুলিশ নিয়ে লাশ উদ্ধার করেন। এসময় ওই কথিত প্রেমিকা সুলতানা ও তার পিতা মাতা ভাই বোন সহ কাউকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। ঘাতকরা ঘরের দরজা তালা বন্ধ করে পালিয়ে আত্মগোপন করে। নিহত যুবক রুমন দীর্ঘদিন ধরে সিএনজি অটোরিক্স চালিয়ে জীবিকা অর্জন করে আসছিল। তার হত্যাকান্ডকে মেনে নিতে পারেনি কেহ। লাশ উদ্ধারের পর পর ঘটনাস্থলে রুমনের আত্মীয় স্বজনরা ওই বাড়িতে জড়ো হলে কান্নার রোল বয়ে যায়। তাদের কান্নায় এলাকার আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উটে। এব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ওসি মোঃ আব্দুল বাতেন খাঁনের সাখে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ময়না তদন্তের জন্য লাশ হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে প্রেরন করেছি, নিহতের পরিবারের পক্ষে এখনো কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। যদি অভিযোগ বা মামলা দায়ের করা হয় তবে তদন্ত অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। যদি কেহ বাদি না হয় তার পরেও পুলিশ এটাকে গুরুত্বের সহিত তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবে।


     এই বিভাগের আরো খবর