,

নবীগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী এলাকায় অকাল বন্যা অসংখ্য পরিবার পানি বন্দি ॥ মানবেতর জীবন যাপন

রাকিল হোসেন ॥ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল ও পানা বৃষ্টিতে নবীগঞ্জের কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর তীরবর্তী এলাকা উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের দীঘলবাক গ্রাম, কসবা, চরগাঁও, উমরপুর, গালিমপুর, মাধবপুর, কুমারকাঁদা (একাংশ), আহম্মদপুর, ফাদুল্লা, রাধাপুর, জামারগাঁও, রাধাপুর প্রাইমারী স্কুলসহ বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। বাড়ি-ঘরে ও বাড়ির আঙ্গিনায় পানি উঠায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এছাড়া ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের উমরপুর গ্রামসহ কয়েকটি গ্রামের বাড়ি ঘরে পানি উঠেছে। বিভিন্ন বিদ্যালয়ে যাওয়ার রাস্তা পানির নীচে তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় কয়েক শত একর রোপা আমন ধান তলিয়ে যায়। অপর দিকে অনেকের বেশ ক’য়েকটি মৎস্য খামার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। ইনাতগঞ্জ মনসুরপুর গ্রামের এনাম আহমদ জানান, তার মৎস্য খামারটি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় প্রায় ৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে। এছাড়া কুশিয়ারা ডাইকের উপর পানি চৈ চৈ করছে। রাধাপুর নানু মিয়ার বাড়ির নিকটে ডাইকে ব্যাপক ফাটল দেখা দিয়েছে। যে কোন মুহুর্তে ওই ডাইক ভেঙ্গে যেতে পারে বলে ইউপি মেম্বার ফখরু মিয়া জানান, ওই ডাইক ভেঙ্গে গেলে নবীগঞ্জের কয়েক’টি ইউনিয়নে বন্যায় প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হবে বলে আশংকা করছেন এলাকাবাসী। ডাইকে ফাটল দেখার কারনে আতংকে রয়েছেন ওই এলাকার লোকজন। এ ব্যাপারে জরুরী ভিত্তিতে কুশিয়ারা নদীর ওই ডাইকের মেরামত করে অকাল বন্যার হাত থেকে নবীগঞ্জ বাসীকে রক্ষা করার জন্য প্রশাসনের নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী। গত ক’দিন ধরে টানা বর্ষণ ও উজান থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি নেমে আসায় কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ফলে উল্লেখিত গ্রামের লোকদের বাড়িঘরে ও আঙ্গিনায় পানি উঠায় বন্দি জীবন যাপন করছেন তারা। ঘর থেকে বের হতে হলেই কলা গাছের ভেলা, নৌকা বা বাশেঁর সাকোঁ ব্যবহার করতে হচ্ছে। অনেকেই বাড়ি ঘর ছেড়ে আত্বীয় স্বজনের বাড়িসহ নিরাপদ স্থানে চলে গেছেন। প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে দীঘলবাক ইউনিয়নের মানুষের দূর্বিসহ জীবন যাপন করতে হয়। নদীর তীরবর্তী গ্রাম ও বাড়িঘর হওয়ার কারনে এ দূর্ভোগের শিকার হন তারা। এ ব্যাপারে গোলাম হোসেন বলেন, প্রতি বছরই নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়ে শত শত পরিবার নিঃস্ব হচ্ছে। এরমধ্যে বর্ষা মৌসুমে মানুষের দূর্ভোগের অন্ত নেই। কুশিয়ারা নদীর পানি উপচে নদীর তীরবর্তী গ্রামের বাড়িঘরে ও আঙ্গিনায় পানি উঠে অকাল বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিনই পানি বাড়ছে এবং নতুন নতুন বাড়িঘর প্লাবিত হচ্ছে। মানুষের দূর্ভোগ ও কষ্টের শেষ নেই। স্কুল কলেজ পড়–য়া ছাত্র-ছাত্রীরা রয়েছে বিপাকে। সমাজ সেবক গোলাম হোসেন দীঘলবাক ইউনিয়নের কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী মানুষদের পাশে দাড়িয়ে সহযোগিতা করার জন্য সরকার ও প্রশাসনের প্রতি জোরদাবী জানিয়েছে।


     এই বিভাগের আরো খবর